Uttam Kumar-Soumitra Chatterjee: তিনি ইন্ডাস্ট্রির কাছে মহানায়ক হলেও, কারওর কাছে ছিলেন দাদা, কেউ আবার বলতেন উত্তম জেঠু আবার কেউ তাঁকে শ্রদ্ধার চোখে দেখতেন। একের পর এক স্বর্ণযুগের সুপারহিট ছবি। উত্তম কুমার ( Uttam Kumar ) যে বাঙালির অস্তিত্বের সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছেন সেকথা অস্বীকার করার জায়গা নেই।
কিন্তু মহানায়ক হলেও তাঁর আতিথেয়তা ছিল দেখার মত। কেন? কেউ যদি চট্টোপাধ্যায় বাড়িতে আমন্ত্রিত থাকতেন, তবে তাদের খাতির কিংবা যত্নে ত্রুটি রাখতেন না মহানায়ক। তাঁর অতিথি আপ্যায়নের পাশাপাশি যেকোনওর বিষয়ে বেশ নজর ছিল। কার শরীরের হাল হকিকত কী, সেটা তিনি জানতেন। তাই তো ছেলের বিয়েতে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে ( Soumitra Chatterjee ) একবিন্দু অনিয়ম করতে দেননি তিনি।
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তার প্রতিদ্বন্দ্বিতার গল্প থাকলেও, দাদা উত্তম যে ভাই পুলুর বেশ খেয়াল রাখতেন, এই গল্প অনেকেই জানেন না। হ্যাঁ, তাঁকে পুলু বলেই ডাকতেন উত্তম কুমার। ছেলের বিয়েতে যখন এসেছিলেন সৌমিত্র তখন দাদা হিসেবে বেশ খেয়াল রেখেছিলেন তাঁর। শারিরীক সমস্যায় ভুগছিলেন সৌমিত্র। গ্যাস্ট্রিক বেশ কষ্ট দিচ্ছিল তাঁকে। সেকথা মহানায়ক জানতেন।
কী ঘটেছিল সেদিন?
উত্তম কুমারের একমাত্র ছেলে গৌতমের বিয়েতে যখন তাঁর স্নেহের পুলু এলেন, তাঁকে জড়িয়ে ধরে অভ্যর্থনা জানান তিনি। একসঙ্গে বসে বেশ গল্প করেন। কিন্তু, যেই খাবার খাওয়ার প্রসঙ্গ আসে, তখনই যেন তিনি সৌমিত্রকে আটকালেন। সোজা বলে বসলেন, "এই না! পুলুর শরীর খারাপ হবে। এখন ও এসব খাবে না।" ঠিক তাঁর পরেই সৌমিত্রর দিকে তাকিয়ে বললেন, "পুলু দই মিষ্টি খাবি তো?" সেদিন দাদা উত্তমকে আর না করতে পারেননি। এবং মহানায়ক খোদ আদেশ দেন গৌরীদেবীকে। নিজে হাতে যেন দই মিষ্টি নিয়ে আসেন তিনি। নিজেদের দায়িত্বে-ই সেদিন গৌরিদেবী এবং উত্তম সাহেব পেটভরে মিষ্টি খাওয়ান সৌমিত্রকে।
সৌমিত্র চট্টপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল বন্ধুত্বের। কেউ কেউ বলতেন, সত্যজিৎ নাকি সিনেমা বুঝেই তাদের দুজনকে কাস্ট করতেন। নায়কে যেমন উত্তম ছিলেন তাঁর সেরা পছন্দ। তেমনই, সোনার কেল্লায় সৌমিত্র ছিলেন তাঁর শেষ সিদ্ধান্ত।