আগামীকাল দোল উৎসব। সারা বিশ্ব মেতে উঠবে রং খেলায়। দেশ জুড়ে পালিত হবে বসন্তের সবথেকে রঙিন উৎসব। এদিন, যেমন রঙে রেঙ্গে ওঠেন মানুষ, ঠিক তেমনই দেখা যায় আশেপাশের পশু প্রাণীগুলোর ওপর এদিন হামলা হয়। তাঁদের যেমন রঙ দিয়ে অত্যাচার করা হয়, তেমন নানা নৃশংসতার শিকার হন তাঁরা। এদিক ওদিকে চারপেয়ে বাচ্চাদের কথা এদিন সত্যিই কেউ ভাবেন না।
নিজেদের আনন্দের সঙ্গে সঙ্গে দেখা যায়, তাঁরা পশু পাখিদের কষ্ট দিয়েও তুমুল আনন্দ পান। কিন্তু আগামীকাল যেন এসব না হয়, সেই প্রসঙ্গেই ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার কাছে নিজের মতামত রাখলেন শ্রীলেখা মিত্র। তিনি পেট মাদার। রাস্তার চারপেয়ে সন্তানদের প্রতি কড়া নজর রাখেন। তাঁদের যেন কোনরকম অস্বস্তি না হয়, সেদিকে তাঁর নজর থাকে। অভিনেত্রী নিজের চিন্তার কথা, জাহির করেই বললেন...
আমি কালকের দিনটা নিয়ে খুব চিন্তিত। ওদের তো কষ্ট হয়। আমার বাড়িতে যারা আছে তাঁরা প্রটেক্টেড। ওদেরকে তো আমি সুরক্ষিত রাখি। আর আশেপাশের যে ছানাপোনারা আছে, যাদের আমি খাওয়াই, সেইসব এলাকার মানুষরা জানেন যে, আমি আছি এখানে। ওদের সঙ্গে খারাপ কিছু হলে আমি কী কী করতে পারি। এটা নিয়ে খুব ঝামেলা হয়ে যেতে পারে। আমি সমাজ মাধ্যমে বলব। শুধু তো রং নয়, ওরা যে ধরনের অত্যাচারের শিকার হয়, আমি সেটা বলতেও চাই না। আমার ভাবলেও গায়ে কাঁটা লাগে। আর এটা যে কত বড় ক্রাইম, এটা কিন্তু পানিসেবল অফেন্স। সুপ্রিম কোর্টের আইন আছে এর বিরুদ্ধে।"
দোল মানেই পশু প্রাণীদের গায়ে দেখা যায় রং। শুধু তাই নয়, তাঁদের রীতিমতো বিরক্ত করেন অনেকেই। তাই তো, শ্রীলেখা জানিয়ে দিলেন, "আমি মানুষ আর পশুর মধ্যে এখন মেলাই না। আমার একটাই কথা, সকলকে সচেতন হতে হবে। সকলকে মানতে হবে, জানতে হবে। ওরা তো প্রাণী। যেকজন বেঁচে থাকে। সুস্থ থাকে। আমি একটা বাউন্ডারি করে নিয়েছি। খারাপ কিছু শুনব না, খারাপ কিছু দেখব না, কিন্তু ভুল করে বলে ফেলি আরকি। ভাল লাগে না এসব, অদ্ভুত লাগে। এখন পশুদের নিয়ে কিছু খারাপ ঘটনা হলে, আমি বেশি ইফেক্টেড হই।" অভিনেত্রী চারপেয়ে সন্তানদের নিয়ে বললেন...
"ওরা মানুষের সঙ্গে মিশতে চায়। মানুষের সঙ্গে থাকতে চায়। আমি সেদিন একটা বাংলাদেশের ভিডিওতে দেখলাম, যে বাচ্চাগুলোর সঙ্গে ওরা ফুটবল খেলছি। দৌড়চ্ছে, লাফাচ্ছে, ফুটবলটা নিয়ে কত কান্ড করছে। ওরা মানুষকে ভালবাসতে চায়। কিন্তু ওদের কথাটা মানুষ বোঝে না। আমার বাড়িতে যারা আসেন, তাঁরা অনেকেই বলেন ওদের সরিয়ে রাখুন। ওদের কাছে আসতে দেবেন না। আমি অনেক বুঝিয়ে শুনিয়ে শান্ত করি। পরে দেখেন যে ওরা তো কিছুই করছে না। মানুষকে এত সচেতন হতে হবে। আর যারা খুব খারাপ করে ওদের নিয়ে, তাঁদের উত্তম মধ্যম দিতে হবে।" কিন্তু আগামীকাল তাঁর কী প্ল্যান?
ছোটবেলায় অনেক রং খেলেছেন, কিন্তু এখন আর সেভাবে রঙ খেলা হয় না। বাড়ির মানুষগুলো আর নেই। চারপেয়ে ছানাদের নিয়েই থাকেন। অভিনেত্রী বললেন... "রং আমার কাছে খুব কাছের একটা বিষয়, কিন্তু সেই মানুষগুলো আমার জীবনে আর নেই। এখন জীবনটা সাদাকালো। ছোটবেলায় উত্তর কলকাতায় বড় হয়েছি। বাবা মা, কাকা কাকিমা সকলে দোল খেলতাম। ছাদ থেকে রং ছাড়া শুধু জল ভরা বেলুন ছুরতাম। এখন সবটাই খুব মেকি। সবাই যেন বেঁচে আছেন সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য। এটা আমার কাছে খুব কষ্টকর বিষয়।"