স্বস্তিকা। নামটার মানেই যেন হয়ে দাঁড়িয়েছে, 'বিতর্ক থেকে স্বস্তি নেই'। তিনি যাই করুন না কেন, ঠিক কোথা থেকে একটা 'নীতি পুলিশের আঙুল' চলে আসে সামনে। তবুও ঠিক-ভুল প্রকাশ্যে বলা নিয়ে তিনি আজও অকপট। এর মধ্যেই আবার স্বস্তিকার জীবনেই নয়া অভিজ্ঞতা। বলিউডে পা রাখলেও, এর আগে কখনও মারাঠি ছবিতে অভিনয় করেননি তিনি। তবে এবার এসেছে সুযোগ, 'আরন' নামের এক মারাঠি ছবিতে অভিনয় করছেন স্বস্তিকা। তাই সময় পেয়েই টলিউড এবং 'আরন' প্রসঙ্গে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা -র সঙ্গে কথা বললেন অভিনেত্রী।
আরনের মতো ছবি দিয়ে কেন মারাঠিতে ডেবিউ?
মারাঠি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে আমার অতটা পরিচিতি নেই যে ছবি বাছতে পারি। সেটা কলকাতার ক্ষেত্রে হয়। কমন বন্ধুর মাধ্যমে ওঙ্কারের (আরনের পরিচালক) সঙ্গে আলাপ হয়। ততদিনে আমার চরিত্রটার জন্য কাস্টিং হয়ে গিয়েছিল। সব জেনেশুনেও কথা বলতে গিয়েছিলাম। চিত্রনাট্যটা এত পছন্দ হয়েছিল যে মারাঠি সংলাপ মুখস্থ করে আবার দেখা করতে যাই। মানে কনভিন্স করেই ছাড়ব। এই ডেডিকেশনটা ওর পছন্দ হয়েছিল।
মানে, মারাঠি ছবিতে ডেবিউ করেই শত্রু বানিয়ে ফেললেন?
(হেসে) সে এই গল্পটা জানবে না। আসলে সবসময় এমন একটা ছবি করতে চেয়েছি যেখানে শুধু পরিচালক নয়, আমারও কাজ করার মতো কিছু থাকবে। হল থেকে বেরোনোর সময় যেন দর্শক সে কথা মনে রাখে।
ছবিতে তো আপনার অনেকগুলো লুক রয়েছে?
হ্যাঁ! ওঙ্কার বলেছিল, মেকআপ চাই না একদম। আমি তো শুনেই খুশি হয়েছিলাম। ও তো আর জানে না, বাংলায় যে সমস্ত চরিত্র আমি করি সেগুলোতেও প্রায় নো মেক আপ লুকই থাকে। ভেবেছিল, মেকআপ করতে দিচ্ছে না বলে ঘ্যান ঘ্যান করব (হাসি)।
মারাঠি ছবি 'আরন'-এ অভিনয় করেছেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। ফোটো- অ্যাডভার্ব
আর মারাঠি শেখাটা...
দেখুন, আমি না ওরকমভাবে মারাঠি শিখে ছবিটা করতে শুরু করিনি। আসলে সবার শেষে কাস্ট করা হয়েছিল তাই অতটা সময়ও ছিল না। একমাসে যেটুকু হয়, ততটাই চেষ্টা করেছি। শুটিং চলার সময়ে ইউনিটের কারওকে বাদ দিইনি, যে থাকত সামনে, স্পটবয় থেকে ড্রাইভার, সবাইকে স্ক্রিপ্ট ধরিয়ে বলতাম, 'দাদা থোরা শুন লো ঠিক হ্যায় কি নেহি'! শেষদিন পর্যন্ত এটা করে গিয়েছি'।
টলিউডের মানুষেরা ছবিটা দেখবে?
ইন্ডাস্ট্রির লোকজনের সবই মাথাব্যাথা সোশাল মিডিয়ায়। আর আমি তো কোনও ইন্ডাস্ট্রির লোককে সোশাল মিডিয়ায় ফলোই করি না। কতটা দেখবে বলতে পারব না!
আগামী দিনে স্বস্তিকা কী কী নিয়ে ব্যস্ত থাকবে?
একটা ছবি করছি 'কিজি অউর ম্যানি'। এটা মুকেশ ছাবড়ার ছবি। সুশাংশু শর্মার পরিচালনায় কে কে মেননের সঙ্গে একটা ছবি করলাম। প্রায় দু'মাস ধরে ভোপালে শুটিং হয়েছে। এখন অল্ট বালাজির হিন্দি ওয়েব সিরিজে কাজ করছি। কলকাতায় তার শুটিংও চলছে।
মুখের ওপর কথা বলে কি স্বস্তিকা শক্র বাড়াচ্ছে?
নতুন করে আর শত্রু বাড়ানোর কিছু নেই। ১৮ বছর হয়ে গেল প্রায়। তাই, লোকে জানে আমি কেমন। লোককে কাজ করিয়ে পয়সা না দেওয়ার ট্রেন্ড আছে আমাদের এখানে। কোথাও যদি দেখি, এমন সম্ভবনা আছে তাহলে যত ভাল রোলই হোক না কেন, কাজটা করব না। আর আমার তো রেস্টুরেন্টও নেই, বুটিকও নেই, প্রোডাকশন হাউজও নেই। সুতরাং, অভিনয় করেই সংসার চালাতে হয়। এতবার পারিশ্রমিক চাইতে হয় যে মনে হয় ধার চাইছি।
আর দিবাকরের ছবিটা করার পর থেকেই বাইরে কাজ করতে চেয়েছি। নিজেরও তো গ্রো করার জায়গা প্রয়োজন। বাইরে কাজ করলে অনেক ধরনের চরিত্র পাওয়া যায়। যেরকম 'আরনে'র ক্ষেত্রেই পেলাম।
দিবাকরের ছবিটা করার পর থেকেই চেয়েছি বাইরে কাজ করতে, স্বস্তিকা। ফোটো-অ্যাডভার্ব
টলিউডে সামনেই রয়েছে দেবারতি গুপ্তর 'অনেক দিনের পরে', সৃজিতের 'শাহজাহান রিজেন্সি' মতো ছবি। আমার কাছে এ রকম চরিত্র এলে নিশ্চয়ই অভিনয় করব।
(লোকেশন সৌজন্য- বম্বে ব্রেসারি)