Taslima Nasrin-Mamata Banerjee: তসলিমা নাসরিন, যিনি নিজের ঠোঁটকাটা স্বভাবের জন্য বেশ পরিচিত। আপাতত বাংলাদেশের জায়গায় তিনি ভারতে রয়েছেন। এবং এখানে বসেই তাঁকে দেখা গেল কলকাতার বইমেলা নিয়ে আক্ষেপ করতে। ভারত-বাংলাদেশ বিবাদ তুঙ্গে। সমাজ মাধ্যমে দু দেশের জনগণের মধ্যে যে ধরণের মন্তব্যের আদান-প্রদান হয়, তাতে উত্তাপ বোঝা সম্ভব। আর এবার তসলিমা নিজেও নিজের মন খারাপের কথা জাহির করলেন।
২৮ তারিখ হচ্ছে কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলা। যে বইমেলায় একসময় বাংলাদেশের স্টল থাকত, সেদেশের সঙ্গে সম্পর্কের গোলমালের জন্যই কি তবে এবার বাংলাদেশ সংক্রান্ত কিছু নেই? এমনকি কলকাতায় বাংলাদেশ বইমেলা হত। সেটাও হবে কিনা সময় বলবে। কিন্তু, তসলিমা ভারত বাংলাদেশ বিবাদে নাকি কলকাতায় আসতে পারছেন না? লেখিকা বলছেন...
"কলকাতায় আন্তর্জাতিক বইমেলা হচ্ছে, যে বইমেলায় আমি একসময় ভালবেসে যেতাম। বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় যেতাম বইমেলায় যাওয়ার জন্য। ইউরোপ আমেরিকা থেকে ছুটে আসতাম ভারতে, শুধু কলকাতা বইমেলার জন্য। আর এখন, আমি ভারতে থেকে ওয়ার্ল্ড বুক ফেয়ারে যাচ্ছি, কেরালা বইমেলা, পুণে বইমেলা, চেন্নাই বইমেলা, রায়পুর বইমেলা, ভুপাল বইমেলা, ভুবনেশ্বর বই মেলা, ইত্যাদি নানা রাজ্যের বইমেলায় যাচ্ছি। কিন্তু যেতে পারছি না শুধু কলকাতা বইমেলায়।"
কলকাতা বইমেলায় না এসে, তিনি বেশ কিছু বিষয় মিস করছেন। একসময় যে কলকাতা বইমেলায় তাঁর জন্য লাঠিচার্জ হত, সেই দিনগুলো বারবার মনে পড়ছে তাঁর। তিনি আরও লিখছেন... "এক সময় কলকাতা বইমেলায় ঢুকলে এত মানুষ আমার অটোগ্রাফ নিতে আসতো যে পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হতো, আমার বই কিনতে আসার জন্য ভিড় এত বেশি হতো যে স্টলের কোলাবসিবল গেট বন্ধ করে দিতে হতো। এসব নাকি কলকাতার কিছু বড় লেখকের পছন্দ হয়নি।" কিন্তু মাননীয়া দিদির কাছে নালিশ করলেন তিনি। তিনি এও বললেন, মুখ্যমন্ত্রী নাকি তাঁকে কলকাতায় ঢুকতে দেবেন না। এমনকি, বাংলাদেশের বইমেলাতে ৩২ বছর তিনি ঢুকতে পারেননি। তিনি বলছেন...
"আমাকে যে কলকাতায় ঢুকতে দেবেন না মাননীয়া মূখ্যমন্ত্রী, এ নিয়ে কলকাতার কোনও লেখক কবির কিছু কি যায় আসে? না। বাংলাদেশের একুশে বইমেলায় যে ঢুকতে পারবো না, ঢুকতে পারছি না বত্রিশ বছর। এতে সেখানকার লেখক কবির কিছু কি যায় আসে? না, যায় আসে না। বাংলাদেশ তো কতকাল আগেই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ও দেশের লেখক কবিরাও অনেককাল নষ্ট। ওদের কথা ধরছি না। এত নষ্টদের মধ্যে এই যে আমি শুদ্ধ মন নিয়ে বেঁচে আছি, এত হিংসুক আর লোভীদের মধ্যে আমি যে আজও উদার এবং নির্লোভ জীবন যাপন করছি, আমাকে আমারই তো ভালবাসা উচিত!"