/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2021/08/nitish.jpg)
নীতিশ ভরদ্বাজের শ্রীকৃষ্ণ হয়ে ওঠার নেপথ্যের গল্প
বি আর চোপড়ার মহাভারত কী ভীষণ মাত্রায় জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল দর্শকদের মনে, তা সকলেরই জানা। রবিবার সকাল মানেই হুড়মুড়িয়ে দূরদর্শনের সামনে বইপত্র, কাজকর্ম গুটিয়ে সকলেই বসে পরতেন। অসাধারণ চরিত্রায়ণের পাশাপাশি দক্ষ পরিচালনা টেলিভিশনের জগতে এহেন 'মহাভারত' ধারাবাহিক দ্বিতীয়বার আর হওয়ার নয়।
মহাভারতের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা, যাঁকে ছাড়া এই মহাকাব্য একেবারেই অসম্পূর্ণ, তিনি ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। আর শ্রীকৃষ্ণ বললেই সবার প্রথমে চোখের সামনে ভেসে ওঠে নীতীশ ভরদ্বাজের মুখটাই। তবে এই চরিত্রের পিছনে দ্বন্দ্ব সম্পর্কে কী জানেন কি? গতবছর করোনা মহামারীতে পুনরায় মহাভারত সম্প্রচার শুরু হওয়ার পর অভিনেতা নিজেই এই প্রসঙ্গে জানান।
কী বললেন তিনি? নীতীশ জানান,তাঁর নাকি একদমই ইচ্ছে ছিল না শ্রীকৃষ্ণের চরিত্রে অভিনয় করার। প্রথমে তাঁকে পছন্দ করা হয়েছিল বিদূরের চরিত্রের জন্য।যথারীতি পরিচালক এবং প্রযোজকের কথামতোই তিনি পৌঁছে গিয়েছিলেন শেঠ স্টুডিওর সেটে। মেকআপ প্রায় শেষ পর্যায়ে।
তারপরই ঘটে এক আজব কাণ্ড! হঠাৎ শুনতে পান, অভিনেতা বীরেন্দ্র রাজদান নাকি বিদূরের চরিত্রে অভিনয় করছেন! কিছুটা হতবাক হয়ে সোজা চলে যান রবি চোপড়ার কাছে। ওদিকে নির্মাতামশাই সোজা জানিয়ে দেন যে, ২৩-২৪ বছরের একজন ছেলেকে বিদূরের চরিত্র কিছুতেই কাস্ট করা যাবে না। কারণ, কয়েকটা এপিসোডের পরই বিদূর বুড়িয়ে যাবে। আর তখন নীতিশকে মোটেই সেই চরিত্রে মানাবে না। তবে এখানেই শেষ নয়।
এই ঘটনার পর একপ্রকার ভেঙে পড়েন নীতীশ ভরদ্বাজ। তবে নির্মাতা বি আর চোপড়ার আশ্বাস ছিল তার উপর। এরপর নকুল এবং সহদেবের চরিত্রের জন্য নীতিশকে ভাবা হয়। কিন্তু নীতিশও এরপর একগুঁয়ে হয়ে জানান যে, তিনি কাজ করলে অভিমন্যুর চরিত্রেই করবেন। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি। এরপর বহু ভাবনা-চিন্তার পর শ্রীকৃষ্ণের চরিত্রে অভিনয় করার জন্য তাঁর কাছে প্রস্তাব যায়। যদিও এই খবর নীতীশের কাছে পৌঁছতে বেশ দেরি হয়। নীতীশ তখন অন্য শুটিংয়ে ব্যস্ত ছিলেন তারপরে ফিরে এসেও কিছুটা অভিমানেই যোগাযোগ করেননি বি আর চোপড়ার সঙ্গে।
তবে কথায় বলে, রাখে হরি তো মারে কে? বেশ কিছুদিন পরেই নির্মাতার মুখোমুখি হন নীতীশ। জানতে পারেন, শ্রীকৃষ্ণের চরিত্রের মতো একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অভিনয়ের জন্য তাঁকে ভাবা হয়েছে। শুনে তো একপ্রকার হতভম্ব তিনি! অবশেষে চোপড়ার অনুরোধেই স্ক্রিন টেস্ট করতে হাজির হন নীতীশ আর সেখানেই গল্পের শুরু। বছর দুয়েক কী অসাধারণ দক্ষতার সঙ্গে শ্রীকৃষ্ণের চরিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন তা বোধহয় টেলিদর্শকদের আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন