/indian-express-bangla/media/media_files/2025/08/12/anita-2025-08-12-10-58-02.jpg)
কে এই অভিনেত্রী...
Bollywood: মাত্র ১৬ বছর বয়সে বাবাকে হারিয়ে জীবনের মোড় ঘুরে যায় এই অভিনেত্রীর। পরিবারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিতে তিনি মনোজ কুমারের অফিসে রিসেপশনিস্টের চাকরি নেন। কিন্তু সেই কাজই হয়ে ওঠে তাঁর বিনোদন জগতে প্রবেশের দরজা। একদিন মনোজ কুমারের ছেলে তাঁকে দেখে ফটোশুটের প্রস্তাব দেন, আর সেখান থেকেই শুরু হয় তাঁর অভিনয় যাত্রা। অভিনেত্রী কখনও ভাবেননি যে এত সুযোগ তাঁর সামনে অদ্ভুতভাবে খুলে যাবে। মনে হয়েছিল, যেন ঈশ্বর নিজেই তাঁর গল্প লিখে আনন্দ পাচ্ছেন।
এরপর শুরু হয় অডিশন দেওয়া ও একের পর এক প্রত্যাখ্যানের মুখোমুখি হওয়া। এই সময় তাঁর মা শক্ত ভিত্তির মতো পাশে ছিলেন। কোনও আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ ছাড়াই অডিশনের মাধ্যমে অভিনয়ের খুঁটিনাটি শিখতে থাকেন তিনি। ১৯৯৯ সালে সুভাষ ঘাইয়ের তাল ছবিতে ঐশ্বর্য রাইয়ের সেরা বান্ধবীর চরিত্রে অভিনয় ছিল তাঁর প্রথম সিনেমা। অনিতা পরে এক সাক্ষাৎকারে বলেন-"যদিও কাজটা ছোট ছিল, আমি নিশ্চিত ছিলাম না কেমন হবে। কিন্তু সুভাষ ঘাইজী বলেছিলেন, চিন্তা করার কিছু নেই, তিনি আমাকে সাহায্য করবেন। সেটে আমি শুধু নির্দেশনা মেনে চলেছি, আর সেখান থেকেই আমার যাত্রা শুরু হয়।"
Dev - Shubhashree: 'আমায় মাফ করে দাও..', রাজ - শুভশ্রীর কাছে ক্ষমাপ্রার্থী দেব! কারণ কী?
তাল-এর অভিজ্ঞতার পর অনিতা সুযোগ পান প্রথম টিভি শো কভি সৌতান কভি সহেলি-তে, যা একতা কাপুর প্রযোজনা করেছিলেন। প্রথম অডিশনে দীর্ঘ মনোলোগ মুখস্থ করতে না পেরে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং মাঝপথে সেখান থেকে চলে আসেন। কিন্তু একতা কাপুর ও নিবেদিতা বসু বিশ্বাস করেছিলেন যে অনিতা চরিত্রটির জন্য একদম উপযুক্ত। একতা নিজে তাঁর বাড়িতে স্ক্রিপ্ট নিয়ে যান, তিন দিন সময় দেন মুখস্থ করার জন্য। এবং দ্বিতীয় অডিশনে অনিতা সুযোগ পান।
এরপর তিনি হয়ে ওঠেন ভারতীয় টেলিভিশনের পরিচিত মুখ- 'কাব্যাঞ্জলি', 'কিঁউকিঁ সাস ভি কভি বহু থি', 'ইয়ে হ্যায় মহব্বতে', 'নাগিন ৩' সহ একাধিক জনপ্রিয় সিরিয়ালে অভিনয় করেন। পাশাপাশি তামিল, তেলুগু ও কন্নড় ছবিতেও কাজ করেন। কিন্তু দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রিতে কাস্টিং কাউচ ও শারীরিক গঠনের ভিত্তিতে বৈষম্যের শিকার হয়ে সেখান থেকে সরে আসেন। হিন্দি সিনেমায় তিনি অভিনয় করেন 'কুছ তো হ্যায়', 'কৃষ্ণা কটেজ', 'কোই আপসা' ইত্যাদিতে। কোই আপসা ছবির ব্যর্থতার পর তীব্র হতাশায় ভুগলেও প্রযোজক একতা কাপুর তাঁকে সেই কঠিন সময় পেরোতে সাহায্য করেন।
ব্যক্তিগত জীবনেও ছিল চ্যালেঞ্জ। কাব্যাঞ্জলি শুটিংয়ের সময় সহ-অভিনেতা আইজাজ খানের সঙ্গে প্রেমে জড়ান অনিতা। কিন্তু সম্পর্কটি নিয়ন্ত্রণমূলক হয়ে ওঠায় তিনি সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন। সেরে উঠতে সময় লাগে এক বছরের বেশি। অনিতা সবসময় হাল না ছাড়ার মানসিকতা বজায় রেখেছেন। ২০১৩ সালে রোহিত রেড্ডিকে বিয়ে করেন, তাঁদের এখন চার বছরের ছেলে আরভ। পাঁচ বছরের বিরতির পর ছোটপর্দায় ফিরে আসেন তিনি। মা হওয়ার পর ইন্ডাস্ট্রির পক্ষপাতিত্ব ও বয়সজনিত সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও নিজের পারিশ্রমিক কমিয়ে হলেও কাজের সুযোগ গ্রহণ করেছেন। বর্তমানে তিনি জি টিভির রিয়েলিটি শো 'চোরিয়াঁ চালি গাই'-তে অংশ নিচ্ছেন।