বুধবার (৩ মে) কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনের জন্য প্রচার চালাতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যে তিনটি জনসভায় বক্তব্য রেখেছেন, তার সবক'টিতেই 'জয় বজরংবলী' স্লোগান দিয়েছেন। রাজনৈতিক এবং সামাজিক ক্ষেত্রে এই স্লোগানটা সংঘ পরিবারের যে সংগঠনের প্রধান স্লোগান, সেই অতি দক্ষিণপন্থী বজরং দল এখন কর্ণাটকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। কারণ, ১০ মে হতে চলা নির্বাচনের ইস্তেহারে কংগ্রেস প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ক্ষমতায় এলে তারা বজরং দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করবে। কারণ, কংগ্রেসের দাবি হিন্দুত্ববাদের আড়ালে হিংসার জন্য এই বজরং দল সংগঠনই দায়ী। সংঘ পরিবারের অন্যতম সংগঠন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের যুব সংগঠন হল বজরং দল। যাদের লক্ষ্য হল- 'সেবা, নিরাপত্তা এবং সংস্কার'।
নামের সঙ্গে জড়িয়ে হনুমান
ভগবান হনুমানের অপর নাম বজরংবলী। সেই নামকে সামনে রেখে এই সংগঠনের নামকরণ করা হয়েছে বজরং দল। একথা মাথায় রেখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কংগ্রেসের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন যে, 'যারা ভগবান হনুমানের উপাসনা করে, তাঁদের তালাবন্ধ করার চেষ্টা করছে কংগ্রেস। যেভাবে আগে তারা ভগবান রামকে (বাবরি মসজিদের উল্লেখ) তালাবন্ধ করেছিল।'
বহু অভিযোগ উঠেছে
তবে, প্রধানমন্ত্রী একথা বললেও বজরং দলের বিরুদ্ধে তোলা কংগ্রেসের অভিযোগ কিন্তু মিথ্যে নয়। অতীতে বারবার বজরং দলের বিরুদ্ধে নানাপ্রকার হিংসাত্মক আন্দোলন বা কার্যকলাপের অভিযোগ উঠেছে। বারবার 'অবৈধ ধর্মান্তর', 'লাভ জিহাদ' ইস্যুতে খ্রিস্টান এবং মুসলমানদের হয়রান করার অভিযোগ উঠেছে বজরং দলের বিরুদ্ধে। এমনকী, অতীতে বিজেপির শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরাও এই সংগঠনকে লাগাম পরানোর জন্য সংঘ নেতাদের কাছে অনুরোধ করেছেন।
আরও পড়ুন- জ্বলছে মণিপুর! চরম আশঙ্কায় বাসিন্দারা-প্রশাসন, কেন?
সংগঠনের বয়স ৪০ বছর
আর, এই ইতিহাস নতুন নয়। দীর্ঘ ৪০ বছরের। অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের জায়গায় রামমন্দির গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে ১৯৮৪ সালে এই সংগঠন তৈরি হয়েছিল। লক্ষ্য ছিল, টগবগে তরুণ এবং তাঁদের পেশীশক্তিকে সংঘের কাজে ব্যবহার। দীর্ঘ ৪০ বছরে সেই ব্যবহারের লক্ষ্য যে সংঘ সফল, তা যেন ফের বুঝিয়ে দিল কংগ্রেসের ইস্তেহার। এর আগে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর এই সংগঠনকে নিষিদ্ধ করেছিল তৎকালীন কংগ্রেস সরকার।