শুক্রবারই তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রির দুই ডাকসাইটে অভিনেতা ভরত কল এবং দীপঙ্কর দে। অন্যদিকে 'জলনুপূর' খ্যাত অভিনেত্রী লাভলি মৈত্র এবং ওস্তাদ রশিদ খান-কন্যা শাওনা খান। আর তার ২৪ ঘণ্টা পেরতে না পেরতেই ফের একঝাঁক টলিতারকা যোগ দিলেন রাজ্যের শাসক দলে। শনিবার তৃণমূল ভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে সবুজ পতাকা হাতে তুলে নেন 'জলনুপূর' ধারাবাহিকের সৌপ্তিক চক্রবর্তী (Souptik Chakraborty), 'ইষ্টিকুটুম' খ্যাত রণিতা দাস (Ranita Das), 'ঝিলিক' শ্রীতমা ভট্টাচার্য (Sreetama Bhattacharya) এবং 'মহাপ্রভু' সিরিয়ালের দিশা রায়চৌধুরি।
কানাঘুষো আগেই শোনা যাচ্ছিল যে, ইন্ডাস্ট্রির বেশ ক’জন তারকা এবার সক্রিয় রাজনীতিতে নামতে চলেছেন। যোগ দিতে চলেছেন রাজ্যের শাসক দলে। দুয়ারে একুশের নির্বাচন। সম্মুখ সমরে বঙ্গ বিজেপির ‘স্টার স্ট্র্যাটেজি’ও তুঙ্গে। কাজেই পদ্ম শিবিরকে টেক্কা দিতে জোড়াফুলও বেশ গুছিয়ে ‘রণনীতি’ সাজাচ্ছে। সেই জল্পনার অবসান ঘটিয়েই এবার একাধিক তারকা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতাদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে নাম লেখালেন ঘাসফুলে। উপস্থিত ছিলেন যুব তৃণমূলের সহ-সভাপতি সোহম চক্রবর্তীও।
দলে যোগ দিয়েই রণিতা দাসের মন্তব্য, "গত ১০ বছর ধরে দিদি আসার পর থেকেই পাড়া-প্রতিবেশীর মতো ওনার সঙ্গে ছিলাম, তবে এবার তৃণমূলের বাড়ির লোক হলাম। আমাদের যা দায়িত্ব দেওয়া হবে, আমরা যথাসম্ভব তা পালনের চেষ্টা করব।" অন্যদিকে, শ্রীতমা ভট্টাচার্যের কথায়, "ইন্ডাস্ট্রিতে প্রবেশের পর গত দশবছর ধরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সান্নিধ্য লাভ করার সুযোগ পেয়েছি। ওঁর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়েই এই সিদ্ধান্ত।"
প্রসঙ্গত ধারাবাহিকের দৌলতে শ্রীতমা, রণিতা দাসরা বাংলার ঘরে ঘরে বেজায় পরিচিত মুখ। আর সেই প্রেক্ষিতেই একুশের বিধানসভা নির্বাচনে তারকাদের মুখ যে কিছুটা হলেও তৃণমূলের নম্বর বাড়াবে, তা বোধহয় আর আলাদা করে বলার প্রয়োজন পড়ে না। বহু নেতামন্ত্রীদের দলবদলের হিরিকের মাঝেই এটা তৃণমূলের তরফে যে নতুন চমক, তা বলাই বাহুল্য। উল্লেখ্য, রুদ্রনীল ঘোষের বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই রাজ্যের শাসক দলে তারকাদের যোগদানের সংখ্যা কিন্তু বেড়েছে বই কমেনি, যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলের অন্দরেও জোর চর্চা চলছে।
প্রসঙ্গত রাজ্য-রাজনীতি একদিকে সরগরম। গ্ল্যামার ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে রাজনীতি মিলে মিশে একাকার। কারও গেরুয়া শিবিরে নাম লেখানোর জল্পনা হাওয়ায় ভাসছে, কেউ বা আবার রাজ্যের শাসক দলের হয়ে সুর চড়াচ্ছেন, তো কাউকে বা আবার দেখা যাচ্ছে ‘অ-পোক্ত’ বামদুর্গকে ফের খড়-মাটি লেপে দাঁড় করানোর প্রচেষ্টা চালাতে। সব মিলিয়ে একুশের বিধানসভা নির্বাচন এখন মধ্যমণি। এর মাঝেই রাজ্যের শাসক দলে নাম লিখিয়ে চলেছেন একঝাঁক টেলিতারকা।