তিনি অর্জুন, লক্ষ্যে অবিচল। অন্তত, এতদিন ইন্ডাস্ট্রিতে কাটানোর পর তাঁর চয়েস অফ কনটেন্ট দেখে একথা বলতেই হয়। অর্জুন চক্রবর্তী এবার টেলিভিশনের পর্দায় ফিরেছেন অর্জুন হিসেবেই। একসময় জনপ্রিয়তা এসেছিল টেলিভিশনের মাধ্যমেই। স্টার এর গানের ওপারের গোরা মন কেড়েছিলেন সকলের। এবার ফের, একটি মাইলস্টোন, বেঙ্গল টপার অনুরাগের ছোঁয়া ধারাবাহিকের সঙ্গে জুড়েছেন তিনি।
একদম নতুন চরিত্র, যে গল্পের শুরু হয়েছিল অনেক দিন আগে, বাংলার মানুষের কাছে যা সূর্য দীপার আখ্যান নামে পরিচিত, তেমনই একটি জনপ্রিয় সিরিয়ালে কেন? আইডেন্টিটি ক্রাইসিস হয় না? ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার সঙ্গে আড্ডায় রিল এবং রিয়েল অর্জুন চক্রবর্তী।
এতবছর পর সেই পুনর্মুসিকভব, টেলিভিশনে ফেরা... কারণ?
একটা কারণ তো এটাই যে, মানুষের কাছে খুব সহজভাবে পৌঁছে যাওয়া যায়। আর দ্বিতীয় কারণ বলতে পারো, অভিনয়ের চর্চার মধ্যে থাকা। একটা প্রাকটিস হয়। নাহলে তো ওয়েব সিরিজ এবং সিনেমায় অনেকটা গ্যাপ হয়। বসে থাকতে ভাল লাগে না, অভিনয় করতেও ভাল লাগে। তো সব মিলিয়েই এই সিদ্ধান্তে আসা যে হ্যাঁ, টেলিভিশনে ফেরা আবার যুতসই হবে।
বিরাট একটা গ্যাপ টেলিভিশনের সঙ্গে, মনে হয়নি মানুষজন কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেবেন?
আমি না খুব একটা গবেষণা বা কিছু নিয়ে অ্যানালাইসিস এগুলো করি না। তবে, এই যে সোশ্যাল মিডিয়ায় যে পোস্ট করি তাতে প্রচুর মানুষ আমায় এমন বলতেন যে দাদা কবে আবার টিভিতে তোমায় দেখতে পাব। একটা বিরাট দর্শক কিন্তু রয়েছে যারা আমায় টিভিতেই দেখতেন, কিন্তু অন্য কোনও মাধ্যমে দেখতে পারেন না। তারা আমায় খুব ভালবেসেছেন এটাই।
টেলিভিশন আমাদের সকলের জন্য একটা বিরাট মাধ্যম, তোমার টিভি দেখা হয়?
খুব একটা না, আমি একদমই টিভি দেখি না। আমার ঐ বই পড়ে সময় কেটে যায়। OTT খুলে বসে থাকি, চারিপাশে শুনি যে এই সিরিজটা ভাল হয়েছে, এটা নাকি দারুণ হিট। আমার দেখা হয় না। আমি ব্রাউজ করেও চুপচাপ বসে থাকি। তবে, এই সিরিয়ালটির ক্ষেত্রে খুব পজিটিভ রেসপন্স পাচ্ছি। অনেকে, এমনও বলছেন যে দাদা, মাঝখানে দেখা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। তুমি করছ বলে আবার দেখছি।
অনুরাগের ছোঁয়া, ম্যাসিভ হিট.. প্রায় ৫০০ এপিসোড হয়ে গিয়েছে, একারণেই এই সিরিয়ালে ফেরা?
সত্যি বলতে গেলে এই যে সিরিয়ালে আমি জুড়েছি, বা এতদিন ধরে ওরা বেঙ্গল টপার আমার কিন্তু এতে কোনও হাত নেই। আমি যখন বললাম যে টেলিভিশন করব প্রোডাকশনের সঙ্গে আমার খুব ভাল সম্পর্ক। ওদের অনুরোধ আর ফেলতে পারি নি। একটা সিরিয়ালের গল্প দিনের দিন বদলে যায়। সম্পূর্ন গল্পটা জানা তো সম্ভব না। বেসিক একটা জেনে নিলেই হয়। শেষ একমাস কী দেখানো হয়েছে সেটা জেনে নিলেই হয়ে যায়।
চরিত্রর নাম অর্জুন, ফ্লোরে সুবিধা হচ্ছে নিশ্চই?
