একুশের বিধানসভা নির্বাচনে ব্যারাকপুর কেন্দ্র বেজায় গুরুত্বপূর্ণ, তাই তৃণমূলের তরফে হেভিওয়েট কোনও প্রার্থীকেই দরকার ছিল। সেক্ষেত্রে ‘দিদি’ ভরসা রেখেছেন পরিচালক রাজ চক্রবর্তীর (Raj Chakraborty) উপর। তিনিই ঘাসফুল শিবিরের হয়ে লড়বেন অর্জুন-গড় ব্যারাকপুর কেন্দ্র থেকে। গুরুদায়িত্ব পেয়ে ইতিমধ্যেই আদা-জল খেয়ে ময়দানে নেমে পড়েছেন টলিউড পরিচালক। রাজনীতির ময়দানে নতুন, তাই অ-আ-ক-খ শেখাটা মাস্ট! অতঃপর দলের অগ্রজ ডেরেক’ও ব্রায়েনের কাছে রাজনীতির পাঠ নেওয়াও শুরু করেছেন। তৃণমূল সুপ্রিমোর ভরসার পাত্র তিনি। অতঃপর টিকিট পেয়েই ব্যারাকপুরের ডাকসাইটে নেতা অর্জুন সিং-কে কড়া হুঁশিয়ারি ছুঁড়লেন রাজ চক্রবর্তী। তাঁর সাফ কথা, "ব্যারাকপুরে আর কারও দখলদারিত্ব চলবে না। মেনে নেব না।"
একদা তৃণমূল নেতা অর্জুন সিং (Arjun Singh) গত লোকসভা ভোটের সময় দল পাল্টে গেরুয়া মন্ত্রে দীক্ষিত হয়েছেন। বলা ভাল, ফুল-বদলের রাজনীতির সূত্রপাতটা তাঁকে দিয়েই হয়েছিল বছর দুয়েক আগে। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তাঁর পদাঙ্কই অনুসরণ করেছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, শুভেন্দু অধিকারী থেকে শুরু করে বৈশালি ডালমিয়াদের মতো তৃণমূলের তাবড় নেতারা। ব্যারাকপুর যে অর্জুন সিংয়ের খাস তালুক, তা বোধহয় আর আলাদা করে বলার প্রয়োজন পড়ে না। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের অলিতে-গলিতে অর্জুনের অঙ্গুলি হেলনই যথেষ্ট। এবার সেই কেন্দ্র থেকেই তৃণমূলের (TMC) হয়ে লড়ছেন রাজ চক্রবর্তী। যিনি কিনা জন্মসূত্রে কাঁচড়াপাড়ার এবং যাঁর বড় হয়ে ওঠা হালিশহরে। সেই প্রেক্ষিতেই নিজেকে ব্যারাকপুরের 'ভূমিপুত্র' হিসেবে দাবি করেছেন রাজ। তাই টিকিট পেয়েই অর্জুন-বাহিনীকে 'চ্যালেঞ্জ' ছুঁড়ে দিয়েছেন সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া মমতা-ঘনিষ্ঠ সিনে-পরিচালক।
বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করার ছাড়পত্র পেয়েই ব্যারাকপুরের উপর থেকে 'অর্জুন সিংয়ের খাসতালুক' তকমা মুছতে মরিয়া রাজ চক্রবর্তী। তাঁর কথায়, "খাসতালুক বিষয়টি আর মেনে নেওয়া যাবে না। আর কারও দখলদারিতে থাকবেন না ব্যারাকপুরের মানুষজন। সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের মানুষেরা যাঁকে চাইবেন, তিনিই ভোটে জিতে আসবেন। এতদিন ব্যারাকপুরে উন্নতির নামে অন্যায় শোষণ চলেছে। এলাকার উন্নয়নের আশায় যাঁদের ভোট দিয়ে আমজনতা জিতিয়ে এনেছিলেন, তাঁরাই দল বদলে অত্যাচার চালিয়েছেন।" সেই প্রেক্ষিতেই এবার সেখানকার স্থানীয় মানুষদের শান্তিপূর্ণ, সুন্দর, সুস্থ পরিবেশ ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেন রাজ।
পরিচালকের কথায়, "এযাবৎকাল ব্যারাকপুরের মানুষদের ধরে কীভাবে চোখ রাঙিয়ে, ধমকিয়ে-চমকিয়ে, ভয় দেখিয়ে, পেশির জোরে দাবিয়ে রাখা হত, সেটাও দেখেছি।" নিজের কেন্দ্রের অলি-গলি সম্পর্কে ভালই ওয়াকিবহল রাজ। এবার শুধু 'দিদির-দূত' হয়ে ময়দানে নির্বাচনী প্রচারে নামার অপেক্ষায় রয়েছেন তিনি। কথা দিয়েছেন, ব্যারাকপুরের মানুষদের অভাব-অভিযোগ শুনতে তাঁদের দুয়ারে দুয়ারে পৌঁছে যাবেন তিনি। আর কারও দখলদারিত্ব মেনে নেবেন না।