তুনিশা শর্মার মৃত্যু রহস্য ক্রমশ মাত্রা ছাড়িয়েছে। গতকাল তাঁর শেষকৃত্যের সময় শোক সামলাতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়েন তাঁর মা। মাত্র বছর ২০ এর এক ফুটফুটে মেয়েকে হঠাৎ করেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে দেখেই যেন অবাক সকলে। শিজানের সঙ্গে প্রেম তারপরেই আচমকা ছন্দপতন। এবার মেয়েদের হয়ে লড়াইয়ের হুঙ্কার দিলেন কঙ্গনা রানাউত।
তুনিশা শর্মার মৃত্যুর পর থেকেই শিজানের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছিলেন অভিনেত্রীর মা। শুধু তাই নয়, তাঁকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। অভিযোগ উঠেছিল, দিন ১৫ আগেই ব্রেক আপ হয়েছিল তাঁদের। যারপর থেকেই মনমরা হয়ে থাকতেন তুনিশা। এমনও শোনা গিয়েছিল, তুনিশার সঙ্গে সম্পর্কে থাকাকালীন আরেকজনের সঙ্গেও প্রেমের বাঁধনে জড়িয়েছিলেন শিজান। যদিও এই অভিযোগ মিথ্যে বলেই জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু মেয়েদের একরকম হেনস্থা করা হচ্ছে, তাঁদের মন এবং প্রাণ নিয়ে ছেলেখেলা করা হচ্ছে - গর্জে উঠলেন কঙ্গনা। বললেন ...
"একাধিক মেয়েদের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানো একরকমের অপরাধ হওয়া উচিত। কোনও বৈধ কারণ ছাড়াই সম্পর্কে শেষ করা হোক কিংবা শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হওয়া হোক.. এরপর একজন মেয়ের মানসিক সুস্থতার দায়িত্ব না নিয়ে শুধু যৌন শোষণ করাও অপরাধ হওয়া উচিত। আমাদের মেয়েদের রক্ষা করা, যত্ন নেওয়া সরকারের দায়িত্ব। এটা এমন একটা দেশ যেখানে মেয়েরা সুরক্ষিত নয় বরং তারা ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে"। এরপরেই তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ট্যাগ করে উল্লেখ করেন, "যেমন কৃষ্ণ দ্রৌপদীর জন্য লড়েছিল, রাম সীতামায়ের জন্য ঠিক তেমনই বহুবিবাহ এবং এধরনের ঘটনার বিরুদ্ধে কঠোর আইন করুন। মহিলাদের অ্যাসিড হামলা, তাঁদের টুকরো টুকরো করে কেটে ফেলা এগুলোর মৃত্যুদণ্ড ছাড়া আর কোনও শাস্তি হতে পারে না"।
নারীসুরক্ষায় এক বিরাট বার্তা দিয়েছেন কঙ্গনা। সঙ্গে তুনিশার উদ্দেশ্যেও লিখেছেন বেশ কিছু কথা। প্রেমে বিচ্ছেদের পরেই তাঁর মৃত্যু, প্রশ্ন উঠছে আত্মহত্যা নাকি খুন? সিনে ওয়ার্কার্স এর প্রেসিডেন্ট জানিয়েছিলেন, বেশ সন্দেহ হচ্ছে তাঁর। SIT গঠনের আবেদন জানিয়েছিলেন তাঁরা। কঙ্গনা তুনিশার মানসিক অবস্থা আন্দাজ করেই বললেন...
"একজন মেয়ে সব সহ্য করতে পারে, বিচ্ছেদ - ভাঙন সবকিছু। কিন্তু সে এটা কখনই মেনে নিতে পারে না যে তাঁর প্রেমে আসলে ভালবাসা ছিল না। অন্য কোনও ব্যক্তির কারণে তাতে ব্যাঘাত ঘটেছে। এই সত্যতা জানার পর থেকেই তাঁর বাস্তবতায় আঘাত লাগতে থাকে। নিজেকে বিকৃত করতে শুরু করে। যে সময় একটা ভালবাসা সুন্দর মুহূর্তে পরিণত হয়েছিল ঠিক সেই সময় হাজার স্বপ্ন, ভালবাসা একটা নৃশংস রূপ নেয়। সে বুঝতে পারে না যে কি করবে আর কি করবে না। তাঁর কোনও বোধবুদ্ধি তখন কাজ করে না। জেনে রাখুন, এই কাজ মেয়েটি একা করেনি এটা আসলে একটি হত্যাকাণ্ড"।
তুনিশার মৃত্যুর পর থেকেই মন খারাপ সিনে দুনিয়ার অনেকেরই। হাসিখুশি মেয়েটির পরিণতি যে এতটা খারাপ হতে পারে যেন মানতেই পারছেন না অনেকে। বেশ কিছুদিন ধরেই মনের সঙ্গে লড়াই করছিলেন তিনি। শিজানের পারিবারিক সূত্রে খবর, পুলিশের সঙ্গে সবরকম সহযোগিতা করছেন তাঁরা। বাকি সবকিছু ভারতীয় আইন এবং দণ্ডবিধির ওপর নির্ভর করেই হবে।