ঝুরঝুরে বাড়ি। কটা বাঁশের কঞ্চি, ত্রিপল আর মাটি লেপা দেওয়ালের উপর মাথা তুলেই দাড়িয়ে রয়েছে সেই ভিটে। যার একমাত্র কর্ত্রী পান্তি পিসি। বুলবুল, আম্ফান বিভিন্ন সময়ে ঝড়ের দাপটে এক-এক করে ক্ষয়ে গিয়েছে সেই বাড়ির বিভিন্ন অংশ। উড়ে গিয়েছে বাড়ির চালও। গত একবছর ধরে ত্রিপল টাঙিয়েই দাঁতে দাঁত চেপে সেই ভিটের ভিতর থেকে লড়াই করে চলেছেন এলাকার বহুল পরিচিত পান্তি পিসি। সরকারি সাহায্যের জন্য বারবার হাত পেতেও লাভ হয়নি কোনও। জুতোর শুকতলা খুঁইয়েও মেলেনি সমাধান। তবুও জেদে অনড়। ভাঙা ভিটেই বুকে আগলে রেখেছেন পান্তি পিসি। তার উপর এখন সাইক্লোন 'ইয়াস' (Cyclone Yass)-এর কথা ভেবে তাঁর রাতের ঘুম উড়েছে। আশঙ্কায় দিন গুনছেন দাসপুর (Daspur) সোনামুই গ্রামের পান্তি। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই দুস্থ একাকী মহিলার সমস্যার কথা জানতে পেরেই এগিয়ে এলেন তৃণমূল সাংসদ দীপক অধিকারী ওরফে দেব (Dev)।
পশ্চিম মেদিনীপুরের (Midnapur) ঘাটাল (Ghatal) কেন্দ্রের দাসপুর ২ ব্লকের সোনামুই গ্রামের বাসিন্দা পান্তি পিসি ওরফে শিখা চক্রবর্তী। টুইটারে স্থানীয় এক সংবাদসংস্থার মাধ্যমেই তাঁর দুর্দশার খবর ভাইরাল হয়। জনৈক নেটাগরিক সাংসদ-অভিনেতা দেবের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য তাঁকেও ট্যাগ করে সাহায্য প্রার্থনা করেন। চোখে পড়ামাত্রই বিন্দুমাত্র দেরি করেননি দেব। সাতসকালেই প্রতিনিধিকে ফোন করে খোঁজখবর নিয়েছেন। শুধু তাই নয়, সাইক্লোন 'ইয়াস'-এর আগে যাতে দাসপুরের পান্তি পিসি সুরক্ষিত থাকেন সেই বন্দোবস্তও করে দিয়েছেন তৃণমূলের (TMC) তারকা সাংসদ।
সাংসদ দেবের ফোন পেয়েই সকাল সকাল তাঁর প্রতিনিধি রামপদ মান্না দাসপুরে গিয়ে শিখাদেবীর সঙ্গে দেখা করে আসেন। শুধু তাই নয়, দেবের পাঠানো অত্যাবশকীয় খাবার সামগ্রী এবং আর্থিক অনুদানও তাঁর হাতে তুলে দেন। পাশাপাশি, বাড়ি গড়ে দেওয়ার আশ্বাসও দেওয়া হয় দুস্থ ওই মহিলাকে।
পাশাপাশি এই ঘূর্ণীঝড়ের সময়ে অস্থায়ীভাবে পান্তিপিসির থাকার বন্দোবস্তও করে দিয়েছেন ঘাটালের সাংসদ দেব। তবে শিখাদেবী সেখানে যেতে নারাজ। জানিয়েছেন, প্রতিবেশীর বাড়িতে বসেই সাইক্লোন 'ইয়াস'-এর মোকাবিলা করতে দেখবেন নিজের ঝুরঝুরে মাটির ভিটেকে। তৃণমূলের সাংসদ-অভিনেতার তরফে পান্তি পিসিকে আশ্বাস দেওয়া হয় যে তাঁর নিজের ভিটেতেই নতুন করে বাড়ি তৈরি করে দেবেন তিনি।