Chuni Panna serial storyline: সবার মনে সাহস থাকে না, তবে চুনি কিন্তু অসমসাহসী! সাংবাদিক সম্মেলনের শুরুতেই এমনটা জানালেন চুনি পান্না-র চিত্রনাট্যকার সাহানা দত্ত। আর সেই চুনির সঙ্গেই ঘটনাচক্রে বিয়ে হবে নির্ভীকের। তার নাম নির্ভীক হলেও অত্য়ন্ত ভিতু প্রকৃতির একজন মানুষ। আর তা না হয়ে কোনও উপায় নেই। কারণ স্টার জলসা-র ধারাবাহিক চুনি পান্না-র গল্পের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে নির্ভীকদের 'অদ্ভুতবাড়ি', যা আসলে একটি ভূতের বাড়ি। আগামী ১১ নভেম্বর থেকে রাত সাড়ে দশটার স্লটে আসছে এই ধারাবাহিক। সম্প্রচার শুরু হওয়ার আগে একবার দেখে নেওয়া যাক, ধারাবাহিকের স্টোরিলাইন নিয়ে ঠিক কী বললেন চিত্রনাট্যকার।
''চুনি ভূত দেখতে চায় বলেই যে তার মধ্যে ভয়ডর নেই, এমন একেবারেই নয়। চুনি শ্বশুরবাড়ি ভয় পায়। কারণ শাশুড়ি, ননদ, ভাশুর, জা-- এই সমস্ত কিছু নিয়ে যে ধারণাটা তৈরি হয়েছে সেটা হল একটা নিউক্লিয়ার ফ্যামিলিতে থেকে, টিভি সিরিয়াল দেখে সে শ্বশুরবাড়ি চিনেছে। সে জানে যে শাশুড়ি অত্যাচার করে, ননদ চুকলি কাটে আর জা নিশ্চয়ই হিংসে করে... তার কাছে শ্বশুরবাড়ির থেকে ভূতের বাড়ি বেটার'', জানালেন সাহানা দত্ত।
আরও পড়ুন: ‘কপালকুণ্ডলা’-র ভূমিকায় কে? কী বলছে টেলিপাড়ার গুঞ্জন
এহেন চুনির বিয়ের জন্য যত সম্বন্ধই আসুক না কেন, সবই সে ভেস্তে দেয় নানা রকম কায়দা করে। কিন্তু তার পরিবার হাল ছাড়ে না। এই রকম একটা পরিস্থিতিতে তার সঙ্গে দেখা হয় নির্ভীকের। সেটাও বিয়ের দেখাশোনা করতে গিয়েই। এতদিন নানা রকম কাণ্ড বাধিয়ে সম্বন্ধগুলি ভেস্তে দিত চুনি। এবার সে ঠিক করে যে সরাসরি নির্ভীককেই বলবে বিয়ে না করতে। ওদিকে নির্ভীকও একই কথা বলার জন্য এতক্ষণ উশখুশ করছিল। সে চায় এমন একটি পরিবার যারা তাকে ঘরজামাই করে রেখে দেবে। তার নিজের বাড়ি থেকে সে পালাতে পারলেই বাঁচে। চুনির খটকা লাগে। চেপে ধরতেই বেরিয়ে পড়ে নির্ভীকের ভূতের বাড়ির গল্প।
চুনি দ্য গোস্ট সার্চার!
