শুধু জুন মাসেই ভারতে নভেল করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ৩,৮৬ লক্ষের বেশি মানুষ। ভারত এখন করোনাক্রান্ত শীর্ষ চার দেশের তালিকায়। এ দেশের চেয়ে বেশি সংখ্যায় সংক্রমণ ঘটেছে আমেরিকা, ব্রাজিল ও চিনে। যদি বর্তমান সংক্রমণ প্রবাহ চলতে থাকে তাহলে এক সপ্তাহের মধ্যেি রাশিয়াকে ছাড়িয়ে যেতে পারে ভারত।
ভারতে ৩১ মে তে নিশ্চিত সংক্রমিতের সংখ্যা ছিল ১.৯৮ লক্ষ। পরের এক মাসে সংক্রমিতর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫.৮৫ লক্ষ। গত ১২ দিনে দু লক্ষ নতুন সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
সংক্রমণের মাসওয়ারি হিসেব
সক্রিয় সংক্রমিত, যাঁরা এখনও সুস্থ হননি এবং চিকিৎসা প্রয়োজন, তাঁদের সংখ্যা মে মাসের শেষে ছিল ৯৭ হাজার, বর্তমানে সে সংখ্যা ২.২ লক্ষ। এর ফলে হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উপর কী ধরনের চাপ পড়ছে তা সহজেই অনুমেয়।
জুন মাসে করোনা ভাইরাস ঘটিত মৃত্যুর সংখ্যা ১১৮০০, যা তার আগের মাসের সংখ্যার দ্বিগুণের বেশি। এ মাসে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৪৮.৬ লক্ষ, যা এখনও পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষার অর্ধেকের বেশি।
একমাত্র সান্ত্বনা হল মে মাসের শেষে যেখানে নিশ্চিত সংক্রমণে বৃদ্ধির হার ছিল ৭.৪৮ শতাংশ, তা এখন কমে ৩.৬১ শতাংশ। প্রায় গোটা জুন মাস ধরেই বৃদ্ধির হার কমছিল, কিন্তু ২০ জুনের পর থেকে সে হার সামান্য হলেও বাড়তে শুরু করেছে।
মহারাষ্ট্রে সংক্রমণ সংখ্যার দৈনিক বৃদ্ধি সবচেয়ে বেশি। যদিও সেখানে বৃদ্ধির হার ক্রমশ কমছে, অন্য রাজ্য বৃদ্ধির জন্য মূলত দায়ী। দিল্লি ও তামিলনাড়ু এবং পরে তেলেঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ ও কর্নাটক এখন বৃদ্ধির দিক থেকে শীর্ষ রাজ্য। উত্তর প্রদেশ, আসাম, বিহার, হরিয়ানা, কেরালা ও পশ্চিমবঙ্গে ধারাবাহিকভাবে বড় সংখ্যায় সংক্রমণ ধরা পড়ছে, অন্যদিকে ত্রিপুরা, ছত্তিসগড়, উত্তরাখণ্ড ও এমনকী লাদাখেও মাঝে মাঝে সংখ্যাবৃদ্ধি ঘটছে।
শীর্ষ ১০ সংক্রমিত রাজ্য
মঙ্গলবার মোট ১.৭৪ লক্ষ নিশ্চিত সংক্রমণের পর, দেশের মোট সংক্রমিতের ২৯.৮ শতাংশ মহারাষ্ট্রে। মে মাসে এই হিসেব ছিল ৩৫ শতাংশ। দেশের মোট সক্রিয় সংক্রমিতের ১২ শতাংশ এই রাজ্যে। মে মাসের শেষে এই অনুপাত ছিল ১৮ শতাংশ। দেশের মোট সংক্রমণের ১৫ শতাংশ করে রয়েছে তামিলনাড়ু ও দিল্লিতে।
যতজন মানুষ রোজ নতুন করে সংক্রমিত হচ্ছেন, তাঁদের তুলনায় দৈনিক আরোগ্যপ্রাপ্তের সংখ্যা এখনও অনেক কম। এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ নির্ণায়ক। যদি দৈনিক আরোগ্যের সংখ্যা দৈনিক নতুন সংক্রমণের চেয়ে বেশি হয়, এবং দু সপ্তাহ তেমনটা চলতে থাকে তাহলে ইঙ্গিত মিলবে যে চূড়ান্ত পরিস্থিতি এসে গিয়েছে। কিন্তু সে পরিস্থিতি এখনও অনেক দূর বলেই মনে হচ্ছে। বর্তমানে দৈনিক নতুন সংক্রমণ দৈনিক আরোগ্যপ্রাপ্তের চেয়ে ৫ থেকে ৬ হাজার বেশি।