আধুনিক প্রজন্মের রোম্যান্টিসিজম বেড়ে উঠেছে তাঁর সংগীতের সুরে। গায়ক কৃষ্ণকুমার কুন্নথ, ওরফে KK-র ব্যক্তিগত জীবনও ভরা রোম্যান্টিকতায়। একটা সময় জীবন তাঁকে বিতৃষ্ণার খাদে ঠেলে দিয়েছিল। সেই সময় যাঁর হাত তাঁকে খাদে তলিয়ে যাওয়া থেকে বাঁচায়, তিনি জ্যোতি। যে মেয়েটিকে দশম শ্রেণিকে পড়ার সময়ই প্রোপোজ করেছিলেন KK। বলেছিলেন, 'আমি তোমাকে জীবনসঙ্গী হিসেবে চাই।' অবশ্য তখনও তিনি KK হননি, শুধুই কৃষ্ণকুমার।
জ্যোতি কৃষ্ণা- সেই সময় প্রোপোজের কী উত্তর দিয়েছিলেন, তা আজ আর একদমই গুরুত্বপূর্ণ না। কারণ, পরবর্তী সময়ে KK-র জীবনটা শুধুই জ্যোতিতে ভরা। সাধারণত, গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ডের বহু মানুষের সঙ্গেই একাধিক নারীর নাম জড়িয়ে যায়। KK ব্যতিক্রম। জ্যোতিতেই যাঁর শুরু, জ্যোতিতেই শেষ। সাফল্যও সেই চলায় কোনও হেরফের ঘটাতে পারেনি। পরবর্তী সময়েও KK মনে করতেন, ক্লাস টেন-এ জ্যোতিকে প্রোপোজ করে তিনি কোনও ভুল করেননি। কারণ, তিনি জ্যোতিকে মন দিয়ে দিয়েছিলেন।
তবে, মন দেওয়া আর বাস্তবের একটা ফারাক থাকে। সেটা KK-কে সময়ই বুঝিয়ে দিয়েছিল। পরিবার চালাতে অর্থ দরকার। আর, অর্থের জন্য কাজ করতে হবে। সেই সময় জ্যোতিকে পাওয়ার জন্য যে কোনও কাজ করতে KK রাজি ছিলেন। জ্যোতিকে পাওয়ার জন্য সেলসের চাকরিও নিয়েছিলেন। KK-র কথায়, 'কাজ করার দরকার ছিল। না-হলে যদি বলতাম যে আমি শুধু গান করি, তখন জ্যোতিও বলত আমিও তো গান করি। কিন্তু, চাকরি কর কী?'
KK-র মাথায় তখন শুধুই জ্যোতি। পাড়ার ফাংশনে জ্যোতিকে উদ্দেশ্য করে গান। সে কত কী! তবে, সেলসের চাকরিটা বেশি দিন টেকেনি। ধীরে ধীরে গানটাকেই পেশা হিসেবে বেছে নেওয়া শুরু করেন KK। জ্যোতি অবশ্য মুখ ফেরাননি। ৯৯ সালে বিয়ে করে নিয়েছিলেন কাঁঠালের আঠার মত পিছনে লেগে থাকা KK-কে। তবে, স্বামীর গান গেয়ে সংসার চালানোটা একেবারেই তাঁর অপছন্দ ছিল।
আরও পড়ুন- গান স্যালুটে KK-কে ‘আলবিদা’ জানাল কলকাতা, শোকস্তব্ধ স্ত্রীকে সামলালেন মমতা
তখন অবশ্য KK-র রোজগারও তেমন একটা ছিল না। KK গান ধরলেই জ্যোতি তখন নাকি বলতেন, 'আরে এখন বিরক্ত কর না। আমার অনেক কাজ আছে।' পরে অবশ্য সেই জ্যোতিই KK-র একের পর এক রোম্যান্টিক গানের প্রশংসা করেছেন। সেই সব গান, যা শুনে তালিতে ভরিয়ে দিয়েছে দেশের যুবসমাজ। ছেলে নকুল কৃষ্ণ আর মেয়ে তামারাকে নিয়ে বুধবার রবীন্দ্রসদনে এসেছিলেন জ্যোতি। স্বামীর কফিনবন্দি দেহ দেখে ডুকরে ওঠা কান্নার ফাঁকে কি সে-ই সব স্মৃতিই মনে পড়ছিল জ্যোতির?
Read full story in English