টলমল পরিস্থিতি আর নেই। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জল্পনা অতীত। দিল্লি যাওয়ার কথা বললেও ভোটের আগে তৃণমূলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বপদ পেয়ে শতাব্দী রায় (Satabdi Roy) এখন বেজায় সক্রিয়। সেই প্রেক্ষিতে পুরুলিয়ার হুটমোড়ার সভা থেকেই বীরভূমের তিন বারের তারকা সাংসদ শতাব্দী রায় হুংকার ছাড়লেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সুযোগ দিচ্ছেন, ভোট না দিলে কিন্তু বেইমানি হবে।" একেবারে দলনেত্রীর পথ অনুসরণ করেই এদিন বিরোধী শিবিরের উদ্দেশে তোপ দাগেন সাংসদ।
একুশের বিধানসভা নির্বাচন আসন্ন। তার আগেই ঘাস ফুল বনাম পদ্মের নির্বাচনী প্রচার লড়াই তুঙ্গে। শাসক-বিরোধী দলের আক্রমণ ঝাঁজালো হচ্ছে ক্রমশ। সেই প্রেক্ষিতেই পুরুলিয়ার সভায় আসন্ন নির্বাচনে তৃণমূলকে ভোট দিয়ে জয়ী করার কথা বলে বিজেপিকে বিঁধলেন শতাব্দী। পুরুলিয়ার প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে রাজ্য সরকার জল, আলো, বিদ্যুতের মতো অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা পৌঁছে দিয়েছে। এছাড়াও গোটা বাংলার মানুষদের জন্য মমতা সরকারের অভিনব উদ্যোগ স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের সুবিধার কথাও সভামঞ্চ থেকেই আরও একবার মনে করিয়ে দিলেন বীরভূমের সাংসদ।
কোনওরকম রেয়াত না করেই বিজেপির উদ্দেশে বাক্যবাণ ছোটালেন। বললেন, "ক্ষমতায় আসার আগেই গেরুয়া শিবিরের নেতা-কর্মীরা 'মস্তানি' করছে। বিজেপি যেটা করছে, সেটা কার্যত ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতি ছাড়া আর কিছুই নয়।" তাই বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় বিজেপি জিতলে যে রাজ্যে ধর্মীয় হানাহানির সংখ্যা আরও বাড়বে, তা বোধহয় আর আলাদা করে বলার প্রয়োজন পড়ে না। এই প্রেক্ষিতে খানিক সংশয়জনক সুরই শোনা গেল শতাব্দীর কণ্ঠে। তাই সোনার বাংলা গড়ার ক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করার বার্তা দিয়েছেন শতাব্দী রায়।
সম্প্রতি তাঁর বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জল্পনা শোনা গেলেও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের পর সেই সমস্যা মিটে যায়। সেই বৈঠকের পরই তৃণমূলে থাকার কথা দিয়েছেন শতাব্দী। উপরন্তু তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতির দায়িত্বপদ এখন তাঁর কাঁধে। আর তাই বড়সড় দায়িত্ব পাওয়ার পরই দলীয় সংগঠনকে আরও মজবুত করার কাজে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছেন শতাব্দী রায়, রাজনৈতিক মহলের একাংশ কিন্তু সেকথাই বলছে।