ভোটের বাজারে এখন তারকা মুখের ছড়াছড়ি। অভিনেতারা এখন নেতাও বটে! একুশের বিধানসভা নির্বাচনে পদ্ম কিংবা ঘাসফুল শিবির, দুই দলের তরফেই ‘স্টার-স্ট্র্যাটেজি’ তুঙ্গে! উল্লেখ্য, বাংলার বিধানসভা ভোটের ইতিহাসে সম্ভবত এত তারকাপ্রার্থীর সমাহার রাজ্যবাসী এর আগে দেখেনি। আসন্ন নির্বাচনের আগে যে বিনোদুনিয়ার সঙ্গে রাজনৈতিক ময়দানের এরকম একটা ‘মাখো-মাখো’ সমীকরণ হতে চলেছে, তা আগেই আন্দাজ করা গিয়েছিল। এভাবে ‘মুড়ি-মুড়কি’র মতো তারকাদের রাজনীতির ময়দানে পদার্পণের বিষয়টি নিয়েই এবার মুখ খুললেন বারাসতের বিদায়ী বিধায়ক তথা অভিনেতা চিরঞ্জিৎ (Chiranjeet)। নিত্যদিন কেন এভাবে রাজনীতির ময়দানে নাম লেখাচ্ছেন সেলেবরা? তৃণমূলের (TMC) তারকা প্রার্থীর সাফ উত্তর, "ইন্ডাস্ট্রিতে সিনেমা-সিরিয়ালের অবস্থা খুব খারাপ। তাই বিকল্প পেশা হিসেবে রাজনীতিকেই বেছে নিচ্ছেন অভিনেতা-অভিনেত্রীরা।"
চিরঞ্জিতের কথায়, ইন্ডাস্ট্রিতে যদি বেশি কাজ থাকত, তাহলে হয়তো রাজনীতির ময়দানে আসতেন না তারকারা। ভোটের বাজারে টলিউড তারকারা যেভাবে হঠাৎ করে রাজনীতির ময়দানে এতটা সক্রিয় হয়ে উঠেছেন, তা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতেও কম চর্চা হচ্ছেন না। নেটজনতাদের কথায়, যাঁরা পলিটিকসের অ-আ-ক-খ জানেন না, তাঁরা কীভাবে রাজ্য় চালাবেন? প্রশ্ন অমূলক নয়। কারণ, রাজনীতিতে হাতেখড়ি হওয়া মাত্রই এবার অনেকে টিকিট পেয়ে গিয়েছেন। সেই তালিকায়, লাভলি মৈত্র, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, কাঞ্চন মল্লিক, সায়নী ঘোষ, রাজ চক্রবর্তী, জুন মালিয়ার মতো অনেকেই রয়েছেন। উল্লেখ্য, রাজ-জুনকে এর আগে তৃণমূলের হয়ে প্রচার করতে দেখা গেলেও সংশ্লিষ্ট তারকার অনেকেই একেবারে নতুন। সেই প্রেক্ষিতেই আম-জনতার একাংশের মত, "তারকারা সবাই তো রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত, ইন্ডাস্ট্রিতে এবার নতুন মুখ দরকার।" ওদিকে বিজেপির (BJP) তরফে এখনও পর্যন্ত একজনই তারকাপ্রার্থী- হিরণ। খড়গপুর থেকে লড়বেন তিনি।
তা হঠাৎ করে রূপোলি পর্দার তারকাদের এহেন রাজনীতি-যোগ কেন? এপ্রসঙ্গে চিরঞ্জিতের সপাট উত্তর, "হিন্দি ইন্ড্রাস্ট্রিতে যাওয়ার জন্য় বিজেপি। আর বাকিরা তৃণমূলে।" এপ্রেক্ষিতে তিনি যে কটাক্ষই করেছেন, তা বোধহয় আর আলাদা করে উল্লেখ করার প্রয়োজন পড়ে না। পাশাপাশি এও বলেন যে, বাংলার সিনেমার অবস্থা বর্তমানে খুব খারাপ। ছবি হচ্ছে না। সিনেমাহলগুলিও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে একের পর এক। করোনার জন্য অনুষ্ঠানও নেই। সেই কারণেই বিকল্প পেশা হিসেবে রাজনীতিতে আসছেন অভিনেতারা। এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। চিরঞ্জিতের মন্তব্যে স্বাভাবিকবশতই শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
তা ভোটের বাজারে সবুজ-গেরুয়া উভয় শিবিরই যখন কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে নারাজ, তখন সেই প্রেক্ষিতে এবারের বিধানসভা নির্বাচনে (West Bengal Assembly Election 2021) 'স্টার ফ্যাক্টর' কতটা প্রভাব ফেলে? এখন সেটাই দেখার।