/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2019/10/lead-2.jpeg)
'দেবী চৌধুরাণী' ও 'মোহর'-নায়িকা সোনা সাহা।
Debi Choudhurani Sona Saha is now Mohor: 'মোহর'-এর নায়িকার মতোই অনেকটা অভিনেত্রী সোনা সাহার জীবন। স্টার জলসা-র এই নতুন ধারাবাহিকটি শুরু হচ্ছে ২৮ অক্টোবর থেকে রাত ৮টার স্লটে। অর্থাৎ 'দেবী চৌধুরাণী'-র স্লটেই আসছে এই ধারাবাহিক। দর্শক এতদিন দেবী চৌধুরাণীকে দেখেছেন, এখন দেখবেন একটি সোশাল ড্রামা যার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে মফসসলের একটি মেয়ে। সে পড়াশোনা করে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে চায় অথচ তার বাবা মেয়ের বিয়ে দিতেই ব্যতিব্যস্ত। বাড়ি থেকে এক রকম পালিয়েই সে চলে আসে কলকাতায়। তার পর কীভাবে তার স্বপ্ন সফল হয়, সেই নিয়েই ধারাবাহিকের গল্প।
এই গল্পের সঙ্গে বেশ কিছুটা মিলে যায় অভিনেত্রী সোনা সাহার নিজের জীবনের গল্পও। তিনিও বাবার প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও পা রেখেছিলেন মডেলিং ও অভিনয়ের জগতে। কিন্তু পরবর্তীকালে তাঁর বাবাও যেমন মেনে নিয়েছিলেন, তেমনই তাঁকে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করেছে তাঁর শ্বশুরবাড়ির পরিবার। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-র সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় উঠে এল তাঁর অভিনেত্রী হয়ে ওঠার গল্প।
আরও পড়ুন: টিআরপি সেরা ‘ত্রিনয়নী’, সাতটার স্লটে এগিয়ে ‘শ্রীময়ী’
তোমার বাবার আপত্তি ছিল অভিনেত্রী হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে, সেটা তো শুনলাম। কিন্তু তুমি শেষ পর্যন্ত বাবাকে রাজি করালে কীভাবে?
কথায় আছে না যে সব কাজেই এক হাতে তালি বাজে না। আমার সব কাজে প্রথম থেকে সাপোর্ট ছিল আমার ছোড়দার। বাবাকে রাজি করিয়েছিল কিন্তু ছোড়দা। ছোড়দা না থাকলে আমি এই জায়গায় আসতে পারতাম না। আমি যখন প্রথম কাজ শুরু করলাম, ছোড়দা বিভিন্ন জায়গায় আমার সঙ্গে যেত। সেখানে গিয়ে গিয়ে বাবাকে বোঝাত যে না গো সত্যিই খুব ভালো কাজের জায়গা আর ও খুব ভালো কাজ করছে। তখন আস্তে আস্তে বাবা রাজি হয়। বিশেষ করে দেবী চৌধুরাণী-তে অভিনয় করা নিয়ে বাবা খুবই খুশি হয়।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2019/10/inside1-23.jpg)
এ ব্যাপারে তোমার মায়ের কী মত ছিল?
মা তো প্রথম থেকেই আমাকে সাপোর্ট করেছে! বাবার থেকেও বেশি মা আমাকে সাপোর্ট করেছে বলা যায়। এখন দুজনেই খুব সাপোর্ট করছে ঠিকই কিন্তু প্রথমদিকে মা-ই বেশি সাপোর্ট করত।
তোমার পড়াশোনা কী নিয়ে?
সাইকোলজি অনার্স নিয়ে পড়েছি। আমি মালদার মেয়ে, স্কুল-কলেজ দুটোই ওখানে। মালদা থেকে কলকাতা এসেছিলাম স্ট্রাগল করার জন্যেই। বলা যায় স্ট্রাগল করতে করতেই কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেওয়া। আমার গ্র্যাজুয়েশনের শেষের দিকে কলকাতায় আসি। পড়া শেষ করার জন্য তাই প্রথমদিকে কিছুদিন মালদায় যাওয়া-আসা করতে হতো।
প্রথম যখন অভিনয়ে এলে, সিরিয়ালের এরকম একটা লং শুটিং শিডিউল, তার পরে অন্য রকম একটা পরিবেশ, অসুবিধা হয়নি?
