প্রয়াত উস্তাদ জাকির হোসেন। কিংবদন্তি তবলা বাদকের মৃত্যু নিয়ে গতকাল থেকেই জলঘোলা হয়েছিল। সন্ধ্যে হতেই জানা গিয়েছিল তিনি আইসিইউতে। তারপর রাতে জানা গেল, শিল্পীর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু তখনও পরিবারের তরফে জানানো হয়, না অত্যন্ত সংকটজনক তিনি। এবং রয়েছেন ভেন্টিলেশনে।
তারপর থেকেই, আরও উদ্বিগ্ন ছিলেন তাঁর শ্রোতারা। আজ সকাল হতেই জানা যায় তিনি না ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছেন। শিল্পীর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গোটা দেশ এবং শিল্পীরা। এমন একজন মানুষ যার তবলা কথা বলতো, সেই মানুষটার বোল আজ থেমে গিয়েছে। ভারত হারিয়েছে তাঁর রিদম মায়েস্ট্রকে। যেন খসে পড়ল আরেকটা নক্ষত্র। আর শিল্পীর বেশ কিছু ভিডিও সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল।
একটি ভিডিও, যেটা মন কেড়ে নিতে পারে সকলের। একজন শিল্পী যিনি আল্লা রাখার সন্তান, তাঁর পরেও যিনি ইসলাম ধর্মাবলম্বী, তিনি যখন জন্মেছিলেন তাঁর বাবা কী করেছিলেন জানা আছে? শিল্পী একবার সেকথাই শেয়ার করেছিলেন নিজে। কী বলেছিলেন তিনি? প্রয়াত উস্তাদ বলেছিলেন...
"আমার জন্মের পর আমায় বাড়িতে নিয়ে আসা হল, এবং আমার বাবার কাছে আমায় যখন দেওয়া হল, নিয়ম হচ্ছে বাচ্চার কানে ঈশ্বরের নাম জানানো কিংবা প্রার্থনা শোনানো। কিছু ভাল শব্দ সন্তানের জীবনে প্রবেশ করানো বাবার দায়িত্ব। আমার বাবা আমায় কোলে নিয়ে কানের কাছে ফিসফিস করে রিদম উচ্চারণ করেছিলেন। উনি আমায় নাকি ধা গে তে টে, ধা ধিন ধিন ধা শুনিয়েছিলেন। আমার মা তো অবাক হয়ে বলেছিলেন, কী করছ তুমি? তোমার প্রার্থনা করা উচিত, রিদম শোনাচ্ছ কেন? আমার বাবা তখন বলেন, এটাই আমার প্রার্থনা। আমি এটাই করি ঈশ্বরের সামনে।"
এখানেই শেষ না। সেদিন তাঁর বাবা বলেছিলেন তিনি নাকি, মা সরস্বতী এবং গণেশের ভক্ত। তাঁদের পুজো করেন। এবং একজন কট্টর ইসলামকে একথা বলতে দেখে সেদিন অবাক হয়েছিলেন বাড়ির সকলে। কিন্তু বাবার প্রতিটা শিক্ষা নিজের জীবনের সঙ্গে মিলিয়ে নিয়েছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়। নিজের ছেলের মধ্যেই সেটা পাস অন করেছেন তিনি। শিল্পীর কথায়...
"এই শিক্ষা এবং বিদ্যাটা আমার মধ্যে রয়েছে। তাই, আমি সেটা আমার ছেলের মধ্যেও সেটা দিয়ে রেখেছি। ও একদম সেটাই করছে যেটা আমি ওকে শিখিয়েছিলাম।"