রাজ কাপুর ( Raj Kapoor ) হওয়ার পরেও তাঁকে উপেক্ষা শুনতে হয়। তাও কার কাছে? না বাংলার মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের তরফে। কারণ ছিল ভয়ঙ্কর।
তখন সুচিত্রার ( Suchitra Sen ) অভিনয়ের পাশাপাশি তাঁর রূপের মুগ্ধতা সারা দেশ জুড়ে। স্ক্রিনে যখন সংলাপ বলতেন সকলে চেয়ে থাকতেন তাঁর দিকে। এমনকি মহানায়ক ( Mahanayak Uttam Kumar ) নিজেও তাঁকে যেমন বন্ধু ভাবতেন তেমনই বেশ সমীহ করে চলতেন। অভিনেত্রী বলিউডে ছবি করলেও রাজ কাপুরের সঙ্গে তাঁর ছবি করা হয়নি। বিমল রায় ( Bimal Ray ) এবং গুলজারের ( Gulzar ) সঙ্গে তিনি কাজ করেছেন। তবে, রাজ কাপুরকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন কারণবশতই।
রাজ কাপুরের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য এবং ব্যাক্তিত্ব একেবারেই পছন্দ হয়নি সুচিত্রার। সেকারণেই নাকি তাঁকে পায়ের কাছ থেকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কেন? কী এমন হয়েছিল সেদিন। আজ মহানায়িকার মৃত্যুবার্ষিকী। তাঁর সৌন্দর্য থেকে অভিনয় দক্ষতা ভারতীয় সিনেমার এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। অভিনেত্রী একদিকে যেমন ইন্ডাস্ট্রিতে মেয়েদের রুখে দাঁড়ানো নিয়ে নানা কথা বলতেন তেমনই তিনি পুরুষদের এসব আচরণ একেবারেই পছন্দ করতেন না।
আরও পড়ুন - উত্তমের বন্ধুত্ব: শেষ সময়েও সুচিত্রার সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন মহানায়ক?
অভিনেত্রী এক সাক্ষাৎকারে অমিতাভ চৌধুরীকে জানিয়েছিলেন, ঠিক কী কারণে তিনি রাজ কাপুরকে ( Suchitra On Raj kapoor ) না বলেছিলেন। একবিন্দু সময় না নিয়েই রাজ কাপুরের অফার প্রত্যাখ্যান করেন তিনি। সেদিন তিনি বলেন, "আমি পুরুষদের মধ্যে তাদেরই পছন্দ করতাম যারা বুদ্ধিদীপ্ত এবং শিক্ষিত তথা মার্জিত। তাদের ক্ষেত্রে আমি সৌন্দর্য খুঁজি না। আমি রাজকে সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর অফার ফিরিয়ে দিই। মনে আছে একবার তিনি লিড রোল অফার করতে এসেছিলেন। আর আমি যেই আমার জায়গায় বসলাম, উনি একটা ফুলের তোড়া আমার পায়ের কাছে দিয়ে বসে পড়লেন। আমি এধরনের মানুষ একদম পছন্দ করি না। সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর অফার ফিরিয়ে দিলাম। যে পুরুষরা এসব আচরণ করেন তাদের আমার মার্জিত মনে হয় না।"
একদিকে যেমন বলিপাড়ায় দিলীপ কুমারের বিপরীতে কাজ করেছিলেন। সঞ্জীব কাপুরের সঙ্গে কাজ করেছিলেন গুলজারের আঁধি ছবিতে, তেমনই অন্যদিকে রাজ কাপুরের মত পরিচালককে তিনি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন শুধু ব্যাক্তিত্ব ঠিক নেই বলে। শেষবার তাঁকে দেখা গিয়েছে, ১৯৭৮ সালে প্রণয় পাশ ছবিতে। ২০১৪ সালের এই দিনেই তাঁর মৃত্যু হয়। এবং শেষ দিন অবধি মহানায়িকা নিজেকে সকলের আড়ালেই রেখেছিলেন। আজও অধরা তাঁকে শেষ সময়ে দেখতে কেমন লাগত। সকলের কাছে সেই মলীন হাসি বজায় রেখেই তিনি চলে গিয়েছিলেন না ফেরার দেশে।