/indian-express-bangla/media/media_files/2025/06/16/7ClbPbWmcyuXx3aVuAh9.jpg)
সাক্ষাৎকারে আর কী কী বললেন সৃজলা? কী জানালেন তিনি? Photograph: (গ্রাফিক্স : অংশুমান মাইতি )
টেলিভিশনের পর্দা থেকে ওয়েব সিরিজ - জনপ্রিয়তা কিন্তু তাঁর ঘরে ঘরে। শহর থেকে মফস্বল তিনি ঋষির পিহু হিসেবেই বেশ পরিচিত। আর এবার তিনি ফিরছেন। বাতাসে গুনগুন ছবি দিয়েই সৃজলা আবারও ফিরছেন। এবং তাঁকে সেখানে দেখা যেতে চলেছে পল্লবীর চরিত্রে। এই চরিত্রটা একটু অন্যরকম। ভালবাসায় পজেসিভ থাকা খুব স্বাভাবিক কিন্তু পল্লবীর মত যদি কেউ আচরণ করেন? তাহলে? এমন বেশ কিছু মজার প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন অভিনেত্রী।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার তরফে তাঁকে যখন জিজ্ঞেস করা হল, যে প্রায় অনেকদিন পর কামব্যাক করছেন, অনুভূতি সঙ্গে সঙ্গে ব্যক্তিগত কিছু বিষয় সম্পর্কেও, সাবলীলভাবেই উত্তর দিলেন।
অনেকদিন পর কামব্যাক তো...
আমার তো সেটাই থাকে। আমি খুব সিলেক্টিভ। খুব অল্প কান করেছি। কিন্তু, আমি খুব খুশি যে যতটা করেছি, ভাল করে করার চেষ্টা করেছি। প্রত্যেকটা চরিত্র খুব সুন্দর কিছু দিয়েছে আমায়। একমাসে তিনটে রিলিজের থেকে মাঝে মধ্যে কাজ করে মানুষকে আনন্দ দেওয়া অনেক ভাল। সত্যি কথা বলতে, কাজ কি আসেনা? কিন্তু, হয়তো সব কিছু ফিট করে না।
পল্লবী তো ভীষণ ম্যাড লাভার, সৃজলা কি অতটাই পাগল প্রেমিকা?
সৃজলা হয়তো প্রেমে পড়তে পারে, কিন্তু এরকম পল্লবীর মত একেবারেই না। কারণ, আমি যেতে দেওয়ার ফ্রি রাখায় বিশ্বাস করি। ভালবেসে তাঁকে জোর করে আটকে রেখে ঝগড়া করে, মার্ডার করে রাখতে হয়, তাহলে বুঝতে হবে... মানে আমার কথায়, এভাবে কাউকে আটকে রাখা যায় না। অনেকের জন্য, তো আমিও করেছি। ভালবেসে আটকে রাখতে এমন কিছু অর্বাচীন কাজ কর্ম করেছি যে মানুষ বিশ্বাস করবে না। কিন্তু, জীবন চলতে থাকে। আমি এটাই বিশ্বাস করেছি, এসব না করলেও চলত। তাঁর যদি থাকার হত তাহলে সে এমনিই থাকত। এতকিছু করতে হতো না।
পল্লবী, সৃজলার কাছে কেমন?
আজকের দিনে এই চরিত্রটা না, সুস্থ নয়। ও আসলে প্রেমিকা নয়। ওর জীবনে ভালবাসার অভাব আছে। আজকে যখন মানুষের খিদে পায়, তখন সে খাবার জন্য ছটফট করে তো। কিন্তু, কেউ যদি খাবার জন্য চুরি করেছে আমরা জানতে পারি, আমাদের খুব মায়া হয়। এই পৃথিবীতে ভালবাসার থেকে বড় কিছু হয় না। এমন, একটা মানুষ যার জীবনে ভালবাসা নেই ছোট থেকে, সেটা তো তাঁর কাছে খিদের মতোই। নিঃশ্বাস নেওয়ার মতোই। পল্লবী ঠিক তাই। সেটা না পেলে ও বাঁচবে না। সেই থেকেই, ভয়ঙ্কর সব কাণ্ড কীর্তি ও ঘটায়।
এক্সট্রা পজেসিভনেস একটা সম্পর্ককে ধ্বংস করতে পারে?
একটা সম্পর্কে পজেসিভনেস না থাকলে কিন্তু সেটা সুস্থ না। আমার পার্টনার নিশ্চই চাইবে না, যে আমি অন্য কাউকে খুঁজে নেই, সে তো মানতে পারবে না। এবার কথা হচ্ছে পজেসিভ্নেসের একটা মাত্রা আছে। কোনওকিছুই আমাদের জীবনে যেটা অত্যধিক মাত্রায়, সেটা অ্যাবনরমাল। সেটা সাফকেটিং। দুজনকেই পসেজিভনেস হ্যান্ডেল করতে জানতে হবে। এখন তো অনেক রকমের সম্পর্ক হয় শুনেছি। কী সব সিচুয়েশনশিপ, বা ফ্রেন্ডস বেনিফিটস্ - এগুলোতে তো পসেজিভনেস দাঁড়ায় না। কিন্তু, এখন যদি একটা মানুষের জীবনে ভালবাসা আছে, আর অপরজনের ক্ষেত্রে সেটা শুধুই ফ্লিং, তাহলে তো সমস্যা আছে।
পরকীয়া সমাজের ক্ষেত্রে জাস্টিফায়েড?
