প্রয়াত পরিচালক অরুণ রায়। গতকাল রাত থেকেই তাঁর অবস্থা ছিল সংকটজনক। বাঘা যতীনের পরিচালকের শারীরিক অবনতির কথা জানিয়েছিলেন অভিনেতা এবং চিকিৎসক কিঞ্জল নন্দ। কিন্তু, আজ সকাল হতেই দুঃসংবাদ। নতুন বছরের দ্বিতীয় দিনটাই যেন অদ্ভুত শোক নিয়ে এল। একজন অনন্য পরিচালকের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ টলিপাড়া।
কিঞ্জল দাঁড়িয়ে থেকে সমস্তটা তদারকী করছিলেন। কিছুদিন আগেই দেব গিয়েছিলেন তাঁকে দেখতে। আর আজ সব শেষ। গতকাল তাঁকে দেখে গিয়েছিলেন অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তীও। তাঁর সঙ্গে বাঘা যতীন একসঙ্গে কাজ করছিলেন অভিনেত্রী। আর আজ তাঁর চলে যাওয়ায়, বেশ কিছু স্মৃতি শেয়ার করেছেন তিনি। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার কাছে কী বললেন সুদীপ্তা?
অভিনেত্রীর কথায়, "আমার মনে পড়ছে বাঘা যতীন শুট শেষ হয়ে গিয়েছিল মার্চে। আর উনার জুলাই মাসে ধরা পড়েছিল ক্যান্সার। শুটিংয়ের সময় উনি ঠিকঠাক ছিলেন। কিন্তু ছবির প্রমোশনের সময় আমার মনে আছে উনার তখন কয়েকটা কেমো নেওয়া হয়ে গিয়েছে। উনি মানসিকভাবে খুব স্টেডি ছিলেন। খালি বলতেন, না না আমার কিছু হয়নি, চলো! কাজ করব। কিন্তু, কালকে আমি যে দৃশ্য দেখেছি, কিঞ্জল আমায় বলেই দিল, কোনও আশাই রেখো না।" পরিচালকের সঙ্গে একটা ছবিতেই কাজ করেছিলেন সুদীপ্তা।
কিন্তু, এমন মানুষ যেন দেখেননি তিনি। অত্যন্ত মজার মানুষ সঙ্গে অদ্ভুত একটা দূরদর্শিতা ছিল তাঁর। অভিনেত্রী বললেন, এমন মজার মানুষ, আমি দেখিনি সত্যি। আমার মনে আছে, যখন উনি চোলাই বানাচ্ছেন, তখন আমার করার কথা ছিল, সেটা হয়নি। তাই বাঘা যতীনের সময় আমায় বলেছিলেন, এবার কিন্তু হতেই হবে। আমি খুব কম দিন শুটিং করেছি উনার সঙ্গে। কিন্তু, অসাধারণ মজার একটি মানুষ। আর সত্যি বলতে গেলে দেবের সঙ্গে এত ভাল সম্পর্ক ছিল অরুণদার, আমাদের সেই দৃশ্যগুলো দেখে দিন চলে যেত। মানে দেব হয়তো একটা কিছু বলল, অরুণ দা একটা উত্তর দিলেন, দেব আবার মজা করল। একটা খুনসুটি চলত ওদের দুজনের।
গতকাল অরুণ বাবুকে দেখতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এমন মজার মানুষটিকে যে এভাবে দেখতে হবে তাঁকে যেন ভাবতেই পারছেন না। সেই দৃশ্য এবং সেই মুহূর্তটা মনে রাখতে চাইছেন না তিনি। তাঁর কথায়, "আমি গতকাল যেভাবে অরুণ দাকে দেখেছি, আমি সেটা ভুলতে চাই। আমি ওই দৃশ্যটা ভুলতে পারছি না। আমি অরুণ দাকে এভাবে মনে রাখতে চাই না। এত মজার একটি মানুষ, তাঁকে আমি এভাবে দেখব, আর সেটা আমি মনে রাখব? গতকাল উনি কথা বলতে পারছেন না। চোখ দিয়ে জল পড়ছে। মানে উনার সামনে দিয়ে কেউ চলে গেলেই না উনি কাঁদছিলেন। এই যে কথা বলতে পারছেন না, চোখ দিয়ে টপটপ করে জল পড়ছিল উনার। এটা আমি মেনে নিতে পারছি না।"