Advertisment

ছুরি মারেন বন্ধু-অভিনেতা! মৃত্যুর মুখ থেকে নাসিরুদ্দিনকে বাঁচান ওম পুরি

কী ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেছিল সেই রাতে?

author-image
IE Bangla Entertainment Desk
New Update
Naseeruddin Shah birthday, Naseeruddin Shah, Om puri, Naseeruddin Shah Om Puri, নাসিরুদ্দিন শাহ, ওম পুরি, নাসিরুদ্দিন শাহের জন্মদিন, ওম পুরি নাসিরুদ্দিনের বন্ধুত্ব, bengali news today, Indian Express Entertainment News

নাসিরুদ্দিন শাহকে মৃত্যুর মুখ থেকে বাঁচান ওম পুরি

সালটা ১৭৭৭। 'ভূমিকা' সিনেমার শুটিং করছিলেন নাসিরুদ্দিন। শুট সেরে এক রাতে বন্ধু অভিনেতা ওম পুরীর সঙ্গে নৈশভোজে যান রেস্তরাঁয়। সেখানেই ঘটে বিপত্তি! 'ভূমিকা' ছবির আরেক সহ-অভিনেতাও সেখানে নাসিরুদ্দিনের পিছু পিছু গিয়ে হাজির হন। তারপরই পিছন থেকে আক্রমণ নাসিরুদ্দিন শাহ-কে।

Advertisment

কী ঘটেছিল সেই রাতে? নাসিরুদ্দিন ও ওম পুরি সেই রেস্তরাঁয় খাবার খাচ্ছিলেন। এমন সময়েই হঠাৎ যশপাল নামে ওই সহ-অভিনেতাকে দেখতে পান নাসির। দুজনেই FTII ছাত্র। পরিচয় সেখান থেকেই। তবে নাসিরের সঙ্গে যশপালের বনিবনা কোনওদিনই ঠিকঠাক ছিল না। দুজনেই দুজনের থেকে দূরত্ব বজায় রাখতেন। রেস্তরাঁতে তাঁকে দেখে তাই পাত্তাই দেননি তিনি। তবে, যশপাল যে নাসিরুদ্দিনকে বাঁকা চোখে দেখছেন, সেটা নজরে পড়ে যায়। কিন্তু অভিনেতা ভাবেন যশপাল বোধহয় পরের টেবিলে গিয়ে বসবেন।

কিন্তু হঠাৎ-ই নাসির বুঝতে পারেন যে, তাঁর পিছনে কিছু একটা ঘটছে। যে-ই না বুঝতে পারা, ঠিক তখনই পিঠে ছোট ছুঁড়ি দিয়ে আঘাত করে ফেলেন যশপাল। মারাত্মক ব্যথায় কাতরাতে থাকেন নাসিরুদ্দিন। পিছনে ফিরে তাকাতেই দেখেন যশপাল সেখানে দাঁড়িয়ে হাতে একটা ছুঁড়ি নিয়ে। তৎক্ষণাৎ নাসিরুদ্দিনকে আরেকবার আঘাত করতে যাচ্ছিলেন ওই অভিনেতা। কিন্তু সেটা হওয়ার আগেই ওম পুরি নিজের চেয়ার থেকে উঠে গিয়ে আটকান তাঁকে। নাসিরের পিঠ থেকে রক্ত ঝরা দেখে রেস্তরাঁর দুই কর্মীও ছুটে আসেন তড়িৎগতিতে। ধ্বস্তাধস্তি…!

পরিস্থিতি বেগতিক দেখে যশপালকে রেস্তরাঁর হেঁশেলে বন্দি করে পুলিশে খবর দেন সেখানকার ম্যানেজার। এদিকে ছুঁড়িকাঘাত খেয়ে প্রাণ প্রায় ওষ্ঠাগত নাসিরুদ্দিনের। প্রচণ্ড ব্যথায় উঠতে না পারার মতো পরিস্থিতি তাঁর। ওম পুরি তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাইলেও অপারগ!এদিকে পুলিশ না আসা অবধি রেস্তরাঁ থেকে নাসিরকেও বেরতে দিচ্ছেন না কর্মীরা।

publive-image

তার কিছুক্ষণ বাদেই অ্যাম্বুল্যান্স ও পুলিশ একসঙ্গে এসে হাজির হয়। বন্ধুর শারীরিক পরিস্থিতি দেখে ওম পুরি নিজেই পুলিশের সঙ্গে কথা বলেন। এবং অ্যাম্বুল্যান্সে উঠে পড়েন। পুলিশ ধমক দেয় ওমকে। কিন্তু বন্ধুকে ছেড়ে যেতে নাছোড়বান্দা তিনি। কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তাঁদের, কোনও ধারণা ছিল না ওম-নাসিরের। শুধু মনে মনে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছিলেন, যেন থানায় না নিয়ে যাওয়া হয়। কারণ নাসিরুদ্দিন শাহ তখন ব্যথায় কাতরাচ্ছেন। কিন্তু সেই আশঙ্কাই সত্যি হয়। দুই তারকাকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

কিছুক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর মারাঠি রেডিওতে সেই খবর সম্প্রচারিত হলে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। থানা থেকে বেরিয়েই নাসিরুদ্দিনকে নিয়ে জুহুর কুপার হাসপাতালে ছোটেন ওম পুরি। রক্ত ঝরা তখনও বন্ধ হয়নি। উপরন্তু ব্যথা উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে! সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর অভিনেতাকে নিয়ে যাওয়া হয় যশলোক হাসপাতালে।

পরিচালক শ্যাম বেনেগালকে খবর দেন ওম পুরি। কারণ তখন তাঁর পরিচালিত সিনেমাতেই কাজ করছিলেন নাসিরুদ্দিন শাহ (Naseeruddin Shah birthday)। আর পরের দিনও তাঁর কলটাইম ছিল। ওদিকে যশপালকে জেলে পোরা হয়। কিন্তু তৎকালীন মুম্বইয়ের আরেক পরিচালক সাইদ আখতার মির্জার দৌলতে যশপাল ২ রাত জেলে কাটিয়ে জামিনে ছাড়া পেয়ে যান। তবে এখানেই শেষ নয়!

এই ঘটনার দিন কয়েক বাদে যখন নাসিরুদ্দিন শাহ বাড়িতে একা ছিলেন তখনও যশপাল তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যান। দরজা খুলে তাঁকে দেখে তো হতবাক অভিনেতা! মনে করেন, এই না আবার মারতে তেড়ে আসেন…! তবে সেদিন আর এমনটা ঘটেনি। বরং হাসিমুখেই কথা বলছিলেন যশপাল। তবে নাসিরুদ্দিন শাহের শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে কোনও কথা জিজ্ঞেস না করেই একটা সিগারেট ধরান। কোনওরকম তাপ-উত্তাপও ছিল না তাঁর। সেটা খেয়াল করেন নাসির। শুধু জানান, "সেই রাতে যা ঘটেছিল, তার নেপথ্যে কোনও ব্যক্তিগত কারণ নেই।" মিনিট দশেক বাদে তাঁকে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন নাসিরুদ্দিন। তাতে কিছুটা হতবাক-ই হন যশপাল। তবে সেই মামলায় বিচারকের কাছে ছাড় পেয়ে যান তিনি। সেদিনকার ঘটনার পর থেকে আর কোনও সিনেমায় দেখা যায়নি যশপালকে।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

bollywood Naseeruddin Shah Entertainment News
Advertisment