আমাদের সমাজে এক্সট্রা ম্যারিটাল বা কোনও এক্সট্রা কিছুরই জায়গা নেই। আমার যেহেতু বিয়ে হয়নি তাই এক্সট্রা ম্যারিটাল বলতে পারব না কিন্তু, হ্যাঁ! নিজের ক্ষেত্রে এটুকু বলতে পারি, আমি কোনোদিন কারওর পরিবারের ভাঙ্গনের ভাগীদার হতে চাই না। এখন একটা নো ম্যারেজ পলিসি এসেছে। অনেকেই ভাবে যে সারাজীবন ভালবেসে লিভ ইনে থেকে যেতে পারব। কিন্তু, বিয়ে না করলে তোমার একটা পরিবার হবে না। ফ্যমিলি হয়ে গেলে কিন্তু, বিবাহিত মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হয় না। আর সম্পর্কে কেন পরকীয়ায় ভাসেন মানুষ আমি জানি না। কারণ, আমার তো মনে হয় নিজের স্বামী বা স্ত্রীকে বোঝা সম্ভব তাঁদের সঙ্গে সমস্যা কাটানো সম্ভব। আবার বাইরে গিয়ে নতুন করে আরেকজনকে জানব বুঝব, এটা একটু বেশি সমস্যার।
পল্লবীকে পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে গিয়ে কী কি চ্যালেঞ্জ ফেস করলে?
সত্যি কথা বলি? খুব যে স্ট্রেস নিয়ে ফেলেছি বা বিরাট কিছু হয়েছে বা আমি ক্যারেক্টারটা করতে গিয়ে উল্টে পরে গিয়েছি এমন কিছুই হয়নি। সাইকো একটা ক্যারেক্টার। আমাদের সকলের মধ্যে একটা ডার্ক সাইড আছে। এবং আমরা প্রত্যেকেই একটা ক্রেজি কাণ্ড কীর্তি করেছি যাদেরকে আমরা ভালবাসি তাঁদের জন্য। রাগ, হিংসা দুঃখ কিংবা প্রতিশোধ নেওয়ার একটা প্রবণতা থেকেই যায়। আমায় শুধু একটু ওই ডার্ক দিকটা জোরালো করতে হয়েছে।
ট্রেলারে একটা ডায়লগ শুনলাম, 'আমায় নিয়ে খেলার সময় মনে ছিল না..', বাস্তবে প্রেমের খেলার শিকার হয়েছ?
আমি ঈশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞ যে এটা হয়নি। আমি যে খুব একটা প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছি এটা কিন্তু না। তবে, আমার জীবনে এমন কিছু মানুষ এসেছিলেন যারা আমায় খুব ভাল গুছিয়ে রেখেছিলেন। কোনোদিন মনেই হয়নি যে প্রেমে পড়লাম কিন্তু ওয়ার্ক আউট করল না। কেউ আমায় নিয়ে খেলবে, বা আমি খেলার শিকার হয়েছি এটা হয়নি।
ইন্ডাস্ট্রির আর কোনও মানুষের প্রেমে পড়তে ইচ্ছে হয়?
( আমতা আমতা করে )... ইন্ডাস্ট্রির মানে? ( হাসি )... প্রেম জিনিসটা খুব অদ্ভুত! আসলে কীভাবে কখন কার প্রেমে মানুষ পরে। কোনও একদিন দেখা গেল, আমরা এমন একজনের প্রেমে পড়লাম যার সঙ্গে আমাদের কিছুই মেলে না। হয়তো এমন ভাবনা চিন্তাও হয়, যে এই মানুষটার পাশে আমি কী করে বসে আছি। যেকোনও কোণায় হতে পারে। ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে প্রেম করার আমার কোনও ইচ্ছে নেই। একই পেশায় না থাকাই ভাল। আবার, হ্যাঁ! অভিনয় জগতের মানুষ হলে সে আমায় বুঝবেও। কিন্তু, একটা কথা, ইন্ডাস্ট্রিতে এখন যারা রয়েছেন তারা সকলে টেকেন। তাঁরা সুন্দর সুন্দর সব সম্পর্কে আছেন। আমি তাঁদের জন্য খুব খুশি। কিন্তু, ইন্ডাস্ট্রির কারওর প্রেমে পড়ার মতো দূর দূর চিন্তাভাবনা নেই।