দিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনের (প্রেসিডেন্ট হাউস) ঐতিহাসিক মুঘল গার্ডেনের নাম বদল করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতির বার্তাসচিব অজয় সিং সংবাদসংস্থা এএনআইকে বলেন, 'রাষ্ট্রপতি ভবনের সমস্ত উদ্যানের মিলিত নাম হবে অমৃত উদ্যান। আগে বাগানগুলোর বর্ণনামূলক পরিচয় ছিল। এখন নতুন পরিচয় দেওয়া হল।' ৩১ জানুয়ারি মুঘল গার্ডেন তথা অমৃত উদ্যান দর্শকদের জন্য খুলে দেওয়া হবে। গার্ডেনের নাম পরিবর্তনের ঘটনায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। কেউ বলেছেন, অনেকদিন আগেই হওয়ার কথা ছিল। এতদিন নামবদল আটকে ছিল। আবার অনেক বলছেন, এই নামবদল ক্ষুদ্র রাজনীতি ছাড়া আর কিছুই নয়।
মুঘল গার্ডেনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
মুঘলরা বাগানের পরিচর্যা করত। বাবর নামায়, বাবর বলেছেন যে তাঁর প্রিয় বাগান হল পারস্য চারবাগ শৈলী (আক্ষরিক অর্থে চারটি বাগান)। চারবাগ কাঠামোটি একটি পার্থিব কল্পনা, যা আসলে স্বর্গের মত বোঝাতে ব্যবহার করা হয়েছে। অর্থাৎ, এমন একটা জায়গা, যেখানে মানুষ এবং প্রকৃতির মধ্যে সহাবস্থান রয়েছে। চারটি সমান ভাগে বিভক্ত এই উদ্যান। যার বাইরেটা সরলরেখার মত সাজানো। এগুলো মুঘল গার্ডেনের বিশেষ পরিচয়।
এই ধরনের বাগান আগে মুঘলদের দ্বারা শাসিত জমিতে দেখা যেত। দিল্লিতে হুমানুনের সমাধির আশপাশের বাগান থেকে শুরু করে শ্রীনগরের নিশাত বাগ- সর্বত্র মুঘল উদ্যানগুলো একই শৈলীতে তৈরি। এই বাগানগুলির আরও একটি বৈশিষ্ট্য হল জলের ব্যবহার। এর ঝরনাগুলো বাগানের উদ্ভিদের প্রয়োজন যেমন মিটিয়েছে। তেমনই বাগানের সৌন্দর্যও কয়েকগুণ বাড়িয়ে তুলেছে।
ভাইসরয়ের বাড়ির বাগান
১৯১১ সালে, ব্রিটিশরা ভারতের রাজধানী কলকাতা থেকে দিল্লিতে স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত নেয়। এটি একটি বিশাল ব্যাপার হয়ে ওঠে। একটি সম্পূর্ণ নতুন শহর নতুন দিল্লি গড়ে তোলা। এই নতুন দিল্লি ব্রিটিশ রাজক্ষমতার প্রতীক হবে। তার সবচেয়ে মূল্যবান উপনিবেশে ব্রিটিশ রাজক্ষমতা প্রদর্শন করবে, এগুলোই কাজ করেছিল ব্রিটিশদের মাথায়। সেই কারণে ভাইসরয়ের বাড়ি নির্মাণের জন্য প্রায় ৪,০০০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন- ভারতীয় বায়ুসেনার দুটি যুদ্ধবিমান ধ্বংসের পিছনে কোন চাঞ্চল্যকর কারণ? তদন্তে বিশেষজ্ঞরা
স্যার এডউইন লুটিয়েন্সকে রায়সিনা পাহাড়ে ভবনটির নকশা তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। লুটিয়েন্সের নকশাগুলো ভারতীয় শৈলির সঙ্গে ধ্রুপদী ইউরোপীয় স্থাপত্যের উপাদানকে সংযুক্ত করেছিল। সৃষ্টি করেছিল এক অনন্য নান্দনিকতা। যা আজ অবধি লুটিয়েন্সের দিল্লিকে আলাদাভাবে বিশ্বের সামনে তুলে ধরছে।
Read full story in English