কানাঘুষো আগে থেকেই শোনা যাচ্ছিল। এমনকী দিন দুয়েক আগেই ময়নায় প্রাক্তন ক্রিকেটার অশোক দিন্দার হয়ে ভোটপ্রচারে গিয়ে গেরুয়া শিবিরের নায়িকা সদস্য নিজেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, তাঁকে হয়তো প্রার্থী করা হতে পারে। এবার জল্পনার অবসান ঘটিয়ে একুশের ভোটযুদ্ধে (West Bengal Assembly Election 2021) পদপ্রার্থীর টিকিট পেলেন শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় (Srabanti Chatterjee)। বেহালা (Behala) পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপির হয়ে প্রতিদ্বন্দিতা করবেন অভিনেত্রী। প্রতিপক্ষও হেভিওয়েট। কারণ, ঘাসফুল শিবিরের হয়ে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র থেকে ভোটে লড়ছেন তৃণমূলের পোড় খাওয়া নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। অতঃপর, বেহালা পশ্চিমে আসন জেতা পদ্ম শিবিরের পক্ষে 'কেকওয়াক' হবে কিনা, তাতে বেজায় সন্দেহ রয়েছে। তবে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই অবশ্যম্ভাবী।
রাজনীতির ময়দানে অভিষেক ঘটিয়েই নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দিতার ছাড়পত্র পেয়েছেন, তাও আবার জাতীয় দলের তরফে। অন্যদিকে, শ্রাবন্তী বিজেপিতে যোগদানের পর অনেকেই আবার তৃণমূলের (TMC) ‘স্টার’ প্রার্থীদের সঙ্গে তাঁর তুলনা টানা শুরু করেছেন। বলছেন, ঘাসফুল শিবিরের বাঘা-তারকা যদি জুন-সায়নী, সায়ন্তিকা কিংবা কৌশানীরা হন, তাহলে পদ্ম শিবিরের ‘স্টার’ শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু তারকা তকমা যতই থাক, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করাটা যে অভিনেত্রীর পক্ষে যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং, তা হলফ করে বলাই যায়।
তবে এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, রাজ্য়ে শিক্ষাব্যবস্থা তথা শিক্ষক-শিক্ষিকারা যেভাবে ক্ষুব্ধ উচ্চশিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উপর, সেই ইস্যু যে বেহালা পশ্চিমের আসন জিততে গেরুয়া শিবিরের মূল অস্ত্র হয়ে উঠতে পারে, তা নিয়ে কিন্তু ইতিমধ্যেই ফিসফাস শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলের অন্দরে। কিন্তু পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মতো হেভিওয়েট মুখের বিরুদ্ধে ভোটবাক্সে শ্রাবন্তীর সুপারস্টার তকমা প্রভাব ফেলতে পারবে কিনা, সেই বিষয়ে সন্দিহান রাজনীতিকদের একাংশ।
অন্যদিকে, বেহালা পূর্ব থেকে বিজেপির (BJP) বাজি পায়েল সরকার (Paayel sarkar)। লড়ছেন শোভন-পত্নী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। বেহালার দুই কেন্দ্রে টলিউডের দুই সতীর্থ- পায়েল আর শ্রাবন্তীতেই ভরসা রেখেছে পদ্ম শিবির।
উল্লেখ্য, গেরুয়া মন্ত্রে দীক্ষিত হওয়ার পর থেকেই শ্রাবন্তী যেভাবে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রতিপক্ষ শিবিরের প্রতি একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে আক্রমণ করে চলেছেন, তা রীতিমতো চোখে পড়ার মতো। যে অভিনেত্রীকে কিনা একদা একুশের মঞ্চে দেখা যেত, সেই তিনিই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) আক্রমণ করতে পিছপা হচ্ছেন না। দিন দুয়েক আগেই কটাক্ষ করে বলেছিলেন, ‘পিসি-ভাইপোর রাজনীতির জন্যই দল বদলাতে বাধ্য হয়েছেন তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা।’ বৃহস্পতিবার টিকিট পাওয়ার আগে তো আরও একধাপ এগিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ‘ভোট লুঠের’ অভিযোগ এনেছেন শ্রাবন্তী। তবে ভোটবাক্সে তাঁর স্টার ফ্যাক্টর কতটা প্রভাব ফেলে এখন সেটাই দেখার।