হ্যাঁ, কোনও অসুবিধা হচ্ছে না। অর্জুন নামে ডাকছে সবাই। আমায় আর কোনও চরিত্রের নাম মনে রাখতে হচ্ছে না। আগে যেমন ঈশান নামটা মনে রাখতে হয়েছিল। এমনকি মানুষের মধ্যেও। আমায় তো আগে সবাই জানতো ঈশান নামে। তো, এটার ক্ষেত্রে অসুবিধা হবে না কারওর আশা করি।
অর্জুনের ভূমিকাটা একটু শুনি...
এটা একটু মজার। দীপার স্কুলের সিনিয়ার ছিল একটা মানুষ। সেখানে একটা রি ইউনিয়নে ওদের আবার দেখা হয়। এবার, ও কীভাবে পাশে থাকে সেটা হল আসল কথা। যে ক্রাইসিসের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে দীপা, সেটা থেকে ওকে কতটা বের করে নিয়ে আসতে পারে এটাই এমন একটা চরিত্র। কারণ, ও নেগেটিভিটি দেখতে পারে না।
খুব পপুলার একটা জুটি সূর্য-দীপা, যখন ভাবলে যে এদের মাঝে 'কাবাব মে হাড্ডি' হবে, কেউ সাবধান করেনি? যে আইডেন্টিটি ক্রাইসিস হতে পারে?
না! আসলে এমনটা নয় তো যে আমার জন্য ওদের মধ্যে দ্বন্দ্ব। এটা তো চলছে। সেই কবে থেকে। নানা সমস্যা, নানা শোরগোল চলেই আসছে। আমি তো দেখি এবার বের করতে পারি কিনা এসব থেকে ওকে... ( হাসি )।
অর্জুন চরিত্রটা মজার, কিন্তু বাস্তবের অর্জুন কি একটু ইন্ট্রোভার্ট?
কিছুটা, হ্যাঁ বলতে পারো। আমি একটু কম কথা বলি। তাই বলে কিন্তু আমি ফ্লোরে একদম এমন না। আমি খুব ভাল। রাগী মুখ করে বসে থাকতে পারি না। আসলে, কাজ করতে করতে ইউনিটটা পুরো ফ্যামিলি হয়ে যায়।
লোকজন যে সূর্যকে সরিয়ে দিয়ে অর্জুনকে নিয়ে মাতামাতি করছে এটা কিভাবে দেখছ?
এটা তো, যেমন স্ক্রিপ্ট আসছে তেমন! আমি দেখেছি সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা মন্তব্য। কিন্তু ওই যে যেমন ডিমান্ড আসবে সেটাই করতে হবে।
একটি দৃশ্যে এমন দেখা গিয়েছে যে দীপার বোনের হাতে তুমি চিঠি ধরিয়ে পালিয়েছিলে, বাস্তবে কাউকে পালিয়েছ চিঠি দিয়ে?
( হাসি )... না না! সৌভাগ্য ক্রমে যাকে চিঠি দিয়েছিলাম সেই আমার বউ। আর কোনও সমস্যা আসেনি। আমার জীবন খুব ভাল। খুব শান্তিপূর্ন। নাহলে, অনুরাগের ছোঁয়ার মত যদি জীবন হত, আমি মারা যেতাম। এটা ফিকশনেই ভাল। আমার জীবনটা খুব গোছানো।
তোমার পরে যারা টেলিভিশনে কাজ শুরু করেছে, তাদের কি অর্জুন কোনও টিপস বা কিছু দেয়?
না! আমি খুব অনভিজ্ঞ ( হাসি ).. পরিচালক যা বলবে। এরপরে আমার আর কিছুই বলার নেই। তাঁর অনেক অভিজ্ঞতা। পরিচালক খুশি হলে আমি শান্তিতে বাড়িতে এসে ঘুমাই। পরিচালক যা চাইছেন সেটা যদি আমি সঠিকভাবে করতে পারি, এটা কিন্তু একটা স্টোরি টেলিং এর পার্ট। হ্যাঁ, ইনপুট অবশ্যই দিতে হবে। তবে, নিজের ক্ষেত্রে বাকি কিছু না। কেউ চাইলে কোনও আইডিয়া দিতে পারি। তবে, এখন যারা কাজ করছে তারা অনেক স্মার্ট। সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে কাজ শুরু করছে তো...