জি বাংলা-য় নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জীবন-আশ্রিত ধারাবাহিকে নেতাজির জীবনের সব অধ্যায়গুলিই নিয়ে আসছেন নির্মাতারা। মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে নেতাজি-র রাজনৈতিক সম্পর্কের কথা বেশিরভাগ দর্শকেরই অজানা নয়। ধারাবাহিকে সদ্য শুরু হয়েছে মহাত্মার ট্র্যাক। অভিনেতা দেবপ্রিয় মুখোপাধ্যায়কে অত্যন্ত ভাল মানিয়েছে মহাত্মার চরিত্রের লুকে। এমন একটি চরিত্র যে কোনও অভিনেতার কাছেই স্বপ্নের মতো।
সম্প্রতি সোশাল মিডিয়ায় চরিত্রের লুকটি শেয়ার করেছেন দেবপ্রিয়। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে অভিনেতা বিশদে জানালেন কীভাবে তিনটি ধাপে এই চরিত্রের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: আর্টিস্ট ফোরামের নতুন সভাপতি নির্বাচন, জল্পনা তুঙ্গে
''আমি প্রথমে দর্শনটাকে বুঝতে চেয়েছি, ওটাই তো মূল ভিত্তি। ব্যক্তিগতভাবে আমি গান্ধীবাদী নই কিন্তু ওঁর লেখা যখন পড়তে শুরু করলাম, যত বেশি করে পড়েছি, ততই মনে হয়েছে এই কথাগুলোর সঙ্গে আমি সহমত। আর যে সময়ের মধ্যে আমরা রয়েছি, সেখানে দাঁড়িয়ে আরও বেশি করে প্রাসঙ্গিক মনে হচ্ছে'', বলেন দেবপ্রিয়।
দেবপ্রিয় বাংলা ছবি ও বাংলা টেলিপর্দায় খুবই কৃতিত্বের সঙ্গে অভিনয় করছেন দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে। বয়সে নবীন হলেও এর মধ্যে বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে তাঁকে প্রবীণ চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে। 'মিতিনমাসি'-র চরিত্রটির কথাই ধরা যাক। এই ধারাবাহিকে মহাত্মার পঞ্চাশের কোঠার বয়সটি দেখানো হবে। দেবপ্রিয়র বর্তমান বয়স তিরিশের গোড়ার দিকে। কিন্তু ধারাবাহিকের সম্প্রচার দেখলে দর্শক বুঝবেন, কীভাবে মহাত্মার বয়স ও ব্যক্তিত্ব-- দুটিকেই শরীরে ধারণ করেছেন অভিনেতা।
''দ্বিতীয় ধাপের প্রস্তুতিটা ছিল ওঁর প্রতিক্রিয়াগুলো নিয়ে জানা। ওঁকে সাধারণত কেউ রাগতে দেখেননি। কিন্তু একটি মার্কিন সাংবাদিকের সাক্ষাৎকারে আমি ওঁর রাগটা লক্ষ্য করেছি। উনি রেগে গিয়ে একটু থেমে গেলেন, সামান্য পজ নিলেন, তার পরে আবার বলতে শুরু করলেন। প্রচুর ডকুমেন্টারি, ইন্টারভিউ দেখেছি'', দেবপ্রিয় বলেন, ''আর তৃতীয় ধাপের প্রস্তুতি ছিল বডি ল্যাঙ্গোয়েজে। আমি ৬ ফুট ১ ইঞ্চি লম্বা আর গান্ধীজি খুবই ছোটখাট চেহারার মানুষ ছিলেন। আমাকে তাই অভিনয় করার সময়ে একটু ঝুঁকে পড়া, ড্রুপি শোল্ডারের বিষয়টা রাখতে হচ্ছে।''
নতুন প্রজন্মের চরিত্রাভিনেতাদের মধ্যে দেবপ্রিয় রয়েছেন একদম প্রথম সারিতে। প্রায় ১৬ বছর হল থিয়েটার করছেন আর বাংলা ছবিতে এসেছেন ২০০৯ সালে। সব মিলিয়ে পর্দার কেরিয়ার ১১ বছরের যদিও বাংলা ছবির জগৎ এখনও সেভাবে তাঁকে ব্যবহারই করেনি। 'নেতাজি' ধারাবাহিকে মহাত্মা গান্ধীর চরিত্রে তাঁর কাস্টিং নিঃসন্দেহে তাঁর কেরিয়ারে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
''নেতাজির সঙ্গে মহাত্মার যে সম্পর্ক সেটা আমাদের দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসকে ভীষণ ভাবে প্রভাবিত করেছে, এই দেশ গড়ে ওঠার পিছনে এঁদের রাজনৈতিক সম্পর্কের কিন্তু একটা বড় অবদান রয়েছে। অনেকের ধারণা নেতাজি ও মহাত্মা দুজন দুজনের শত্রু ছিলেন। একেবারেই সেটা নয়। দুজন দুজনকে অত্যন্ত শ্রদ্ধা করতেন, খুব স্নেহ-ভালবাসার সম্পর্ক ছিল। সেই কেমিস্ট্রিটা ঠিকঠাক আসা দরকার স্ক্রিনে। আমি আর অভিষেক খুব চেষ্টা করছি। বলতে গেলে অভিষেক আমাকে অনেকটাই পুশ করেছে, যাতে কাজটা ভাল হয় আর ও খুবই কোঅপারেট করছে'', জানান অভিনেতা।