একই সঙ্গে নতুন ধারাবাহিক, তারপর আবার চুটিয়ে রাজনীতির প্রমোশন। উষশী চক্রবর্তী এখন খুব ব্যস্ত। একেই নতুন চরিত্র। তারপর, আবার সেই অনিন্দ্যদার সঙ্গেই তিনি জুটি বাঁধছেন। এতকিছুর মাঝে প্রচার করছেন সৃজন ভট্টাচার্যের সঙ্গে। সবকিছু নিয়েই ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার সঙ্গে খোলামেলা আড্ডায় অভিনেত্রী।
এই ধারাবাহিকে কি খলনায়িকা- ই নাকি ভীষণ মিষ্টি একটা চরিত্রে?
হাসি .. নানা, খানিকটা নেগেটিভ। সবাই তো সেরকমই দেখতে চায়।
উষসীর নামের সঙ্গে কি খলনায়িকা শব্দটা জড়িয়ে যাচ্ছে?
ওরকম একটা লিড চরিত্র মানে জুন আন্টি করার পর মানুষ তো সেটা বলবেই। কিন্তু সেদিক থেকে বিচার করতে গেলে তোমাদের রানীর চরিত্রটা আমার কাছে পজেটিভ ছিল। আসলে, আমি বিচার করি না। যেটা ভাল লাগে সেটাই করি।
অনেকে তো তোমায় ভাল চরিত্রে নিতে পারেন না, এটা কি নৈতিক জয়?
আমি না এত ভাবি না জানো। সত্যি বলতে গেলে যখন কোনও চরিত্র আসে, আমি যদি মনে করি তাতে কিছু দেওয়ার রয়েছে, চেষ্টা করি। আসলে পজেটিভ নেগেটিভ বিষয়টা খুব অদ্ভুত। সব মানুষের মধ্যেই দুটি চরিত্র রয়েছে। অনেক সময় দেখা যায় যে মানুষটাকে আমরা নেগেটিভ ভাবি সেই হয়তো পজেটিভ। আমার এই বাইনারি বিষয়টায় আপত্তি আছে।
সুদীপদার সঙ্গে আবারও একটা কাজ, অনুভূতি কেন?
আমার তো খুব ভাল লাগছে। আমরা খুব হিট জুটি। এখনও মানুষ অনিন্দ্য দা, আর জুন আন্টিকে মিস করে। আর ডাকটা কি স্পেসিফিক না, অনিন্দ্য দা সঙ্গে জুন আন্টি।
এবারও কি ওরকম কিছু থাকবে? মুখ ব্যাঁকিয়ে কিছু...
আমাকে দিয়ে কেউ কিছু করায় নি জানো। আমি কিন্তু, স্পন্টেনিয়াস ভাবে সবটা করেছি। একটা চরিত্র দেখে যদি আমার ওরকম মনে হয়, যে কিছু একটা করা দরকার। তাহলে আমি করব। আস্তে আস্তে যদি একটা ম্যানারিজম তৈরি হয়। আমি জেনে বুঝে কিন্তু করি না। চলে আসে আপনা আপনি।
লীনাদির লেখা এমন একটা চরিত্র যদি কোনোদিন উষসীর থেকে আলাদা হয়?
আলাদা তো। আমি নানা ধরনের চরিত্র করতাম। কোনও সিরিয়ালে আমায় ক্লাস চার পাশ একটা অশিক্ষিতের ভূমিকায় দেখা গিয়েছে। আর ধরো এই যে জুন আন্টি, ওটা তো আমি না। আমার থেকে একেবারেই আলাদা।
সিরিয়ালে ফিরছ তারপর আবার লোকসভা নির্বাচন! সৃজন দার হয়ে প্রচার - সামলে উঠছ কী করে?
হ্যাঁ, সেই চাপ তো রয়েছেই। কিন্তু এখন একটা মাস একটু কম করব। যেহেতু নতুন সিরিয়াল। সামনের মাসটা আবার করব।
সৃজনদা কি খুব কাছের মানুষ? নাকি যাদবপুরের সঙ্গে তোমার একটা অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক...
