Advertisment
Presenting Partner
Desktop GIF

৭টি ক্লাসিক বাংলা ধারাবাহিক! আবার দেখা গেলে মন্দ হয় না

বেশ কিছু পুরনো বাংলা ধারাবাহিকের পুনঃসম্প্রচার ঘটেছে বিগত কয়েকদিনে। তালিকায় রইল এমন কয়েকটির কথা যেগুলি ফিরে এলে ভালই লাগবে দর্শকের।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Tero Parbon Bahanno Episode Janmobhumi serial 7 old treasures of Bengali Television

বাঁদিকে 'মহাপ্রভু' ধারাবাহিকে যিশু সেনগুপ্ত, ডানদিকে 'জন্মভূমি' ধারাবাহিকের একটি দৃশ্যে একগুচ্ছ তারকারা (সৌজন্যে: ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়)

লকডাউন উঠে গেলেও এক্ষুণি শুটিং শুরু হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। ইন্ডাস্ট্রির অভ্যন্তরের কানাঘুষো অনুযায়ী, লকডাউন ওঠার পরেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও বেশ কিছুদিন সময় লাগবে। তার পরেই এরাজ্যে শুটিংয়ের অনুমতি মিলবে। শুটিং যদি না হয়, তবে পুরনো ধারাবাহিকের সম্প্রচার অব্যাহত রাখতে হবে। বাংলা টেলিভিশনের ইতিহাসে এমন কিছু ধারাবাহিক রয়েছে যা শুধুমাত্র কাল্ট নয়, মাইলস্টোন প্রযোজনা বলা যায়। এই সময়ে দাঁড়িয়ে সেগুলি আবার যদি টেলিপর্দায় দেখা যেত, তবে মন্দ হতো না।

Advertisment

তেরো পার্বণ

ভারতীয় টেলিভিশনের প্রথম ধারাবাহিক ছিল 'হমলোগ'। সেটা ১৯৮৪ সাল। আর বাংলা দূরদর্শন-এর প্রথম ধারাবাহিক ছিল বাংলা গল্পবিচিত্রা যা শুরু হয়েছিল গৌতম ঘোষের হাত ধরে। 'তেরো পার্বণ' ছিল বাংলা টেলিভিশনের তৃতীয় ফিকশন ধারাবাহিক যার সম্প্রচার হয় ১৯৮৭ সালে। জোছন দস্তিদার পরিচালিত এই ধারাবাহিকটি বাংলা টেলিভিশনের ইতিহাসে একটি নতুন যুগের সূচনা। এই ধারাবাহিক দিয়েই বহু তারকার জন্ম হয়। সব্যসাচী চক্রবর্তী, খেয়ালী দস্তিদার থেকে ইন্দ্রাণী হালদার প্রত্যেকেরই অভিনয় জীবনের সূচনা এই ধারাবাহিক থেকেই। গল্প, চিত্রনাট্য, অভিনয় সব দিক দিয়েই 'তেরো পার্বণ' হল বাংলা টেলিভিশনের একটি রত্ন। যদিও ইউটিউবে এই ধারাবাহিকটি দেখা যায়, তবু টিভির পর্দায় আবারও দেখা গেলে ভালই লাগবে দর্শকের।

আরও পড়ুন: শুটিংয়ে মায়ের মতোই যত্নে রাখেন আরকে, আহমেদদা! মাতৃদিবসে তাঁদের কথা বললেন নায়িকারা

আদর্শ হিন্দু হোটেল

বাংলা টেলিভিশনের একটি উজ্জ্বল রত্ন ছিল এই ধারাবাহিকটি। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত এই ধারাবাহিক ছিল আশির দশকের শেষে বাংলা দূরদর্শন-এর একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় কাজ যেখানে মুখ্য চরিত্রে ছিলেন মনোজ মিত্র ও সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়। এত আবেগঘন ছিল এই ধারাবাহিক যে ঘরে ঘরে মানুষ সম্প্রচারের সময় পর্দা থেকে চোখ সরাতেন না। কতটা প্রভাব ফেলেছিল ধারাবাহিকটি তার একটা আঁচ পাওয়া যায় অপর্ণা সেন-এর ছবি 'পারমিতার একদিন'-এর একটি দৃশ্যে।

সেই সময়

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বিখ্যাত উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত এই ধারাবাহিকটি বাংলা টেলিভিশনের কাল্ট কাজগুলির একটি। 'তেরো পার্বণ'-এর মতো এটিও ছিল জোছন দস্তিদার-এর প্রযোজনা সংস্থা সোনেক্স-এর প্রযোজনা। আশি-নব্বই দশকে যাঁরা বড় হয়েছেন, তাঁদের অনেকেরই হয়তো এই সিরিয়ালের টাইটেল মিউজিকটি এখনও কানে বাজে। জোছন দস্তিদার, খেয়ালী দস্তিদার, চন্দ্রা দস্তিদার, সঞ্জয় হালদার, অরিন্দম গঙ্গোপাধ্যায় প্রমুখ বাঘা অভিনেতারা ছিলেন কাস্ট তালিকায়।

