Debi Choudhurani director on payment issue: স্টার জলসা-র 'দেবী চৌধুরাণী' ধারাবাহিকেরও প্রযোজক সুব্রত রায়। এই ধারাবাহিকেও দীর্ঘদিন পারিশ্রমিকের টাকা বাকি রাখা ও টিডিএস জমা না দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ধারাবাহিকের পরিচালক অমিত সেনগুপ্ত ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে জানালেন, তাঁর নিজের, ডিরেক্টরস টিমের, ধারাবাহিকের ভেন্ডার ও টেকনিসিয়ানদের প্রায় এক মাসের মতো পারিশ্রমিক বাকি রয়েছে। ২০১৮ সালের মাঝামাঝি এই ধারাবাহিকের সম্প্রচার শুরু হয় এবং সেই প্রথম থেকেই এখনও পর্যন্ত ইউনিটের কারও টিডিএস জমা পড়েনি, এমনই অভিযোগ রয়েছে।
''অগাস্ট মাসে আর্টিস্টরা একবার শুটিং বন্ধ করে দেন টিডিএসের জন্য। তাছাড়া এমনি পেমেন্ট তো বাকি ছিলই। টেকনিসিয়ান টিমের কয়েকজনকে আরটিজিএস করেছিলেন প্রযোজক, কিন্তু বেশিরভাগ টেকনিসিয়ানদের টাকা বাকি'', বলেন পরিচালক অমিত সেনগুপ্ত, ''আসলে পেমেন্টে দেরি হয়েই থাকে অনেক সময় কিন্তু অনেক বেশি দেরি হলে তখন সমস্যা।''
আরও পড়ুন: তিন দিন বন্ধ ‘রাসমণি’-র শুটিং, পরিস্থিতি নিয়ে কী বললেন পরিচালক
পরিচালক জানালেন, বকেয়া টাকার এই জট কাটাতে সম্প্রতি বিশেষ উদ্যোগী হয়েছে স্টার জলসা চ্যানেল। এখনও পর্যন্ত আর্টিস্টদের অনেকেরই প্রাপ্য টাকা চ্যানেল পেমেন্ট করেছে। তিন ধরনের শিল্পী রয়েছেন এই ইউনিটে-- ১) যাঁরা স্টার জলসার সঙ্গে সরাসরি চ্যানেল কনট্রাক্টে রয়েছেন এবং ২) যাঁরা প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে কনট্রাক্টে রয়েছেন ৩) যাঁরা ডেইলি ওয়েজ হিসেবে কাজ করেন, এঁদের পেমেন্টও একটা মাস শেষ হলে তার পর একসঙ্গে দেওয়া হয়।
এঁর মধ্যে প্রথম শ্রেণিভুক্ত ছাড়া বাকিদের পেমেন্টের দায়িত্ব প্রযোজকের হলেও, সমস্যার গভীরতা বুঝে বাকি শিল্পীদের পেমেন্টেরও দায়িত্ব নিয়েছে স্টার জলসা, এমনটাই জানালেন অমিত। তবে এখনও টেকনিসিয়ানদের বেশিরভাগেরই পেমেন্ট বাকি। চ্যানেলের তরফ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে যে সেই বকেয়া যতটা দ্রুত সম্ভব মিটিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু এর পরেও টিডিএস ধোঁয়াশা রয়েই যাচ্ছে।
''সুব্রতবাবু এক একটা ডেট দিচ্ছেন আর মিস করছেন। উনি মেল করে ডিরেক্টর্স গিল্ডকে জানিয়েছিলেন যে ২০ সেপ্টেম্বর সব পেমেন্ট করে দেওয়া হবে কিন্তু সেটাও হয়নি। এর পরেও ওঁর ভার্বাল অ্যাশিওরেন্সের উপরেই আমরা নির্ভর করছি যে মঙ্গল-বুধবারের মধ্যে সব ডিউ মিটে যাবে। সোমবার রাত অবধি কোনও ডেভেলপমেন্ট নেই। তাই আরও দুটো দিন আমাদের অপেক্ষা করতে হবে'', জানালেন পরিচালক অমিত সেনগুপ্ত।
তবে সব কিছুর মধ্যে একটা ব্যাপার অনস্বীকার্য। প্রযোজক সুব্রত রায় গা ঢাকা দেননি, শহর ছেড়ে অন্য কোথাও চলে জাননি। বকেয়া পেমেন্টের ইস্যুতে যেমনটা করেছিলেন মাস কয়েক আগে প্রযোজক রানা সরকার। সুব্রত রায় তাঁর ইউনিটের সদস্যদের সকলের ফোন না ধরলেও কারও কারও ফোন ধরছেন। তার মধ্যে দেবী চৌধুরাণী পরিচালকও রয়েছেন।
আরও পড়ুন: বাংলার বারো মাসে দেবীর ১২টি রূপ, জেনে নিন মহালয়া অনুষ্ঠানের আগেই
''আমি অনেক দিন আগে বামাক্ষ্যাপা-তে কিছুদিন কাজ করেছিলাম সুব্রতবাবুর সঙ্গে, তার পরে আবার 'দেবী চৌধুরাণী' করছি প্রথম থেকে। আমার সঙ্গে সম্পর্কটা খুব ভালো ছিল। পুরোটাই স্বাধীনতা ছিল। কাজের জায়গায় কখনও হস্তক্ষেপ করেননি। প্রথম পাঁচ মাস স্মুদলি কাজ করেছি। তার পর থেকেই সমস্যা শুরু হয়'', বলেন পরিচালক।
এখন প্রশ্ন হল, এত দীর্ঘ সময় শুটিং বন্ধ থাকলে নন-টেলিকাস্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে কি? পরিচালক জানালেন, 'দেবী চৌধুরাণী'-র এপিসোড ব্যাঙ্কিং ভালো। যেহেতু সোম থেকে শুক্র এই ধারাবাহিকের সম্প্রচার হয়, তাই শুটিং বন্ধ থাকলেও চলতি সপ্তাহে নন-টেলিকাস্ট হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। কিন্তু তার পরে সমস্যা দেখা দিতে পারে। অর্থাৎ যদি এই সপ্তাহের মাঝামাঝি থেকে জট না কাটে এবং বৃহস্পতি-শুক্রবার থেকে শুটিং শুরু করা না যায়, তাহলে পরবর্তী সপ্তাহে নতুন এপিসোড টেলিকাস্ট হওয়া একটু মুশকিল।