অভিনেতা। আবার নেতা। রাজনীতি এবং গ্ল্যামার ইন্ডাস্ট্রি এখন মিলেমিশে একাকার। তারকাদের দলবদল কিংবা রাজনীতিতে পদার্পণের খবরে এখন আর হতবাক হন না আম-আদমিরা। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে যে বিনোদুনিয়ার সঙ্গে রাজনৈতিক ময়দানের এরকম একটা 'মাখো-মাখো' সমীকরণ হতে চলেছে, তা আগেই আন্দাজ করা গিয়েছিল। ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের খাতিরে এখন ইন্ডাস্ট্রির অনেক বন্ধুত্বের সম্পর্কই তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। একে-অপরের থেকে মুখ ঘুরিয়েছেন তাঁরা। দোষারোপ। আর কাঁদা ছোঁড়াছুড়ি সর্বত্র। এর মাঝেই তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহানের 'বিশেষ বন্ধু' যশ দাশগুপ্তর (Yash Dasgupta) পদ্ম শিবিরে যোগদান নিয়ে, অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন যে, বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্য হওয়ায় কি 'যশরত'-এর বন্ধুত্বের সমীকরণও বদলাতে চলেছে?
বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর অভিনেতাকে কিন্তু ইতিমধ্যেই এই প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে। তিনি অবশ্য 'কূটনৈতিক কায়দায়' উত্তর দিয়েছেন। যশের দাবি, নুসরত (Nusrat Jahan) একটা দলে রয়েছে। এবং তিনি অন্য একটা পার্টিতে। তাঁরা একে-অপরের বন্ধু। যে বন্ধুত্বটা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি থেকেই শুরু হয়েছে। কাজেই ভিন্ন রাজনৈতিক দলে যোগ দেওয়ায় সেই সমীকরণ বদলানোর নয়। এমনটাই মত রাজ্যের শাসক দলের তারকা-সাংসদের সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া বন্ধুর।
উল্লেখ্য, যশকে কিন্তু সম্প্রতিই নুসরত ও মদন মিত্রের সঙ্গে দক্ষিণেশ্বরের মন্দিরে দেখা গিয়েছিল। অতঃপর রাজ্যের শাসক দলের সঙ্গেও যে তাঁর ভালই হৃদ্যতা ছিল এযাবৎকাল, তা বলাই যায়। পদ্ম শিবিরে যোগ দেওয়ার পর অভিনেতা আবার দাবি করেছেন যে, অনেক আলোচনার পরই তিনি রাজনীতিতে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যুব সমাজের জন্যও কাজ করতে চান। যেটা বিজেপিতে থেকেই করা সম্ভব। অর্থাৎ, ঘাসফুলের জমি তিনি পা রাখার ক্ষেত্রে শক্ত বলে করেননি! আবার সেই যশেরই যোগদান বিজেপির কাছে ‘চমক’। তৃণমূলকে ছোঁড়া চ্যালেঞ্জও বলা যেতে পারে। সেই প্রেক্ষিতে দাঁড়িয়ে যশ কী মনে করছেন?
এপ্রসঙ্গে অভিনেতার মন্তব্য, "দিদিকে (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়- Mamata Banerjee) আমি এখনও ভালবাসি। শ্রদ্ধা করি। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগেও আমি তাঁকে মেসেজ পাঠিয়ে আশীর্বাদ চেয়েছি। আমার প্রণাম ওঁকে।" পাশপাশি তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে, কোন দল কয়লা চুরি করছে কিংবা গরু পাচার করছে, সেটা তাঁর বলার কাজ নয়। দোষারোপ করে নয়, বরং কাজ করেই জবাব দিতে চান তিনি। সদ্য এক সংবাদমাধ্যমের কাছে নিজের মতপ্রকাশ করেছেন তিনি। তবে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে প্রচারের ক্ষেত্রে বিজেপির 'স্টার ক্যান্ডিডেট' হলেও ভোটপ্রার্থী হবেন কিনা, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি যশ। তবে, রাজনীতির প্রভাব যে তাঁর ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির কোনও বন্ধুত্বে পড়বে না, তা স্পষ্ট করেই জানিয়ে দিয়েছেন অভিনেতা।