১৩ দিনের আউটডোর, ডেবিউটান্ট পরিচালক, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের প্রযোজনা। সম্পূর্ণ নতুন দুটো মুখ। সব মিলিয়ে 'উড়নচণ্ডী'। ছবির পুরো জার্নিটাতে হার্ট অ্যাটাকের ধাক্কাও সামলেছেন পরিচালক। সামনেই মুক্তি 'উড়নচণ্ডী'-র সমস্ত কাজের ফলাফল প্রকাশিত হবে। রীতিমতো ঘুম থেকে তুলে নিয়ে আড্ডা জমল পরিচালক অভিষেক সাহার সঙ্গে ।
১৯৯৪-এ হোটেল ম্যানেজমেন্ট?
হ্যাঁ, ওটাই ভেবে গিয়েছিলাম। তারপর আর হয়নি আর কি। ১৫ দিনের মাথায় অ্যাডমিড নিয়ে ফেরার কথা ছিল। পাশেই প্রযোজকের বাড়ি ছিল। তার একটা শুটিংও চলছিল ফিল্ম সিটিতে। ব্যাস ওই যে দেখতে গেলাম আজ ছবি বানাচ্ছি (হাসি)।
রান্না করতে ভালবাসেন তার মানে... তা বাসি! কিন্তু এখন আর করা হয় না খুব একটা। সময় থাকে না আর মনটা তো এখন অন্য রান্নাতে।
ডিশটার নাম বোধহয় উড়নচণ্ডী?
অনেকদিনের ইচ্ছে ছিল রাস্তার ওপর একটা গল্প বলব। বরাবরই রাস্তা আমায় টানে। কাউকে চিনিনা জানিনা, ভালো-মন্দ মিশিয়ে একটা রোমাঞ্চ থাকে। উড়নচন্ডীও সেই রাস্তার মানুষগুলোকে নিয়ে তৈরি। সুদীপ তারপর চিত্রনাট্য লিখে দিল, আমি তো লিখতে পারিনা।
প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় প্রযোজনার জন্য রাজি হবেন আশা করেছিলেন?
ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। কারণ আমি তো বুম্বাদা প্রোডিউস করবে বলে যায়নি। সিনিয়র হিসাবে গল্পটা শোনাতে গিয়েছিলাম, উনি গাইড করে দেবেন ঠিক পথে আছি কিনা। বুম্বাদা যখন নিজেই বলল আমিই করব, জাস্ট মনে হলে এই রে! হয় না পরীক্ষা আসছে আসছে হঠাৎ করে দিনটা চলে আসে, তখন বসতেই হয়। আমারও সেই দশা হয়েছিল। প্রযোজক ক্রিয়েটিভ হলে সুবিধে হয়, বুম্বাদার ক্ষেত্রেও তাই।
এই ছবিতে চারটে প্রধান চরিত্র...
(মাঝপথে শুধরে দিয়ে) লরিও কিন্তু একটা চরিত্র। ওটা ছাড়া তো ছবিটা বুনতেই পারতাম না।
একদিকে ডেবিউটান্ট, অন্যদিকে চিত্রা সেন, সুদীপ্তা চক্রবর্তীর মতো দুঁদে অভিনেত্রীরা ব্যালেন্সটা সামলালেন তো!
আমার ১৬-১৭ বছরের বম্বেতে কাজের অভিজ্ঞতা শিখেয়েছে কাজের সময় সবাই সমান, সিনিয়র-জুনিয়ার তো থাকবেই কিন্তু সবারইকে তাদের সম্মানটা দিতে হবে। তাহলে প্রত্যেকে তার রির্টানটা দেবে। আর বাচ্চা দুটোকে (রাজনন্দিনী-অমর্ত্য) তো সুদীপ্তাই সামলেছে। শুটিংয়ে আসার আগে ওরা তৈরি, আমাকে কিছু করতেই হয়নি।
প্রথম ছবিতেই সুদীপ্তা চক্রবর্তীকে কাস্ট করলেন, সমালোচনার ভয় মনে আসেনি?
ও তো একটু খুঁতখুঁতে বেশি, তাই প্রথম থেকেই ছবিটাকে দর্শক হিসাবে দেখেছে। আপনি যেটা বলেলন সেটা প্রথম থেকেই মাথায় ছিল। সুদীপ্তা প্রথম থেকেই ধন্দে ছিল, বুম্বাদা ওকে রাজি করিয়েছে। বলেছিল, ছবিটা থেকে যাবে, কথাগুলো নয়। আর তুই যদি না করিস অন্য বিন্দিকে (ছবিতে সুদীপ্তার চরিত্র) খুঁজে এনে দে। দু-তিনদিন সময় নে, শেষমেষ কাউকে না পেয়ে নিজেই কাজটা করেছে।
সামনেই মুক্তি উড়নচণ্ডীর। টেনশন হচ্ছে?
প্রথম টেনশেন ছিল বুম্বাদাকে খুশি করতে পারব তো? পরিচালক সমেত মুখ্য চরিত্ররা ডেবিউ করছে। যে কারও জন্য এটা ঝুঁকি, তাই দাদা যাতে গর্বিত হন যে এই ছবিটা উনি প্রেজেন্ট করছেন। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় যে সিন্ধান্তটা ভুল নেননি সেটা প্রমাণ করতে হবে আমাকে।
প্রযোজক খুশি?
হ্যাঁ! ওনার ছবিটা ভাল লেগেছে। আমার টিমটা বুম্বাদা খুব ভাল সাজিয়ে দিয়েছিল - সৌমিক হালদার (সিনেমাটোগ্রাফার) সে তার জায়গায় স্টার, তন্ময় চক্রবর্তী (আর্ট ডিরেক্টর), সুজয় দত্ত (সম্পাদনা), সঙ্গীতে দেবুদা (দেবজ্যোতি মিশ্র)। প্রত্যেকে ভীষণ পজিটিভলি কাজটা করেছে। সবাই উড়নচণ্ডী হয়ে কাজ করেছে (হাসি)। দেখুন, রান্না করেছি, এবার খেয়ে দর্শকরা বলবেন কেমন হয়েছে।