বাহান্ন এপিসোড

Tero Parbon Bahanno Episode Janmobhumi serial 7 old treasures of Bengali Television ঋতুপর্ণ ঘোষের ছবি ফেসবুক ফ্যানপেজ থেকে সংগৃহীত।

বাংলা টেলিভিশনের ইতিহাসে এই ধারাবাহিকটি ছিল একটি মাইলস্টোন প্রযোজনা। ওই সময়ে অন্যান্য যে ধারাবাহিকগুলি ছিল, গুণগত মানে সেগুলির থেকে অনেক উপরে তো ছিলই, পাশাপাশি নব্বই দশকে এই ধারাবাহিকটি বাংলা টেলিভিশনের ফিকশন অনুষ্ঠানে একটা নতুন ল্যাঙ্গোয়েজ তৈরি করে। আর সেটা সম্ভব হয়েছিল কারণ বাহান্ন এপিসোড-এর গল্প, চিত্রনাট্য ও পরিচালনা ছিল ঋতুপর্ণ ঘোষের। ঠিক যেমন ঊনিশে এপ্রিল, বাংলা সিনেমায় একটা নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে, টেলিভিশনের ক্ষেত্রেও বাহান্ন এপিসোড-এর অবদান তেমনই। এই ধারাবাহিকেরও সম্প্রচার হয়েছিল দূরদর্শনে। মুখ্য চরিত্রে ছিলেন গার্গী রায়চৌধুরী, পল্লবী চট্টোপাধ্যায় ও সুমন্ত মুখোপাধ্যায়।

হুতুমের নকশা

এটি ছিল একটি এপিসোডিক সিরিজ যা সম্প্রচার হয় দূরদর্শনে, নব্বই দশকে। খুব বেশি আলোচিত না হলেও, বাংলা টেলিভিশনের অন্যতম সেরা কাজগুলির একটি কারণ সিরিজের পরিচালক ছিলেন তপন সিংহ। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, নির্মলকুমার, মনোজ মিত্র, রবি ঘোষের মতো বাঘা অভিনেতাদের নিয়ে তৈরি এই ধারাবাহিকটি ছিল একটি ডিটেকটিভ সিরিজ। প্রত্যেক এপিসোডেই রহস্য একটা ছিল ঠিকই কিন্তু মানবিক মূল্যবোধের কথা বলাই ছিল মূল লক্ষ্য।

মহাপ্রভু

নব্বই দশকের শেষের দিকে বাংলা টেলিভিশনের দুটি পিরিয়ড ধারাবাহিক অসম্ভব জনপ্রিয় হয়। তার মধ্যে একটি ছিল 'রাজেশ্বরী' ও অন্যটি ছিল 'মহাপ্রভু'। প্রথমটি ছিল রানি রাসমণি-র জীবন অবলম্বনে ও দ্বিতীয়টি শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু-র জীবন অবলম্বনে নির্মিত। রানি রাসমণি-র জীবনের পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা আবারও ফিরে পেয়েছেন দর্শক সাম্প্রতিক 'করুণাময়ী রাণী রাসমণি'-তে। কিন্তু সত্যি বলতে কী, মহাপ্রভুর জীবন নিয়ে তৈরি সাম্প্রতিককালে নির্মিত ধারাবাহিকটি কখনোই ছুঁতে পারেনি নব্বইয়ের 'মহাপ্রভু'-কে। যিশু সেনগুপ্তের মহাপ্রভু রূপ এখনও নব্বইয়ের টেলিভিশন দর্শকের মনে গেঁথে রয়েছে। দেবাংশু সেনগুপ্ত পরিচালিত এই ধারাবাহিকটি আবারও দেখা গেলে মন্দ হয় না।

জন্মভূমি

মিলেনিয়ামের দোড়গোড়ায় দাঁড়িয়ে বাঙালি যে ধারাবাহিকটি টানা কয়েক বছর ধরে দেখেছিল, তা হল 'জন্মভূমি'। ১৯৯৭ সালে শুরু হয় ধারাবাহিক যা ২০০২ সাল পর্যন্ত চলে। কেন্দ্রীয় চরিত্রে ছিলেন রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। আজকের বাংলার বহু প্রতিষ্ঠিত অভিনেতা-অভিনেত্রীর লঞ্চপ্যাড ছিল এই ধারাবাহিক। ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়, দেবলীনা দত্ত, সুমন বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, সোমা চক্রবর্তী, মৌসুমি চক্রবর্তী অনেকেরই কেরিয়ারে একটা বড় ধাপ ছিল 'জন্মভূমি'। ইন্দর সেন পরিচালিত এই ধারাবাহিকটিরও সম্প্রচার হয়েছিল ডিডি বাংলা-তে। নতুন মিলেনিয়ামে ধারাবাহিকের মেকিং, দর্শকের পছন্দ অনেকটাই বদলে গিয়েছিল। সেই সেতুর কাজটি করেছিল অনেকটাই এই ধারাবাহিক।

Bengali Serial Bengali Television
Advertisment