দেবী চৌধুরাণী-র শুটিং শুরু হওয়ার আগে আমাকে কিছু ট্রেনিং দেওয়া হয়েছিল, ওয়ার্কশপ করানো হয়েছিল। দর্শক দেখেছেন যে আমি ঘোড়া চালিয়েছি, তলোয়ার চালিয়েছি। তাই কিছুটা ট্রেনিং আমার হয়েছিল। সেইগুলো যখন প্রস্তুতি নিই, তখন অনেকটা দেবী চৌধুরাণী করার জন্য তৈরি হয়ে যাই। শুটিং করতে গিয়ে আমার সেরকম বিশেষ কোনও অসুবিধায় পড়তে হয়নি। কিন্তু ফ্লোরের অভিজ্ঞতাটা নতুন। তখন ক্যামেরা বুঝতাম না। কোনটাকে কী বলে, কিছুই জানতাম না। প্রথম প্রথম অসুবিধা হলেও এখন ঠিক হয়ে গিয়েছে।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2019/10/sona-new.jpg)
সিনিয়রদের মধ্যে কেউ তোমাকে গাইড করেছেন?
হ্যাঁ, ভীষণভাবে। যেমন ওখানে নীল-দা ছিল, লোপাদি ছিল, তণিমাদি ছিল। আর বিশেষভাবে আমাকে সাপোর্ট করেছে আমার যে হিরো ছিল, রাহুল। আমি সব কথা শেয়ার করতাম-- রাহুল এটা ভালো লেগেছে, এটা আজ খারাপ লেগেছে। অনেক সময় এরকম হয়েছে যে আমাকে ডিরেক্টর বকা দিয়েছেন, ফ্লোরের মধ্যে কিছু বলিনি। মেকআপ রুমে এসে কান্নাকাটি করছি। অনেক সময়েই সবাই আমার রুমে এসে ভিড় করেছে। আমাকে বলেছে যে এরকম হয়েই থাকে, মন খারাপ করিস না। একদিন নিজেই বলবি যে আমি কেন কাঁদছিলাম।
অভিনয় ছাড়া তুমি আর কী কী করতে ভালোবাসো?
আমি নাচ করতে খুব ভালোবাসি। আমি নাচ শিখতামও আগে। আর গান শুনতে অসম্ভব ভালোবাসি। বাড়িতে থাকা মানেই আমার গান শোনা।
আরও পড়ুন: আইএএস হওয়ার ইচ্ছে ছিল, হয়ে গেলেন অভিনেত্রী
কলকাতায় তুমি কি তাহলে একাই থাকো নাকি বাবা-মা এখন এসে থাকেন তোমার সঙ্গে?
(একটু থেমে)... আমি প্রথম প্রথম কাউকে না বলতে চাইলেও, এখন বোধহয় সবাই বুঝতে পেরে গিয়েছেন... খুব কম বয়সে আমার বিয়ে হয়ে যায়। সেটা অবশ্য বাড়ি থেকে দেখেশুনেই হয়েছে। সবাই এটা জানেন তা নয়। কিন্তু এখন আস্তে আস্তে অনেকেই জেনেছেন... আসলে আগে আমাকে এই নিয়ে প্রশ্ন করা হতো না, তাই বলতাম না। এখন সবাই জেনে গিয়েছে, তাই এখন আর বলতে সঙ্কোচ বোধ করি না। এবছর ডিসেম্বরে আমার বিয়ের ৩ বছর পূর্ণ হবে।
তার মানে তোমার অভিনয়, তোমার কাজ শুরু হয়েছে বিয়ের পরে, শ্বশুরবাড়িতে থেকে?
হ্যাঁ, আমি শুরুতেই যেমন বললাম, আমার ছোড়দা তো সাপোর্ট করেছেই, সঙ্গে আমার হাজব্যান্ড আমাকে খুব সাপোর্ট করেছে। আমার শ্বশুর-শাশুড়ি প্রত্যেকেই... একটা মেয়ের বিয়ে হওয়ার পরে, শ্বশুরবাড়িতে থেকে এমন একটা জায়গায় আসা ভীষণ কঠিন। সেখানে আমি বলব আমি নিজেকে লাকি মনে করছি। এরকম শ্বশুর-শাশুড়ি-স্বামী সবার যেন হয়।