রাজ্য-রাজনীতিতে দলবদলের হাওয়ায় হপ্তাখানেক টালবাহানার পর নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছিলেন যে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে (West Bengal Assembly Election 2021) তিনি তৃণমূলের হয়েই ভোটে লড়বেন। বিধানসভা কেন্দ্র সেই বারাসত (Barasat)। সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র থেকেই পর পর ২ বছর বিপুল ভোটে জিতে বিধায়ক হয়েছেন- ২০১১ এবং ২০১৬ সালে। অতঃপর একুশের ভোট রণক্ষেত্রেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বারাসত কেন্দ্র থেকে আস্থা রেখেছেন তাঁর পুরনো সৈনিক চিরঞ্জিতের উপরই। সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে শিয়রেই ভোট। তার আগেই নির্বাচন কমিশনের কাছে হলফনামা দিয়ে সম্পত্তির বিবরণ জানিয়েছেন চিরঞ্জিৎ (Chiranjeet)। যেখানে কিনা ব্যাঙ্কে গচ্ছিত কোটি টাকার সঙ্গে উল্লেখ রয়েছে বহুমূল্য ফ্ল্যাট-গয়নারও।
হলফনামায় উল্লেখ, ২০১৯-’২০ আর্থিক বর্ষে বারাসতের বিধায়ক চিরঞ্জিতের উপার্জন ছিল ৩৪ লক্ষ ৬১ হাজার ৯৪০ টাকা। তাঁর স্ত্রী রত্নাবলীর উপার্জন ৬ লক্ষ ৪৮ হাজার ৯০০ টাকা। বর্তমানে চিরঞ্জিতের হাতে নগদ ৩৮ হাজার ৯৯ টাকা ৯০ পয়সা আছে। অন্যদিকে স্ত্রীয়ের কাছে আছে সাড়ে ১০ হাজার টাকা।
এছাড়াও একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চিরঞ্জিতের নামে গচ্ছিত রয়েছে যথাক্রমে ৩ কোটি ৭১ লক্ষ ৫ হাজার ৪৬৯ টাকা, ২২ লক্ষ ৬৩ হাজার ৪৯৯ টাকা, ৩৭ হাজার ২০৭ টাকা ৬ পয়সা, ২ লক্ষ ১০ হাজার ৭৫২ টাকা ১৭ পয়সা, ২ লক্ষ ৩৩ হাজার ২৫ টাকা ৬৪ পয়সা এবং ৩ লক্ষ ৩১ হাজার ৮৩৭ টাকা। স্ত্রী রত্নাবলীর নামেও রয়েছে একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। যেগুলিতে জমা রয়েছে ৬৮ হাজার ৫৯৯ টাকা ৮৬ পয়সা, ৩০ হাজার ৯৬ টাকা ৮ পয়সা, ২৮ হাজার ১০২ টাকা, ৫ লক্ষ টাকা, ১০ লক্ষ টাকা এবং ৩৮ লক্ষ টাকা।
শেয়ারবাজারেও বিনিয়োগ করেছেন অভিনেতা-বিধায়ক। যে বিনিয়োগের পরিমাণ ৮ লক্ষ ২০ হাজার টাকা, সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা এবং ১৫ লক্ষ টাকা। ৭ লক্ষ টাকা, দেড় লক্ষ টাকা এবং ২ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ রয়েছে তাঁর স্ত্রীর-ও। এনএসএস কিংবা ডাকঘরে সঞ্চয় প্রকল্পে চিরঞ্জিৎ বিনিয়োগ করেছেন ২ লক্ষ টাকা। এক্ষেত্রে তাঁর স্ত্রীর বিনিয়োগের পরিমাণ বেশি- ১ লক্ষ ৩২ হাজার টাকা, ৮০ হাজার টাকা এবং সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা।
হলফনামায় তাঁর একটি বাড়ির কথা উল্লেখ করেছেন চিরঞ্জিৎ। টালিগঞ্জে ডক্টর মেঘনাদ সাহা সরণিতে ওই ফ্ল্যাটের বর্তমান বাজারদর প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা। এছাড়াও একটি মাহিন্দ্রা স্করপিয়ো গাড়ি রয়েছে বারাসতের তৃণমূল (TMC) প্রার্থীর। যেটি কিনা ২০১৯ সালে কিনেছিলেন ১৩ লক্ষ ১৫ হাজার ১৯০ টাকা দিয়ে। তারই ৮ লক্ষ ৫৭ হাজার ৩৮৫ টাকার ঋণ চলছে এখনও ব্যাঙ্কে। হলফনামায় মূল উপার্জনের উল্লেখ রয়েছে বিধায়ক হিসেবে প্রাপ্ত বেতন এবং অভিনয় সূত্রে পাওয়া পারিশ্রমিক। স্ত্রী গৃহবধূ।
অন্যান্য মহার্ঘ্য জিনিসের মধ্যে চিরঞ্জিতের কাছে রয়েছে সোনার গয়না। নেকলেস এবং দু’টি আংটি। স্ত্রীর কাছে রয়েছে একটি সোনার চেন, মঙ্গলসূত্র, তিন জোড়া কানের দুল, ৩টি বালা, ২ জোড়া চূড়, ১০ জোড়া চুড়ি এবং ১ জোড়া বাউটি-সহ বেশ কিছু গয়না।