অচলাবস্থা কাটছেই না টলিপাড়া। গতকাল পরিচালকরা জানিয়েছিলেন, আজ, সোমবার সকাল থেকে তাঁরা শুটিং করবেন না। সিনেমার পাশাপশি সিরিয়ালের পরিচালকরাও তাতে সম্মতি জানান। প্রায় ২০০ জন পরিচালক রয়েছেন একজোট হয়ে।
প্রযোজকদের তরফে চ্যানেল কর্তৃপক্ষের কাছে যে চিঠি গিয়েছে তাতে এটাই জানানো হয়েছে, আজ থেকে হবে না শুটিং। সেই চিঠিতে লেখা, ইস্টার্ন ইন্ডিয়া ডিরেক্টর অ্যাসোসিয়েশনের তরফে জানানো হয়েছে, FCTWEI-এর সঙ্গে বাকবিতণ্ডা এবং পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে ফেডারেশনের সঙ্গে যে বাদানুবাদ ঘটেছে, সেই কারণেই পরিচালকদের অনুপস্থিতির কারণে আমরা আগামীকাল থেকে শুটিং করতে পারব না। আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আমরাও অনেক লোকসানের মধ্যে দিয়ে যাব এই বিষয়ে। আশা করছি, আপনারা অনেকটাই সহযোগিতা করবেন।
এদিকে, টলিপাড়ায় শুটিং অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ। এহেন অবস্থা আগে বাংলা ইন্ডাস্ট্রির বুকে হয়েছে কিনা সেই নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। ২৭ তারিখ রাহুল মুখোপাধ্যায়ের একটি ছবির শুটিং এ ফেডারেশনের টেকনিশিয়ানরা অনুপস্থিত থাকার জেরে বিঘ্নিত হয় কাজ। ফলে, সেখানে পরিচালক থেকে কলাকুশলী সকলেই বেশ অপমানিত হন। পরিচালকরা একজোট হয়ে জানিয়েছেন...
"গতকাল ২৭ জুলাই রাহুল মুখার্জির পরিচালনায়, একটি বাংলা ছবির শ্যুটিং টেকনিশিয়ান স্টুডিওতে ছিল। ফেডারেশনের আওতা ভুক্ত টেকনিশিয়ান রা সেই শ্যুটিংয়ে উপস্থিত হননি, ফলত শ্যুটিং করাই যায় না এবং ওখানে উপস্থিত পরিচালক, অভিনয় শিল্পী সকলে চূড়ান্ত অপমানিত হন। এই মর্মে অন্যান্য অনেক পরিচালক ওখানে উপস্থিত হয়ে যে বিবৃতি দেন, তার সূত্র ধরে আমরা প্রস্তাব করতে চাই যে, যতক্ষণ না রাহুল মুখার্জিকে পরিচালক হিসেবে মেনে নিয়ে ফেডারেশনের কলাকুশলীরা শ্যুটিং করতে রাজি হচ্ছেন, ততক্ষণ আমরা পরিচালকরা আগামীকাল ( ২৯ শে জুলাই,২০২৪ সোমবার) থেকে মীমাংসা না হওয়া পর্যন্ত অসহযোগিতায় যেতে বাধ্য হচ্ছি। কারণ আমরা মনে করি ফেডারেশন একটি সমগ্র ইন্ডাস্ট্রির একচ্ছত্র নিয়ামক সংস্থা হতে পারে না। ভুল ভ্রান্তি সমস্যা যাই হয়ে থাক, তার সুষ্ঠু সমাধান না করে কাউকে জোর করে কর্ম বিরতি নিতে বাধ্য করা অসাংবিধানিক। বিশেষত, ভুল বোঝাবুঝি বুঝে আমাদের ডিরেক্টরস গিল্ড রাহুল মুখার্জির উপর আরোপিত কর্ম বিরতি প্রত্যাহার করে নেওয়ার পরেও যেভাবে বাকি গিল্ডের টেকনিশিয়ানরা অসহযোগিতা করতে চালিত হয়েছেন, তা শুধু রাহুলের জন্য নয়, আমাদের প্রত্যেক পরিচালকের জন্য অপমানজনক এবং ক্ষতিকারক। আমাদের এই সিদ্ধান্তের ফলস্বরূপ আগামীতে যদি মাধ্যম নির্বিশেষে কোনও পরিচালক কোনওরকম সমস্যার মুখে পড়েন, তার পাশে সমস্ত পরিচালকরা দাঁড়াবেন, সেই অঙ্গীকারও আমরা করছি।"
গতকাল একটি বৈঠকে সিনিয়র পরিচালকদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে জানানো হয়েছিল, রাহুলকে পরিচালকদের একজন বলে যদি মেনে না নেওয়া হয়, বা কাজ না করা হয়, তবে তারা অসহযোগিতা করতে বাধ্য হবেন। এবং আজ সকাল থেকে ঠিক তাই দৃশ্য।
টলিপাড়ার নানা শুটিং ফ্লোর ফাঁকা। সোমবার যেখানে পুরোদমে শুটিং হওয়ার কথা, সেখানে এই শুনশান দৃশ্য। পরিচালকদের তরফে এই চিঠিতে সই করেছেন রাজ চক্রবর্তী থেকে, কৌশিক গাঙ্গুলি, শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, মানসী সিনহা, অনীক দত্ত অনেকেই।