উত্তমের প্রেমে না পড়ে থাকা যায়? যে মানুষ তাঁকে বৈকি তাঁর অভিনয়ের প্রেমে পড়েননি সে যে জীবনের কী পর্যায় মিস করেছেন ঈশ্বরই জানেন। উত্তম এবং সুচিত্রা ঠিক এমন একটা বন্ধুত্ব বজায় রেখেছিলেন গোটা ইন্ডাস্ট্রিতে, যে আলোচনা উঠত প্রচুর।
মহানায়কের সঙ্গে মহানায়িকার প্রেমে চর্চা ছিল সাংঘাতিক। একসঙ্গে এত এত হিট ছবি, দুজনের সম্পর্ক যে বন্ধুত্বের ঊর্ধ্বে সেকথা অনেকেই বিশ্বাস করতেন। কিন্তু না, শেষদিন পর্যন্ত নিজেদের বন্ধুত্বই কায়েম রেখেছিলেন তাঁরা। মহানায়ক মারা যাওয়ার পর উত্তমের বাড়ি থেকেই ফোন গিয়েছিল সুচিত্রার কাছে। একবার আসবে না? মহানায়কের পরিবারের অনুরোধেই নিজেকে রোদচশমায় আড়াল করে এসেছিলেন তিনি।
কিন্তু উত্তম কোনোদিন তাঁর বন্ধু রমাকে ভালবেসেছিলেন? কেউ বলেন হ্যাঁ, কেউ বলেন না। ঘনিষ্ঠ মহলে নাকি মহানায়ক জানিয়েছিলেন, কে বলেছে রমাকে তিনি ভালবাসেনি। ওরকম বুদ্ধিমতি মানুষকে ভাল না বেসে পারা যায়? কিন্তু সুচিত্রা নাকি তাঁকে এও বলেছিলেন, 'বাস্তবের প্রেমিক প্রেমিকা হয়ে গেলে স্বপ্নের এই ইমেজটা ক্ষুণ্ন হবে। আমাদের ছবি আর চলবে না। কেউ ভালবাসবে না।'
আরও পড়ুন - Uttam Kumar: ‘এই এটাকে মুখের সামনে থেকে সরা..’, সাক্ষী ছিলেন রঞ্জিত মল্লিক, কাকে একথা বলেছিলেন মহানায়ক উত্তম কুমার?
মাঝখানে অনেকটা বছর। মহানায়কের সঙ্গে অনেকদিন তাঁর সাক্ষাৎ পর্যন্ত হয়নি। কিন্তু, তাঁর শেষ দিনে সুচিত্রা এসেছিলেন। গলায় পরিয়ে দিয়েছিলেন রজনীগন্ধার মালা। বসেছিলেন তাঁর শবদেহের পাশে। গৌরীদেবীর অনুরোধেই নাকি মহানায়কের গলায় মালা পড়িয়েছিলেন তিনি। এমনকি আফসোসের সুরে এও বলেছিলেন - 'আমি হেরে গেলাম উত্তম...', কিন্তু তখন আর ফেরানোর কোনও রাস্তা নেই। মহানায়ক তখন চিরঘুমে।
উত্তমের মৃত্যুর প্রায় অনেকবছর পরেই সুচিত্রা পাড়ি দেন না ফেরার দেশে। কিন্তু এতগুলো বছর কাউকে নিজের সামনে আসতে দেননি তিনি। সকলের থেকে আড়ালে রেখেছিলেন নিজেকে। মহানায়কের মৃত্যুতেই যে তিনি প্রভাবিত হয়েছিলেন, সেই রটনাও শোনা যায়।