ভূত দেখতে পাওয়ার আনন্দের আতিশয্যে নির্ভীককেই ধরে বেঁধে বিয়ে করে ফেলে চুনি। কিন্তু সিরিয়ালের ট্যাগলাইনটি এখানে মনে রাখা প্রয়োজন-- 'যত হাসি তত কান্না'...। যে মেয়ে আদাড়ে-বাদাড়ে ভূত খুঁজে বেড়াত, তার কাছে একটা অথেন্টিক ভূতের বাড়ি পাওয়া অনেকটা সোনার খনি পেয়ে যাওয়ার মতোই। কিন্তু চুনি এই ভূতের বাড়ির সঙ্গে ফাউ হিসেবে পেয়ে গেল কিন্তু সেই বস্তু যা তার আজীবনের ভয়-- শ্বশুরবাড়ি। এবং এখানে শ্বশুরবাড়ি একটি যৌথ পরিবার। আর যৌথ পরিবার মানেই অসংখ্য চোরাগোপ্তা সমীকরণ! তবে হ্যারি পটারের হগওয়ার্টসের মতো এখানে কাঁড়ি কাঁড়ি ভালো ভূত নেই যারা ডাইনিং হলে এসে ছাত্রছাত্রীদের ভালোমন্দের খোঁজখবর রাখে। এখানে একটিই ভূতনি আছেন। আর তেনার থাকাটা যে কী যন্ত্রণার সেটা শ্বশুরবাড়িতে পা দেওয়ার পরেই টের পাবে চুনি, এমনটাই জানালেন চিত্রনাট্যকার।
আরও পড়ুন: মানুষের কাছে টিভিটা অনেক আপন: প্রতীক
''এই ভূত খুব পাজি ভূত, সে শুধু চুনিকেই দেখা দেয়, আর কাউকে দেখা দেয় না। আর সে চুনিকে দিয়ে এমন কিছু কিছু কাজ করিয়ে নেয় যাতে সে প্রতি পদে পদে শাশুড়ির থেকে বকা খায়'', বলেন সাহানা। তার কারণটাও জানালেন তিনি। সেটা হল এই ভূত গোটা বাড়িটার দখল চায়। তাই সারাক্ষণ বাড়ির সবাইকে নাকাল এই পরিবারটাকে তাড়াতে। চুনিকে পেয়ে তার লাভ হল এটাই যে পরিবারের অন্য সদস্যদের ঝামেলায় ফেলতে তার একটা হেল্পিং হ্যান্ড এল বলা যায়। কারণ চুনি অসমসাহসী ও বুদ্ধিমতী হলেও, আসলে বেশ সোজাসাপ্টা ধরনের মেয়ে। মনে প্যাঁচ-পয়জার নেই। তাই ভূতের অভিসন্ধি বুঝতে তার সময় লাগে। কিন্তু ভূতের বাড়ি খুঁজতে এসে পেয়ে যাওয়া এই ফাউ শ্বশুরবাড়িকে তো সে আর ফেলে দিতে পারে না!
'চুনি পান্না' ধারাবাহিকের সেটে অন্বেষা হাজরা (চুনি) ও দিব্যজ্যোতি দত্ত (নির্ভীক)। ছবি: শাঁওলি
তাই কীভাবে এই ভূতের উপদ্রবকে সামলে শ্বশুরবাড়িতে কিঞ্চিৎ সুখ-শান্তি আনতে পারবে, সেই গল্পই দেখতে পাবেন দর্শক। এর আগে বাংলা টেলিভিশনে দর্শক দেখেছেন 'ভুতু'-র মতো বাচ্চা ভূতের মিষ্টি গল্প। সেখানেও মানুষের অনেক দুঃখ-দুর্দশার কথা ছিল। ভালোবাসা দিয়ে সেই সব সমস্যার সমাধান করত 'ক্যাসপার দ্য ফ্রেন্ডলি গোস্ট'-এর মতোই মিষ্টি ভুতু। আর 'চুনি পান্না'-তে দর্শক যে ভূতের দেখা পাবেন, সে হল অনেকটা অস্কার ওয়াইল্ড-এর বিখ্যাত ছোট গল্প, 'দ্য ক্যান্টারভাইল গোস্ট'-এর মতো, যে কি না বাড়ি কেনার সময় বাড়ির কিছু পুরনো আসবাবের মতোই অতিরিক্ত পাওনা হিসেবে জুটেছে এবং সে চায় মানুষকে উত্যক্ত করতে।
তবে এই ধারাবাহিকের গল্পের সঙ্গে অস্কার ওয়াইল্ডের গল্পটির কোনও সম্পর্ক নেই। কারণ সেখানে গোটা পরিবারটিই ভূতকে মোটে পাত্তা দিত না একমাত্র বাড়ির ছোট মেয়ে ভার্জিনিয়া ছাড়া। আর সেখানে ভূতই ভুগত অস্তিত্ব সঙ্কটে। কিন্তু এখানে পান্না-কে বাগে আনাই মুশকিল। সে খেপে গেলে কী হয়, সেটা তো দর্শক উপরের প্রোমো লিঙ্কেই দেখেছেন!