প্ররোচনামূলক মন্তব্য করে আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee), এমন দাবি তুলেই ২৪ ঘণ্টা তৃণমূল সুপ্রিমোর নির্বাচনী প্রচারে নিষেধাজ্ঞার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নির্বাচন কমিশনের (EC) তরফে। কমিশন জানিয়েছে, সোমবার রাত ৮ টা থেকে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত প্রচার করতে পারবেন না তৃণমূলনেত্রী। যার প্রতিবাদে ধরণায় বসার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মমতা। কমিশনের দ্বিচারিতার অভিযোগ তুলেছেন ঘাসফুল শিবিরের নেতা-মন্ত্রীরাও। তাঁদের দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভোটপ্রচারে যদি নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়, তাহলে নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi), অমিত শাহ (Amit Shah), দিলীপ ঘোষদের (Dilip Ghosh) ক্ষেত্রে কেন এমন নিষেধাজ্ঞা জারি করা হল না? ঘাসফুল শিবিরের সেই সুরেই এবার সুর চড়ালেন টলিউডের বামপন্থী মনোভাবাপন্ন অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র (Sreelekha Mitra)।
একুশের বিধানসভা নির্বাচনে (West Bengal Assembly Election 2021) যখন বাংলার মসনদ দখলের লড়াই সবুজ-গেরুয়া দুই শিবিরেই তারকামুখের ছড়াছড়ি। দুই প্রতিপক্ষ দলের ভোটপ্রচারের ময়দানেই যখন তারকা মুখের ছড়াছড়ি, তখন সংযুক্ত মোর্চার হয়ে প্রচারে নেমেছেন 'বাম' শ্রীলেখা। তৃণমূল-বিজেপি কাউকেই রেয়াত করছেন না তিনি। তাঁর কটাক্ষবাণে বিতর্কও সৃষ্টি হয়েছে। তবুও স্পষ্টবাদীত্বের সরলরেখা থেকে বিচ্যুতি ঘটেনি অভিনেত্রীর। এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচারে নির্বাচন কমিশনের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে মুখ খুললেন শ্রীলেখা।
অভিনেত্রীর মন্তব্য, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উসকানিমূলক মন্তব্যের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের মতোই অবিলম্বে মোদী, শাহ, দিলীপ ঘোষ, সায়ন্তন বসু এবং রাহুল সিনহাদের নির্বাচনী প্রচারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হোক।"
প্রসঙ্গত, গত ৩ এপ্রিল তারকেশ্বরের জনসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার্তা ছিলেন,"সংখ্যালঘু ভাই-বোনেদের কাছে হাতজোড় করে একটা কথা বলব, ওই শয়তান ছেলেটা বিজেপির টাকা নিয়ে বেরিয়েছে। ওর কথা শুনে সংখ্যালঘু ভোট ভাগ করবেন না। ও সাম্প্রদায়িক কথা বলে। বিজেপি টাকা নিয়ে বেরিয়েছে যাতে সংখ্যালঘু ভোট ভাগ হয়ে যায়। মনে রাখবেন, বিজেপি আসলে দুর্ভোগ আপনাদের বেশি, এটা মাথায় রাখবেন।" তৃণমূল সুপ্রিমোর এমন মন্তব্যের মধ্যেই উসকানির গন্ধ পেয়েছে কমিশন। যার জেরে তাঁর নির্বাচনী প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এপ্রসঙ্গে মমতার ব্যাখা যদিও, "ধর্মীয় উসকানি দিতে চাইনি। আমি হিন্দু ভাই-বোনেদের বলেছি, হিন্দু-মুসলিম বিভাজন করবেন না।" তবে এতে কমিশনের কাছে চিঁড়ে ভেজেনি! সেই প্রেক্ষিতেই এবার মমতার মতোই বিজেপির শীর্ষ স্থানীয় নেতৃত্বদের নির্বাচনী প্রচারেও নিষেধাজ্ঞা জারির দাবি তুলেছেন বামপন্থী শ্রীলেখা মিত্র।