'দিদি চলে গেলেন, সিনেমাতেও দিদি আগে চলে গিয়েছিলেন, আর বাস্তবেও...' পর্দার অপু অর্থাৎ সুবীর বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে যখন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের তরফে যোগাযোগ করা হয়, তখন তিনি একথাই বলেন।
ভারতীয় ছবির সবথেকে সেলিব্রেটেড ভাইবোন এর মুখ যদি কেউ থেকে থাকে তবে, তিনি এবং উমা দাশগুপ্ত। অভিনেতার কাছে যখন জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, যে পথের পাঁচালী থেকে এমন কোনও ঘটনা যা তাঁর মনে আছে? তিনি সোজা সাপটা ভাষায় এটাই জানিয়েছিলেন, পুরো ছবির মাস্টার মাইন্ড একজনই, তিনি সত্যজিৎ রায়। কিন্তু, কোন দৃশ্যটা করতে তাঁদের সবথেকে বেশি কঠিন লেগেছিল?
অভিনেতা জানান, ট্রেন আসার এবং বৃষ্টির দৃশ্যটা করতেই সবথেকে বেশি কষ্ট হয়েছিল। কারণ, সবটাই ন্যাচারাল শট দেওয়ার দরকার ছিল। ট্রেনের দৃশ্য যারা দেখেছেন তারা জানেন এমন আইকনিক দৃশ্য বাংলা ছবিতে একটা নেই। সত্যজিৎ রায় যে সত্যিই মায়েস্ত্র সেকথা পরিষ্কার বোঝা গিয়েছিল এই দৃশ্যে। আজ দিদির মৃত্যুর কথা বলতে গিয়েই তিনি সাফ জানান...
"ওই যে বর্ষার যে দৃশ্যটা ছিল, ঠান্ডা লাগার দৃশ্যটা, সেখানে কিছুতেই বৃষ্টি আসছিল না। আমরা ত্রিপল খাটিয়ে, ছাতা খাটিয়ে বসে ছিলাম, যে কখন বৃষ্টি আসবে। এমনি শট দিলে তো হবে না। এমন দিতে হবে যেন একদম আসল হয়। বৃষ্টি কিছুতেই আসছে না। এখন ওই হয় না, শাওয়ার টাওয়ার নিয়ে, সেটা হত না। সকাল থেকে মনে আছে, বসে বসে সবাই মিলে গল্প করছিলাম।"
উল্লেখ্য, এখানেই শেষ না। দিদির কথা বলতে গিয়ে তিনি আরও জানান, তখন তো বেশ ছোট। তাঁদের মধ্যে ৫ বছরের গ্যাপ ছিল। দিদিকে ভীষণভাবে বিরক্ত করতেন তিনি। তাঁর গায়ে মাটি লাগিয়ে দিতেন, কাঁদা মাখিয়ে দিতেন। কিন্তু, যেসব সময় কাটিয়েছিলেন সেসব আর ফিরে আসেনি, আর ফিরে আসবেও না।