প্রথম কথা হল, মতাদর্শ। দ্বিতীয় কথা হল প্রার্থী। সৃজন আমার পারিবারিক বন্ধু। আমি ওকে জন্ম থেকে চিনি। কিন্তু, মতাদর্শের আগে কিছুই না। আমার মনে হয় পশ্চিমবাংলায় সবথেকে যোগ্য একজন প্রার্থী হল সৃজন। বামেরা যে লড়াইয়ে ফিরছে তাতে কিন্তু সৃজন বেশ চেনা মুখ। মীনাক্ষী, শতরুপ, কিংবা দীপ্সিতা এদের কিন্তু খুব যোগ্যতা রয়েছে। এরা কিন্তু লিডার জাতীয়। পারিবারিক ভাবে ওরা বামপন্থী। ও ভীষণ ভাল।
সৃজন দা জিতবে, সায়নী ঘোষের বিরুদ্ধে?
একেবারেই চান্স আছে। আমার তো মনে হয় জিতবে। আসলে, বামপন্থীদের লড়াইটা আসলে সবসময়ের জন্য।
বাবার সূত্রেই তো তোমার বামপন্থী মনোভাব?
না না, বাবার সূত্রে না। এটা আমার নিজের সূত্রে। আমার কোনও চাপ ছিল না। মতাদর্শ ম্যাটার করে। চাপিয়ে দেওয়া বিষয়টা অর্গানিক না। সেটা থাকে না। ভেতর থেকে আসতে হয়।
তারকা প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছে হয়নি কোনোদিন, তুমি তো দারুণ জনপ্রিয়?
এখন তো ব্যস্ত আছি। ভবিষ্যতে দেখব। আমি মনে করি রাজনীতি করতে গেলে দু নৌকায় পা দিয়ে চললে হয় না। সেটা আরও সিরিয়াস ভাবে করতে হয়। এবার, বলতে গেলে আমরা চাইলেই কিন্তু প্রার্থী হতে পারি না। তাঁর জন্য যেটা লাগে সেটা হল দলের অনুমোদন। আর তাঁর সঙ্গে আরেকটা কথা, আমাদের যেটা মতাদর্শ সেটাতে কিন্তু কেবল প্রার্থী হওয়া বা ভোট লড়া সেটাই উদ্দেশ্য না। অন্যান্য ভাবে করা যায়। যেমন আমরা কমিউনিটি কিচেন করেছিলাম।
সৃজনদার জন্য কোনও উপদেশ?
আমি একটা কথাই বলব, নির্বাচনের প্রাক্কালে শুধু না সারাজীবন এবং সারাবছর যেন মানুষের পাশে থাকে। আর হ্যাঁ, নিজের শরীরের যেন খেয়াল রাখে। নির্বাচন তো শুধু নিমিত্ত মাত্র।
সায়নী ঘোষের উদ্দেশ্যে কিছু বলবে?
সায়নী ঘোষ খুব ভাল অভিনেত্রী। আমি কাজ করেছি ওর সঙ্গে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে ওর রাজনীতিটা ভুল। খুব সিরিয়াস ভাবে রাজনীতি করে। ওর মতাদর্শটা ঠিক না। তবে, কিছু পার্থক্য রয়েছে। এখন অনেকটা ম্যাচিওর হয়েছে।
তারকাদের মধ্যে যারা কোনোদিন রাজনীতি করে আসেননি, হঠাৎ করে প্রার্থী - দলীয় অংশ হিসেবে জুড়ে গেলেন, সম্ভব?
রাজনীতি সবাই করতে পারে। তারকা, গ্ল্যামার এটা সত্যিই ম্যাটার করে না। তবে, হ্যাঁ মানুষের পাশে থেকে কাজ করার, তাঁদের দুঃখে সুখে থাকার মতো অভিজ্ঞতা থাকতে হয়। আমি কোনদিন কিছু করলাম না, কিন্তু হঠাৎ করে ভোটের ময়দানে দাঁড়িয়ে পড়লাম, এটা কিন্তু রাজনীতি না। এতে আখেরে কোনও লাভ হয় না। রাজনীতিতে গ্ল্যামার আসা ক্ষতির না। কিন্তু, সারাবছর থাকতে হবে তো। এটা কিন্তু মানুষকে ভুল বোঝানো। সারা ভারতজুড়ে তারকারা রাজনীতি করেন। একদম সঠিকভাবে সিরিয়াসভাবে করেন। কিন্তু, খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে বা নিজেরটা গোছাতে রাজনীতি - এটা ঠিক না।