বাঙালিরা প্রায় আঁতুড়ঘর থেকে ভূত আর গোয়েন্দা গল্পপ্রেমী। তবে টলিউডে এখন গোয়েন্দাদের আনাগোনায় ভূতবাবাজী লাটে উঠেছেন! সিনেপর্দায় তার দেখা নেই বললেই চলে। ভূতেদের এমন মন্দাবাজারে মুক্তি পেল অয়ন দে পরিচালিত ‘ভয় পেও না’। কেমন হল ওম-শ্রাবন্তী জুটির ছবি? লিখছেন সন্দীপ্তা ভঞ্জ।
বিয়ের পর সদ্য নতুন বাড়িতে পা রেখেছেন। তারপরই যত সব ভৌতিক কাণ্ড! কখনও ঘুমের ঘোরে পা টানছে কেউ। কখনও গলা টিপে ধরছে। আবার কখনও বা অদ্ভূত সমস্ত আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। নবপরিণীতার চোখে এও ধরা পড়েছে যে, সাদা পর্দার ওপারে কেউ যেন হুট করে চলে গেল! কিন্তু সেই ছায়ামূর্তিকে উদ্ধার করা যাচ্ছে না..! শ্বশুরবাড়িতে ভৌতিক কাণ্ডের শিকার হতে হয় অনন্যা ওরফে শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়কে।
মা-ভক্ত স্বামী আকাশ চট্টোপাধ্যায় ওরফে ওম সাহানিকে অনন্যা জানায় কেউ তাঁকে ভয় দেখিয়ে প্রাণে মারার চেষ্টা করছে। শাশুড়ি কিংবা স্বামীর কেউই এসব গুজবে কান গিতে নারাজ। কাজের অবসরেও মায়ের খেয়াল রাখতে ব্যস্ত সারাদিন। প্রথমটায় তাঁদের মনে হয়, হয়তো বাড়িতে নতুন বউ এসেই ছেলের ওপর দায়িত্ববোধ ফলাতে চাইছে। তাই এসব ভৌতিক কাণ্ডের বিবরণ শুনিয়ে স্বামীকে কাছে টানতে চাইছে। এদিকে বিপাকে পড়ে ওম। সে কিছুতেই বুঝতে পারে না যে- মা না স্ত্রী, কে ঠিক? ঠিক এখানেই গল্পের টুইস্ট রেখেছেন পরিচালক অয়ন দে।
<আরও পড়ুন: Tirandaj Shabor Review: ক্ষুরধার অ্যাকশন শাশ্বতর, পরমপ্রাপ্তি নাইজেল>
গা ছমছমে ব্যাপার রয়েছে ঠিকই তবে ভূতুড়ে গপ্পের সব উপকরণ থাকলেও রান্নাটা ঠিক জমিয়ে হয়নি। গল্পের বুনোট মধ্যম মানের। ভূতের সিনেমার সাসপেন্স বা থ্রিলারের দিকে আরেকটু নজর দিলে ভাল হত। তবে নবাগত পরিচালক অয়নের প্রচেষ্টাকে বাহবা দিতে হয় ‘ভয় পেও না’র গল্পের শেষে তিনি যে মনস্তাত্তিক টুইস্ট রেখেছেন,তার জন্য। মাঝে দর্শনা বণিকের আইটেম নম্বর রেখে ভূতুড়ে সিনেমার সঙ্গে মশালা এফেক্ট দিতে চেয়েছেন পরিচালক।
'গয়নার বাক্স'র পর আবারও ভূতের সিনেমায় শ্রাবন্তী। সেক্ষেত্রে পরিচালক অপর্ণা সেনের ফ্রেমে অভিনেত্রী হিসেবে নিজের জাত চেনালেও এই পরিসরে যতটা প্রয়োজন ছিল, সেই প্রেক্ষিতে শ্রাবন্তী যথাযথ। পেশায় ডাক্তার স্বামীর ভূমিকায় ওমের অভিনয়ও উল্লেখ্য। তবে ভূতুড়ে গল্পের শেষে যে টুইস্ট রয়েছে, তার ইঙ্গিত পরিচালক ক্লাইম্যাক্সের কিছু আগেই দিয়ে দিয়েছেন। ক্ষুরধার দর্শক হলে সেটা আন্দাজ করতে সমস্যা হয় না। তবে প্রথম সিনেমা হিসেবে অয়ন দে'র প্রচেষ্টা প্রশংসার দাবিদার।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন