ওয়াহ তাজ! এই একটা বিজ্ঞাপন যেভাবে মানুষের মনে গেঁথে গিয়েছিল সেটি সাংঘাতিক। একটা চায়ের বিজ্ঞাপন মানুষের মন ভাল করে দিয়েছিল। সালটা ৮০ এর দশকের মাঝামাঝি। সেই চায়ের বিজ্ঞাপনের কারণে তাঁর বিক্রি বাড়তে থাকে। আর যে মানুষটি সেটিকে ঘরে ঘরে পৌঁছে দিলেন তিনি উস্তাদ জাকির হোসেন।
আগ্রার তাজমহলের সামনে বসে, নিজের খেয়ালে তবলা বাজাচ্ছেন জাকির। আর তাঁর বোল শুনে মুগ্ধ এক, খুদে বলছেন, আরেহ ওয়াহ উস্তাদ! তখনই কোকড়ানো চুলের ভীষণ প্রতিভাবান মানুষটি বলে উঠতেন, বাহ উস্তাদ নয়, বরং বাহ তাজ বলো। আর আজ যখন সেই মানুষটি আর নেই, তখন সেই বিখ্যাত চায়ের বিজ্ঞাপন নিয়ে কথা হবে না, এও হয়? গতকাল রাতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তবলার জাদুকর জাকির হোসেন। সান ফ্রান্সিসকোতে তিনি মারা গিয়েছেন।
তবে যেই বিজ্ঞাপনের জন্য তিনি ভারতবর্ষের ঘরে ঘরে পৌঁছে গিয়েছিলেন সেটির একটি গল্প আছে। অর্থাৎ? প্রথমে এই বিজ্ঞাপনের জন্য তিনি মনোনীত হননি। বরং, দুই অভিনেত্রী অর্থাৎ জিনাত আমান এবং মালবিকা তিওয়ারি এই দুজন বিজ্ঞাপনের মুখ ছিলেন। পরবর্তীতে দেখা গিয়েছিল, ক্রমেই বাড়ছিল এর চাহিদা। বিশেষ করে মধ্যবিত্তদের মধ্যে দারুণ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই চা। তাই এমন একজন মানুষকে দরকার ছিল যিনি ভারতীয় সংস্কৃতি এবং ফিউশন দুটোই বোঝেন।
হিন্দুস্থান থম্পসনের তরফে নতুন একটি ব্র্যান্ডিং টিম গঠন করা হয়, অর্থাৎ যারা এই চায়ের মূল কর্মকর্তা ছিলেন। সেই দলে কে এস চক্রবর্তী ছিলেন, যিনি তবলার এক অন্ধ ভক্ত। শোনা যায়, তবলার মায়েস্ট্রোকে যখন এই বিষয়ে জানানো হয়েছিল এবং প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, তখন তিনি আনন্দের সঙ্গে শুধু যে এই প্রজেক্টে জুড়েছিলেন এমনটা নয় বরং নিজের খরচে সান ফ্রান্সিসকো থেকে আগ্রাতে এসেছিলেন। তারপর ঘণ্টার পর ঘন্টা তিনি প্র্যাকটিস করেছিলেন শুটিংয়ের আগে।
উল্লেখ্য, যদিও বা এরপর আরও অনেক মুখ নানসময় এসেছেন এবং গিয়েছেন কিন্তু উস্তাদজি মানুষের মনে গেঁথে গিয়েছেন এই বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে।