Advertisment

Abhishek Chatterjee: 'ড্যাডি নেই', অঝোরে কাঁদছেন 'গুনগুন'! বাবাকে শেষবার রাজার মতো সাজালেন 'শঙ্খ'

আজও 'মোহর'-এর কলটাইম ছিল! তৃণা-প্রতীকের কাছে অভিষেক চট্টোপাধ্যায় ছিলেন বাবার মতোই।

author-image
IE Bangla Entertainment Desk
New Update
Pratik Sen, Trina Saha, Abhishek Chatterjee's death, Abhishek Chatterjee serials, অভিষেক চট্টোপাধ্যায়, মোহর, খড়কুটো, প্রতীক সেন, তৃণা সাহা, অভিষেক চট্টোপাধ্যায় অভিনীত সিরিয়াল, bengali news today

অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের প্রয়াণে আবেগপ্রবণ তৃণা সাহা, প্রতীক সেনরা

রক্তের সম্পর্ক না থাকলে কি আত্মীয়তা গড়ে তোলা যায় না? অভিষেক চট্টোপাধ্যায় কিন্তু সিরিয়াল করতে গিয়ে দুই অভিনেতা-অভিনেত্রীকে একেবারে নিজের ছেলে-মেয়েই বানিয়ে ফেলেছিলেন। 'খড়কুটো'র 'গুনগুন' আর 'মোহর'-এর 'শঙ্খ রায়চৌধুরি' তাঁর কাছে শুধু পর্দার সন্তান নন, এমনকী বাস্তবজীবনেও তাঁদের সেই জায়গাই দিয়েছিলেন অভিষেক। তাই তো আজ তাঁর প্রয়াণে 'গুনগুন' তৃণা সাহার চোখের জল যেন কিছুতেই বাঁধ মানতে চাইছে না। বৃহস্পতিবার সকালে খবর পেয়েই হন্তদন্ত হয়ে অভিনেতার প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের বাড়িতে ছুটলেন 'মোহর'-এর 'শঙ্খ' ওরফে প্রতীক সেন।

Advertisment

'খড়কুটো' ধারাবাহিকে তৃণা সাহার বাবার ভূমিকায় অভিনয় করছিলেন অভিষেক চট্টোপাধ্যায়। তবে অফস্ক্রিনেও তাঁদের বাবা-মেয়ের মতোই সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। তৃণা আদতেও তাঁকে 'ড্যাডি' বলেই ডাকতেন সেটে। এদিন সকালে খবরটা পেয়ে যেন অভিনেত্রীর মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল। বললেন, "বাবার মতোই বকাবকি করতেন একেবারে। এই তো পরশুই শুট করলাম একসঙ্গে। তখন থেকেই শরীরটা খারাপ ছিল। সেদিনও উঠে দাঁড়াতে পারেননি ঠিক করে। কাঁপছিলেন। গত এক বছর ধরে আমরা সবাই বলে আসছি, এবার একটু সাবধানে থাকো। সবসময়ে বলতেন, একদম ফিট অ্যান্ড ফাইন আছি।" কথাগুলো বলতে বলতে আর শেষ করতে পারলেন না তৃণা। কান্নায় গলা বুজে এল তাঁর।

<আরও পড়ুন: ‘প্রতিক্রিয়া দিতে পারছি না, ক্ষমা করবেন’, অভিষেকের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ প্রসেনজিৎ>

ওদিকে লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনের দুনিয়া ছাড়িয়ে প্রতীক সেনের সঙ্গেও বাবা-ছেলের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের। 'মোহর' সিরিয়ালে তিনি ছিলেন শঙ্খ রায়চৌধুরির বাবা 'আদি রায়চৌধুরি'। আজ বৃহস্পতিবারও এই ধারাবাহিকের কলটাইম ছিল অভিষেকের। কিন্তু বুধবার রাতেই তো সব শেষ! প্রতীক বললেন, "অভিষেক চট্টোপাধ্যায় নেই, জানার পর থেকেই পায়ের তলার মাটিটা সরে গেল। ওঁর বাড়িতে ছুটলাম সঙ্গে সঙ্গে। দেখলাম লাবণী সরকার, ইন্দ্রাণী হালদার, শুভাশীষ মুখোপাধ্যায়, কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায় সকলে ওঁর চারপাশে দাঁড়িয়ে অঝোরে কাঁদছেন। ওঁরাই বললেন, 'তুই তো ওঁর ছেলে ছিলিস, বাবাকে নিজের হাতে সাজিয়ে দে।'"

শোক সামলে প্রতীক নিজে হাতে অভিষেকের পোশাক পাল্টে দিলেন। সযত্নে তাঁর পর্দার বাবা 'আদি রায়চৌধুরি'কে তৈরি করে দিলেন শেষযাত্রার জন্য। প্রতীকের কথায়, "জীবনের শেষযাত্রায় রাজার মতো সেজে উঠলেন বাবা।" আবেগপ্রবণ শঙ্খদ্বীপ শেয়ার করলেন নানা মজার মুহূর্তের কথাও। "সেটে খুব ঠাট্টা করতাম। জিজ্ঞেস করতাম- এত সুন্দর দেখতে তুমি, কটা প্রেম করেছো জীবনে? উনিও রসিকতা করে বলতেন- অনেক। তবে সংযুক্তার সঙ্গে বিয়ে হওয়ার পর আর করিনি। মাঝেমধ্যেই খোঁজ নিতাম ধূমপান করা কমিয়েছেন কিনা! প্রশ্ন করলেই শিশুসুলভভাবে ঘাড় নাড়িয়ে বলতেন, অনেকটা কমিয়েছি।"

<আরও পড়ুন: ‘মিঠু আর নেই!’, কান্নায় ভেঙে পড়লেন ইন্দ্রাণী-শতাব্দী, শোকপ্রকাশ ঋতুপর্ণা-শাশ্বতর>

প্রতীক আরও জানান, "'মোহর'-এর সেট একেবারে জমিয়ে রাখতেন। খাদ্যরসিক ছিলেন, তাই সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে নিয়ে খেতে বসতেন। শট দেওয়ার আগে সিন নিয়েও আলোচনা করতেন। কোনওদিন মানুষটার মধ্যে এতটুকু অহঙ্কার দেখিনি। কোনও গসিপে ভয় পেতে না করতেন।"

হিরো হিসেবে কত সুপারহিট ফিল্ম উপহার দিয়েছেন, কিন্তু পরের দিকে সিনেমায় সেরকম রোল না পেয়ে সিরিয়ালকেই আঁকড়ে ধরেছিলেন অভিনয় জারি রাখার জন্য। 'কুসুম দোলা', 'ফাগুন বউ', 'টাপুর-টুপুর', 'ইচ্ছে নদী'র মতো একাঝিক জনপ্রিয় সিরিয়ালে অভিনয় করেছেন অভিষেক চট্টোপাধ্যায়। সিনেমায় সেরকম ভাল চরিত্র না পেয়ে অনেকবার প্রতীককেই আক্ষেপ করে বলতেন, "কত ভাল ভাল চরিত্রে অভিনয় করা বাকি থেকে গেল রে প্রতীক। সুযোগই পেলাম না!" আজ অনস্ক্রিন বাবা অভিষেককে শেষযাত্রায় কাঁধও দেবেন 'মোহর'-এর শঙ্খ ওরফে প্রতীক সেন।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

tollywood Pratik Sen Bengali Serial Abhishek Chatterjee Khorkuto Mohor Entertainment News Trina Saha
Advertisment