"নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) সক্রিয় নেতৃত্বদানের কথা ভাবছেন? দুঃখিত খুঁজে পাবেন না," প্রধানমন্ত্রীকে ফের বাক্যবাণে বিঁধলেন তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহান (Nusrat Jahan)। দেশে বেকারত্বের হার যেভাবে উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেই প্রসঙ্গেই এবার তীব্র শ্লেষাত্মক মন্তব্যে কেন্দ্রীয় সরকারকে কটাক্ষ করলেন সাংসদ-অভিনেত্রী। নরেন্দ্র মোদীর ‘অতি সক্রিয় নেতৃত্ব’ যেমন উধাও হয়ে গিয়েছে, তেমনই বিজেপির আইটি সেলের মুখপাত্র অমিত মালব্য মানবিকতার পথে একটি সমস্যাদায়ক উপাদান হয়ে দাঁড়িয়েছে, বলছেন নুসরত।
সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যমের সমীক্ষায় উঠে এসেছে যে, গতবছর ডিসেম্বর অবধি পশ্চিমবঙ্গে বেকারত্বের হার অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে, তবে সেই প্রেক্ষিতে কেন্দ্রে বেকারত্বের হার তুলনামূলক অনেকটা বেশি। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের যুবক-যুবতীদের হা-পিত্যেশ করতে হচ্ছে চাকরির জন্য। সেই বিষয়েই কেন্দ্রের শাসকদলকে বিঁধেছেন বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদ। বিজেপির তরফে মমতা সরকারের প্রত্যেকটি পদক্ষেপ নিয়েই সমালোচনা করা হয়। উল্লেখ্য, সামনেই একুশের বিধানসভা নির্বাচন। গেরুয়া শিবিরের চোখ একেবারে বাংলার উপর। যার জেরে তৃণমূলের প্রতিটি কর্মসূচী নিয়েই গেরুয়া শিবির কটাক্ষ করতে ছাড়ে না। তার জেরেই এবার সম্ভবত দেশের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গে বেকারত্বের হার হ্রাস পাওয়ায় মোদীকে ছেড়ে কথা বললেন না নুসরত জাহান।
কোনওরকম রেয়াত না করেই তৃণমূলের সাংসদ-অভিনেত্রী নুসরতের মন্তব্য, "প্রধানমন্ত্রীর অতি সক্রিয় নেতৃত্বের খোঁজ করছেন? দুঃখিত, তা তো কোথাও নজরে পড়ছে না! শ্রী অমিত মালব্য, যিনি কি না মানবিকতার নামে সমস্যাদায়ক উপাদান, মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁর নাম ধরে আক্রমণ করেন, তিনি কি এই তথ্য জেনে অবাক হচ্ছেন! আপনার জ্ঞাতার্থে বলে রাখি, সক্রিয় নেতৃত্বদান কিন্তু একেই বলে!"
আসলে এই অতিমারী আবহে দেশজুড়ে বহু মানুষ কাজ হারিয়েছেন। উপরন্তু সাড়ে তিন মাস লকডাউনের জেরে অর্থনৈতিক পরিকাঠামোও ধুঁকছে। নেই কর্মসংস্থান। কাজ খুইয়ে ফাঁকা পকেট। রোজগারহীন যুবক-যুবতীদের হন্যে হয়ে ঘুরতে হচ্ছে নতুন কাজ পাওয়ার আশায়। বহুজাতিক সংস্থা থেকে ছাঁটাই হওয়ার পর রাস্তায় ফল-সবজি বিক্রি করতে বসেছেন, এমন উদাহরণও অনেক রয়েছে।
গতবছর দ্য ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন এবং দ্য এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক-এই দুই সংস্থার এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। দেখা গিয়েছে, এই অতিমারী পরিস্থিতিতে দেশে রেকর্ড হারে বৃদ্ধি পেয়েছে বেকারত্বের সংখ্যা। যুবপ্রজন্মের প্রায় ৪১ লক্ষ মানুষ কাজ হারিয়েছেন। যার ফলে তরুণ প্রজন্ম হতাশা, অবসাদের শিকারও হচ্ছে। এককথায়, পরিস্থিতি যথেষ্ট ‘অ্যালার্মিং’! আর অতিমারী আবহে দেশের যুবপ্রজন্মের এই দুর্দশাই ভাবিয়ে তুলেছে সাংসদ নুসরত জাহানকে। যার জেরে সোশ্যাল মিডিয়ায় যাবতীয় ক্ষোভ তিনি উগরে দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদির উপর।