রাজ্যে পাঁচ দফার ভোটগ্রহণ (West Bengal Assembly Election 2021) শেষ। আগামীকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার, ২২ এপ্রিল ষষ্ঠ দফায় চার জেলার মোট ৪৩টি কেন্দ্রে নির্বাচনপ্রক্রিয়া হবে। উল্লেখ্য, সংশ্লিষ্ট দফার প্রার্থীতালিকায় তারকামুখের তুলনায় সবুজ-গেরুয়া দুই প্রতিপক্ষ শিবিরের ডাকসাইটে নেতাদেরই ভীড় অপেক্ষাকৃত বেশি। আগামীকাল ভোটবাক্সে পদ্ম শিবিরের কোনও তারকাপ্রার্থীর ভাগ্যগণনার লড়াই নেই, তবে তৃণমূলের দুই তারকাপ্রার্থী রাজ চক্রবর্তী এবং কৌশানী মুখোপাধ্যায় কঠিন লড়াইয়ের সম্মুখীন।
অর্জুন সিং (Arjun Singh)-গড়ের পালে বিজেপির হাওয়া। যেখানে কিনা তৃণমূলের তুরুপের তাস রাজ চক্রবর্তী (Raj Chakraborty)। ব্যারাকপুরের তৃণমূল পদপ্রার্থী হয়েই অর্জুনকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। তাঁর দখলদারিত্বের নাগপাশ থেকে ব্যারাকপুরকে মুক্ত করার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছিলেন রাজ। তবে প্রথমটায় দলের অন্দরেই উঠেছিল তাঁর প্রার্থী হওয়া নিয়ে আপত্তি। ঘাসফুল শিবিরের স্থানীয় নেতাদের অনেকেই বলতে শুরু করেছিলেন, "ঢাল নেই, তরোয়াল নেই, একা নিধিরাম সর্দারের মতো রাজ চক্রবর্তী ব্যারাকপুর কেন্দ্র জেতাবেন তৃণমূলকে!” এখানেই শেষ নয়, ‘দিদির প্রিয় পাত্র’ টলিউড পরিচালককে ‘বহিরাগত’ বলেও বিঁধেছিলেন ব্যারাকপুরের তৃণমূলেরই একাংশ। কিন্তু দিন দুয়েক পরেই অভিমানের মেঘ কেটে ‘বহিরাগত’ ক্ষোভ-অধ্যায় অতীত হয়েছিল। এরপর চুটিয়ে ভোটপ্রচার করেছেন রাজ চক্রবর্তী। আগামীকাল রাজ্যের ষষ্ঠ দফা নির্বাচনে অর্জুন-পিচে তাঁর অগ্নিপরীক্ষা।
ব্যারাকপুরে রাজের প্রতিপক্ষ বিজেপি (BJP) প্রার্থী চন্দ্রমণি শুক্লা (Chandramani Shukla)। মাস খানেক আগেই যাঁর ছেলে খুন হয়েছেন। সেই ‘মণীশ শুক্লা হত্যাকাণ্ডে’র আবেগও ব্যারাকপুরের (Barrackpore) আসন জিততে পদ্ম শিবিরের হাতিয়ার হতে পারে। কিন্তু প্রথমবার বিধানসভা নির্বাচনী প্রার্থী হয়েও সম্মুখ সমরে নির্ভীক রাজ চক্রবর্তী। অর্জুন-গড়ের আসন জিততে একশো শতাংশ আত্মবিশ্বাসীও বটে হালিশহর, কাঁচরাপাড়ার ‘ভূমিপুত্র’।
অন্যদিকে নদিয়ার কৃষ্ণনগর (Krishnanagar) উত্তর আসনে এবার তৃণমূলের প্রার্থী অভিনেত্রী কৌশানী মুখোপাধ্যায় (Koushani Mukherjee)। প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি-র সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি তথা ডাকসাইটে নেতা মুকুল রায়। প্রথমটায় কৌশানীর পালে হাওয়া ভাল থাকলেও প্রচারের শেষদিকে এক ভাইরাল ভিডিও ঘিরে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। তাতে যদিও আমল দিতে নারাজ তৃণমূলের অভিনেত্রী প্রার্থী। কারণ, একদা তৃণমূলের (TMC) দুঁদে সংগঠক মুকুলের উদ্দেশে কৌশানীর সপাট উত্তর, উনি কোনওদিন ভোটে জেতেননি, তাই কঠিন লড়াই কিংবা কোনওরকম চ্যালেঞ্জ তিনি দেখতে পাচ্ছেন না! অবশ্য ভাল সংগঠক হলেও ভোটের ময়দানে যদিও মুকুল রায় (Mukul Roy) ততটা পরীক্ষিত নন। কারণ, ২০০১ সালে জগদ্দল কেন্দ্রে ভোটে দাঁড়িয়ে হারতে হয়েছিল তাঁকে। এবার দীর্ঘ ২০ বছর পর ফের ভোটে লড়ছেন তিনি। তবে এই যাত্রায় মোদির বঙ্গ-সেনাপতি হয়ে। কৌশানী বনাম মুকুলের লড়াইয়ে কৃষ্ণনগরে শেষ হাসি কে হাসবে? উত্তর মিলবে ২মের নির্বাচনী মার্কশিটেই। তবে, তৃণমূলের নবাগত দুই তারকা প্রার্থীর জেতাকে মোটেই চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে না রাজ্যের শাসক দল।