"তৃণমূলের বিধায়ক, ওঁর ছবি আটকান…", বিস্ফোরক রাজনৈতিক চক্রান্তের কথা ফাঁস করলেন রাজ্যের শাসক দলের বিধায়ক তথা অভিনেতা-প্রযোজক সোহম চক্রবর্তী। আর সেই ষড়যন্ত্রের নেপথ্যেই প্রযোজক হিসেবে বড়সড় লোকসানের মুখে পড়ার আশঙ্কায় টলিপাড়ার নেতা-অভিনেতা।
১০ ফেব্রুয়ারি অর্তাৎ শুক্রবার মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল LSD ওরফে ‘লাল স্যুটকেসটা দেখেছেন’ ছবিটার। তবে সেন্সর বোর্ডের গড়িমসিতে রিলিজের মাত্র ২৪ ঘণ্টা আগে ছাড়পত্র হাতে পেয়েছেন তিনি। অতঃপর শেষমুহূর্তে এসে হলের স্লট পেতে গিয়ে এখন বেগ পেতে হচ্ছে সোহম চক্রবর্তীকে। উল্লেখ্য, এই ছবিতে রয়েছেন সায়নী ঘোষও। যিনি কিনা বর্তমানে তৃণমূলের যুবনেত্রী। সেই প্রেক্ষিতেই কি সেন্সর বোর্ডের কাঁচিতে পড়তে হল সোহম-সায়নীর LSD-কে? প্রশ্নে তোলপাড় টলিপাড়া থেকে রাজনৈতিক মহলের অন্দর।
এপ্রসঙ্গে সেন্সর বোর্ডের রাজনীতি নিয়ে বিস্ফোরক সোহম। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে তিনি জানান, "ছবিটা সেন্সরে পাঠানোর পর বোর্ডের এক কর্তা বিভিন্নরকম প্রশ্ন তোলেন। আপত্তি জানান। যেটা আমার খুব অযৌক্তিক বলে মনে হয়েছে। সিনেমায় রাধে-রাধে কিংবা কৃষ্ণের নাম করা যাবে না। এছাড়াও LSD-তে রূপম ইসলামের গাওয়া একটা গানে হ্যালুসিনেশন, ওভারডোজ শব্দগুলো নিয়ে আপত্তি তোলা হয়। যাঁরা গানটা দেখেছেন কিংবা সিনেমা মুক্তির পর যাঁরা দেখবেন, তাঁরাই দেখে বলুক যে, এখানে কোথাও সমাজবিরোধী বার্তা রয়েছে কিনা!"
<আরও পড়ুন: ‘সিনেমায় কমলা রং দেখানো যাবে না, রাধে-রাধে বলা পাপ!’, সেন্সরে আটকে গেল সোহম-সায়নীর LSD?>
এখানেই শেষ নয়, সোহম চক্রবর্তী জানান যে, "LSD ছবি নিয়ে আপত্তি তোলা সেন্সর বোর্ডের ওই সদস্য তাচ্ছিল্যের সুরে এও বলেন-যে, 'ইন্ডাস্ট্রির ঠেকা নিয়ে রাখিনি!' ইন্ডাস্ট্রির প্রতি দায়বদ্ধতা নেই, এমন লোক সেন্সর বোর্ডে বসে কী করে? ফোন করে এও নির্দেশ দেওয়া হয় যে, সোহম চক্রবর্তী তৃণমূলের বিধায়ক। ওঁর সিনেমা আটকে দেওয়া হোক।”
‘লাল স্যুটকেসটা দেখেছেন’ প্রযোজক সোহম আরও ক্ষুব্ধ হন এই সিনেমাকে 'A' সার্টিফিকেট দেওয়ার জন্য। বিধায়ক, অভিনেতার কথায়, "২৪ ঘণ্টা আগে ছাড়পত্র আসায় এমনিতেই নন্দন পাব না। অন্যান্য হলেও স্লট ঘাঁটছে। আর এই A সার্টিফিকেট দেওয়ায় স্টার থিয়েটারও হাতছাড়া হল। কারণ সেখানে A ক্যাটাগরির ছবি চলে না।" অতঃপর সোহম যে সিনেমার বক্সঅফিস ব্যবসা নিয়ে লোকসানের আশঙ্কায় তা বলাই বাহুল্য। অভিনেতা জানিয়েছেন, "ডিস্ট্রিবিউটারদের সঙ্গে কথা হয়েছে। সিনেমাটা রিলিজ করলেও শেষমুহূর্তে হল না পাওয়ায় ব্যবসায়িক ক্ষতি হবে অনেকটা।" বৃহস্পতিবার বিকেলেই প্রেসক্লাবে এই বিষয়ে দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষকে নিয়ে বৈঠক করেন সোহম-সায়নীরা।