মুখে কালো মাস্ক। গলায় কালো স্কার্ফ। হাতে রং-তুলি। গান্ধীমূর্তির পাদদেশেই হুইলচেয়ার নিয়ে ধরনায় বসলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। মুখে কোনও কথা নেই। নিশ্চুপ, থমথমে পরিবেশ। একমনে ক্যানভাসে এঁকে চলেছেন। সেনার অনুমতি ছাড়াই এমন পদক্ষেপ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। তৃণমূল (TMC) দলনেত্রীর বিরুদ্ধে এর জন্যে আইনি পদক্ষেপও হতে পারে, কিন্তু তাতে কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই! প্রিয় 'দিদি'র এমন প্রতিবাদে নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে এবার কটাক্ষবাণ ছুঁড়লেন তৃণমূলপ্রার্থী রাজ চক্রবর্তী (Raj Chakraborty)। বললেন, 'গণতন্ত্রের কালো দিন'।
ব্যারাকপুরের (Barrackpore) তৃণমূল প্রার্থী রাজ চক্রবর্তীর মন্তব্য, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিবাদী প্রশ্নের যখন কোনও উত্তর থাকে না, তখন বিজেপি এভাবে আটকানো ছাড়া আর কী-ই বা করতে পারে! এধরণের অগণতান্ত্রিক পদক্ষেপের জন্য ধিক্কার নির্বাচন কমিশনকে।" তৃণমূলপ্রার্থীর মতে, গণতন্ত্রকে খর্ব করা হচ্ছে। সেই প্রেক্ষিতেই মমতার উপর নির্বাচন কমিশনের নিষেধাজ্ঞা জারি করাকে ‘গণতন্ত্রের কালো দিন’ হিসেবে দেখছেন রাজ।
প্রসঙ্গত, প্ররোচনামূলক মন্তব্য করে আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এমন দাবি তুলেই ২৪ ঘণ্টা তৃণমূল (TMC) সুপ্রিমোর নির্বাচনী প্রচারে নিষেধাজ্ঞার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নির্বাচন কমিশনের (EC) তরফে। সোমবার রাত ৮ টা থেকে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত প্রচার করতে পারবেন না তৃণমূলনেত্রী। যার প্রতিবাদে ইতিমধ্যেই রাজপথে ধরণায় বসেছেন মমতা। সেই ছবি শেয়ার করেই এবার প্রতিবাদে গর্জে উঠলেন রাজ চক্রবর্তী।
প্রসঙ্গত, রাজ চক্রবর্তীর আগে তৃণমূলের তারকা সাংসদ নুসরত জাহানও (Nusrat Jahan) প্রতিবাদ করেছেন। তাঁর মন্তব্য, “এটাই বিজেপির (BJP) আসল পরিবর্তন! আপনারা প্রকাশ্যে শীতলকুচি-কাণ্ডের মতো আরও গণহত্যার হুমকি দিতে পারেন, আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি সরকারের ক্ষমতায়নে কেন্দ্রীয় বাহিনির এহেন কাজের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালেই, তাঁর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হল! নির্বাচন কমিশনকে ধিক্কার।” রাজের গলাতেও শোনা গেল সেই একই সুর।
প্রসঙ্গত, গত ৩ এপ্রিল তারকেশ্বরের জনসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার্তা দিয়েছিলেন, "সংখ্যালঘু ভাই-বোনেদের কাছে হাতজোড় করে একটা কথা বলব, “ওই শয়তান ছেলেটা বিজেপির টাকা নিয়ে বেরিয়েছে। ওর কথা শুনে সংখ্যালঘু ভোট ভাগ করবেন না। ও সাম্প্রদায়িক কথা বলে। বিজেপি টাকা নিয়ে বেরিয়েছে যাতে সংখ্যালঘু ভোট ভাগ হয়ে যায়। মনে রাখবেন, বিজেপি আসলে দুর্ভোগ আপনাদের বেশি, এটা মাথায় রাখবেন।” তৃণমূল সুপ্রিমোর এমন মন্তব্যের মধ্যেই উসকানির গন্ধ পেয়েছে কমিশন। যার জেরে তাঁর নির্বাচনী প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এপ্রসঙ্গে মমতার ব্যাখা যদিও, “ধর্মীয় উসকানি দিতে চাইনি। আমি হিন্দু ভাই-বোনেদের বলেছি, হিন্দু-মুসলিম বিভাজন করবেন না।” তবে এতে কমিশনের কাছে চিঁড়ে ভেজেনি! সেই প্রেক্ষিতেই ক্ষুব্ধ ব্যারাকপুরের তৃণমূলপ্রার্থী রাজ চক্রবর্তী।