একুশের বিধানসভা নির্বাচন শিয়রে। অতঃপর নির্বাচনী প্রচার আপাতত তুঙ্গে। তৃণমূব কিংবা বিজেপি, কেউই কাউকে এক ইঞ্চি জমি ছেড়ে দিতে নারাজ। গেরুয়া-সবুজের দ্বন্দ্বে আপাতত সরগরম রাজ্য রাজনীতি। বাংলার জমি যখন ঘাসফুল আর পদ্মফুলের টানাপোড়নে জেরবার, তখন নিজেদের মতো ফের মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে বাম শিবির। লাল দুর্গ প্রতিষ্ঠা করতে তাঁরা বদ্ধ পরিকর। লকডাউনের সময় থেকেই অবশ্য নানারকম সাংগঠনিক কাজ- শ্রমজীবী ক্যান্টিন, রক্তদান শিবির, সস্তায় বাজার, ফ্রি কোচিং ক্লাসের মতো একাধিক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে তাঁরা দুন্দুভি বাজিয়ে ফেলেছেন। আর সেই প্রেক্ষিতেই প্রয়াত বামনেতা শ্যামল চক্রবর্তীর অনুপ্রেরণাকে তাঁরা কাজে লাগাচ্ছেন। বামদলের সমর্থকদের উজ্জীবিত করতে বিদ্যাসাগর আঞ্চলিক কমিটির ভারতীয় ছাত্র ফেডারেশনের তরফে এক প্ল্যাকার্ড জিজাইন করা হয়েছে। যাতে জ্বলজ্বল করছে শ্যামল চক্রবর্তীর ছবি। স্লোগানে লেখা গায়ক দেবদীপ মুখোপাধ্যায়ের গানের লাইন, "প্রিয় বন্ধুকে দিয়ে এসো প্রিয় নাম।" আর বাবার ছবি আঁকা সেই প্ল্যাকার্ড দেখেই স্মৃতিমেদুর অভিনেত্রী উষসী চক্রবর্তী (Ushasie Chakraborty)।
চলতি বছরই বাবাকে হারিয়েছেন তিনি। জীবদ্দশায় বাম দলের হয়ে কর্মীদের সঙ্গে যেভাবে তিনি কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে গিয়েছেন, সেটাই উষসীর কাছে অনুপ্রেরণা। তাই তো ফেসবুক পোস্টে আবেগপ্রবণ অভিনেত্রী লিখেছেন, "বাবা, ছবিটা দেখে বুকটা ধক করে উঠল। আর কটা মাস যদি সময় দিতে। কত আয়োজন ছিল এই মাসে।.... তুমি ছাড়া যা অপূর্ণ থেকে যায় বরাবর...।" বাবার অভাব যেন নতুন করে ঘিরে ধরেছে তাঁকে। বিদ্যাসাগর আঞ্চলিক কমিটির ভারতীয় ছাত্র ফেডারেশনের প্ল্যাকার্ড দেখে শ্যামল চক্রবর্তীর একমাত্র মেয়ে উষসীর মনে ভীড় করেছে কত স্মৃতি।
উষসীর কথায়, "আর তো কটা মাস, অসুস্থ অশক্ত শরীরে যদি টেনে দিতে আমাদের বসবার ঘরে এই সময় কত মজার গল্প হত বল! কত পুরনো দিনের কথা। কেমন করে স্লোগান দেওয়ার সময় মুখ থেকে রক্ত উঠে তুমি সোজা চলে গিয়েছিলে হাসপাতাল। কেমন করে আত্মগোপনে তোমার নাম হয়ে গিয়েছিল সমীর... কেমন করে জেলে বসে তুমি আর বাকি কমরেডরা ভাগ করে নিয়েছিলে বাড়ির পাঠানো পায়েস। কেমন করে অনেক অসাধ্য সাধন করে ছিলে...।" স্মৃতির পাতা থেকে ধার নিয়ে সেসব কথাগুলো তিনি সাজিয়ে ফেলেছেন সোশ্যাল দুনিয়ায়। বাবাকে হারানোক দিন কয়েকের মধ্যেই ফিরেছিলেন কাজে। সিরিয়ালের সেটে। কারণ, বাবা শ্যামল চক্রবর্তীই তো শিখিয়ে গিয়েছিলেন যে, "দ্য শো মাস্ট গো অন..!"