উত্তম স্মরণে। মহানায়ক বাঙালির চোখের মণি হলেও তাঁর জীবনের এক চরম পর্যায় এসে পৌঁছায় ঠিক তখন যখন তিনি বলিউডে ছবি বানানোর প্রয়াস করেছিলেন। ছোটি সি মুলাকত ছবি দিয়েই বলিপাড়ার বুকে অভিষেক ঘটান তিনি।
কিন্তু, সেই ছবি মুখ থুবড়ে পড়ে বলিপাড়ায়। বাংলার মহানায়ক একেবারেই জাতীয় স্তরে নিজের করিস্মা দেখাতে পারেননি। শুধু যে এই ছবিতে নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন এমনটা নয়, তিনি এই ছবি প্রযোজনা পর্যন্ত করেছিলেন। সেকারণেই, নিজের ব্যর্থতায় বেশ আঘাত পেয়েছিলেন মহানায়ক। এমনকি, কানাঘুষো খরব, খোদ শাম্মি কাপুর নাকি তাঁকে বলেছিলেন, তুমি যে মাপের অভিনেতা, বলিউড কোনোদিন তোমার কদর করতে পারবেন না।
শাম্মি কাপুর তখন বলিউডের বিরাট নাম। তার উচ্ছাস, স্পিরিট, অভিনয় ক্ষমতা - বেশ অন্যরকম। তাঁর সঙ্গে অভিনয় করবেন বলে মুখিয়ে থাকতেন সকলে। কিন্তু সেই শাম্মির ভীষণ পছন্দ ছিল উত্তমের ছবি। কলকাতায় আসবেন, অথচ উত্তমের সঙ্গে দেখা করবেন না, তার ছবি দেখবেন না - এমনটা হয়? একেবারেই না। কিন্তু আসলেই কি উত্তমকে এমন কোনও কথা শাম্মি কাপুর বলেছিলেন।
ঘটনার সত্যতা জানতে মহানায়কের নাতি গৌরব চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে হলে অত্যন্ত ব্যস্ততার মধ্যেই তিনি ফোন ধরেন। দাদুর কাছ থেকে না হোক, বাবা গৌতমের কাছে এমন কিছু শুনেছেন কোনোদিন? উত্তরে গৌরব নিজেই বলেন, আমি সত্যি বলতে গেলে এমন কিছু শুনি নি। দাদুর যেহেতু ওটা বলিউডে প্রথম ছবি ছিল, তাই তিনি আশাবাদী ছিলেন। সেটি সফল না হওয়ায় খুব ভেঙে পড়েছিলেন, এটুকু জানি। কিন্তু শাম্মি সাহেব আদৌ কিছু বলেছিলেন কিনা সেটা নিয়ে আক্ষরিক অর্থে কিছু জানি না।
একসঙ্গে, প্রশ্ন ছিল এমনই যে মহানায়ক হয়েও সেদিন বলিউড তাঁকে আপন করে নেয়নি। তাঁর কী মনে হয়, যে উত্তম কুমার যদি আজ হতেন তবে, তাঁর সঙ্গে বলিউড জাস্টিফাই করতো। ঠিক যেভাবে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় থেকে টোটা রায়চৌধুরী কিংবা শ্বাশ্বত চট্টোপাধ্যায় নিজেদের জায়গা করে নিয়েছেন? উত্তরে এবারও সাফ জানালেন তিনি, নিশ্চয়ই করতেন। তাঁর একটাই কারণ এখনকার সময় কাজের সুযোগ এবং স্পেস অনেক বেড়েছে। হয়তো, এখন জনপ্রিয়তা পেতে তার অনেক সুবিধাও হত।
প্রসঙ্গত, শেষ কিছুদিন মহানায়কের AI জেনারেটেড ছবি ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাঁকে দেখে মন হারাচ্ছেন তরুণীরা। কিন্তু নাতির প্রতিক্রিয়া কী? একগাল হেসে বললেন, আমিও দেখেছি। আমার বেশ লেগেছে।