Kangna Ranaut: রাষ্ট্রপতিকে চিঠি লিখে কঙ্গনা রানাউতের পদ্ম পুরস্কার কেড়ে নেওয়ার আর্জি মহিলা কমিশনের। অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহ ধারায় মামলা দায়েরের পক্ষেও সওয়াল করে তারা। ভারতের স্বাধীনতা নিয়ে সম্প্রতি বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন অভিনেত্রী। তারপর থেকে জাতীয় রাজনীতিতে চর্চা তুঙ্গে। ইতিমধ্যে কংগ্রেস, শিব সেনার মতো দল অভিনেত্রীর পদ্ম পুরস্কার কেড়ে নেওয়ার পক্ষে সওয়াল করে। এবার সেই পথেই হাঁটল দিল্লি মহিলা কমিশন। কমিশন প্রধান স্বাতী মালিওয়াল রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে রীতিমতো অভিযোগ জানিয়ে চিঠি লেখেন। সেই চিঠিতে স্বাতী লেখেন, ‘ভারতের স্বাধীনতা নিয়ে অভিনেত্রীর মন্তব্য মোটেই বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। মজার ছলে সেই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেননি তিনি। নিয়মিত অভিনেত্রী দেশের মানুষের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ান এবং মতের বিরুদ্ধে গেলেই কটূক্তি করেন। দেশের স্বাধীনতা নিয়ে করা অভিনেত্রীর মন্তব্য দেশদ্রোহের সমান। মাননীয় রাষ্ট্রপতি আপনি অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করুন।‘
তিনি আরও লেখেন, ‘অভিনেত্রীর মন্তব্য মহাত্মা গান্ধি, ভগৎ সিংয়ের মতো একাধিক দেশপ্রাণ বীরকে অসম্মান করেছে। আমরা জানি ব্রিটিশ রাজের সঙ্গে লড়ে, কত আত্মত্যাগের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হয়েছে। অভিনেত্রীর মন্তব্যে সেই শতকোটি শহিদ এবং দেশের জনগণকে আঘাত করা হয়েছে।‘ এখনই ফিরিয়ে নেওয়া হোক কঙ্গনা রানাউতের পদ্ম পুরস্কার। শুক্রবার এভাবেই আক্রমণ করেছে কংগ্রেস। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন অভিনেত্রী। ২০১৪ সালে দেশ প্রকৃত স্বাধীনতা পেয়েছে। ১৯৪৭-এ যেটা পেয়েছিল, সেটা ভিক্ষা। তারপর থেকেই সরগরম জাতীয় রাজনীতি। ইতিমধ্যে কঙ্গনার এই মন্তব্যকে ‘পাগলের প্রলাপ’ কটাক্ষে দুষেছেন বিজেপি সাংসদ বরুণ গান্ধি। এবার হাত শিবিরের তরফে অভিনেত্রীর মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করা হয়েছে।
দলের মুখপাত্র গৌরব বল্লভ বলেন, ‘অযোগ্যদের হাতে পদ্ম পুরস্কার তুলে দিলে কী হয়, এটাই প্রমাণ। ভারত সরকারের উচিত অবিলম্বে অভিনেত্রীর থেকে পুরস্কার কেড়ে নেওয়া। উনি প্রকাশ্যে ভারতীয়দের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। অভিনেত্রীর মন্তব্যে দেশের স্বাধীনতা আন্দোলন এবং স্বাধীনতা সংগ্রামীদের আত্মত্যাগ ক্ষুন্ন হয়েছে। কঙ্গনা রানাউতকে পদ্ম পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে মানে, এই ধরনের মন্তব্যকে সমর্থন করছে ভারত সরকার।‘
পদ্ম পুরস্কার পেয়ে কঙ্গনা রানাউত বলেছিলেন, সব সমালোচনার জবাব। এবার ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করে বিতর্ক বাড়িয়েছেন এই অভিনেত্রী। সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘২০১৪ সালে ভারত প্রকৃত স্বাধীনতা পেয়েছে। ১৯৪৭-এ যেটা পেয়েছিল সেটা ভিক্ষা।‘ এই মন্তব্যের পরেই বলিউডের কুইনের সমালোচনায় সরব তাঁর সহকর্মীদের একাংশ। সেই পথে হেঁটে কঙ্গনার বিরুদ্ধে সরব হলেন বিজেপি সাংসদ বরুণ গান্ধি। পিলভিটের তিন বারের সাংসদ প্রশ্ন করেছেন, ‘অভিনেত্রী যেটা বলেছেন সেটা পাগলের প্রলাপ না দেশের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা?’
কঙ্গনার সেই সাক্ষাৎকারের ভিডিও ট্যুইট করে বরুণ লেখেন, ‘উনি কখনও গান্ধিজির আত্মত্যাগকে অসম্মান করেন। কখনও গান্ধিজির খুনির প্রশংসা করেন। এবার দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসকে অবজ্ঞা করলেন অভিনেত্রী। ভুলে গেলেন রানী লক্ষ্মীবাই, চন্দ্রশেখর আজাদ, নেতাজি, ভগত সিং-সহ লক্ষাধিক স্বাধীনতা সংগ্রামীর আত্মত্যাগ। এই ধরনের ভাবনাকে পাগলের প্রলাপ বলব না দেশের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা বলব?’
এদিকে, সপ্তাহ দুয়েক আগের কথা। দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে ‘জাতীয় সেরা অভিনেত্রী’র পুরস্কার হাতে তুলে নিয়েছিলেন কঙ্গনা রানাউত (Kangana Ranaut)। আর তার দিন কয়েক কাটতে না কাটতেই এবার তাঁর ঝুলিতে এল পদ্মশ্রীর (Padma Shri) মতো সম্মান। গত ১৫ বছরের কেরিয়ারে চার-চারটে জাতীয় পুরস্কার জিতেছেন। বলিউডের কোনও নায়কও এত কম সময়ে একাধিক জাতীয় পুরস্কারের অধিকারী হননি সম্ভবত। সেই প্রেক্ষিতে কঙ্গনা উচ্ছ্বসিত তো বটেই, পাশাপাশি সোমবার রাষ্ট্রপতিভবনে রামনাথ কোবিন্দের হাত থেকে পদ্মশ্রী পেয়ে তোপ দাগতেও ভুললেন না অভিনেত্রী। সপাটে জানিয়ে দিলেন, “এযাবৎকাল স্পষ্ট কথা বলার জন্য অনেক অপমানিত হয়েছি। এই পদ্মশ্রী সেসবেরই জবাব। এবার অনেকের মুখ বন্ধ হবে।”
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন