ভারতজুড়ে, ক্রিসমাস উদযাপন একটি বিশেষ ধরনের কেক ছাড়া সম্পূর্ণই হয় না। এটা 'প্লাম কেক' নামে পরিচিত। যদিও তাতে প্রায় কখনই প্লাম থাকে না। এই কেক হয় শুকনো। কেউ এটাকেই আবার 'ফ্রুট কেক' বলেন। কেউ আবার বলেন 'ক্রিসমাস কেক'। দেশের একেক জায়গায় এই কেকটাকে একেকরকম নামে ডাকা হয়। ব্রিটিশ জমানা থেকেই কেক ভারতীয় সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে গেছে। আর, বছর শেষে এই কেক খাওয়ার রেওয়াজ তৈরি হয়ে গিয়েছে ভারতীয়দের মধ্যে। এদেশে অবশ্য এই একধরনের কেকই না। নানা ধরনের কেক তৈরির রেওয়াজ আছে। আর, সেই সব কেক তৈরির কায়দাও আলাদা। কিন্তু, তার মধ্যেই প্লাম কেক খাওয়ার রেওয়াজ কীভাবে যেন ক্রিসমাসে চালু হয়ে গেল। তারও অবশ্য একটা ইতিহাস আছে।
প্লাম কেকের ইতিহাস
প্লাম কেক চালুর ইতিহাস জানতে হলে মধ্যযুগের ইংল্যান্ডে ফিরতে হয়। সেখানে বড়দিনের আগের সপ্তাহগুলো, যাকে অ্যাডভেন্ট বলা হয়, সেখানে আত্মত্যাগ, উপবাসের মত নানারকম রীতিনীতি চালু ছিল। অনেকে বলেন, উত্সব বা ভোগের মরসুমের জন্য শরীরকে প্রস্তুত করার এটা একটা কায়দা ছিল। পাশপাাশি, বিশেষ সময় উদযাপনের জন্য খাবার সংরক্ষণ করারও ব্যাপার ছিল। তাই ওই সব প্রথা মানা হত।
কীভাবে ঘটেছিল বিবর্তন?
এই সময়েই বড়দিনের প্রাক্কালে একটি বিশেষ পুডিং জাতীয় খাবার তৈরির প্রথা ছিল। এই পুডিংয়ে ওটস, শুকনো ফল, মশলা, মধু এমনকী মাংসও থাকত। মনে করা হয়, সেই প্রথাই শতাব্দীর পর শতাব্দীর বিবর্তনে পাম কেকের চেহারা নিয়েছে। কীভাবে ঘটেছিল সেই পুডিংয়ের বিবর্তন? যেমন ষোড়শ শতকে সেই পুডিং তৈরির ক্ষেত্রে ওটসের জায়গায় নিয়েছিল ময়দা। পাশাপাশি, মাখন এবং ডিমকে মিশিয়ে খাওয়ার অভ্যেস চালু হয়েছিল। মাংস মেশানোর প্রথা বাদ পড়েছিল। যাতে ক্রিসমাসের অন্যান্য খাবারগুলোর জায়গা এই পুডিং নিতে পারে।
আরও পড়ুন- সেটিং তত্ত্বের আবহে গ্রাম-গঞ্জে রাম-বাম জোটে শান, ‘ঘেঁটে-ঘ’ বাংলার রাজনীতি
বদলাল না নাম
এই ঘন পিঠের মত খাবারটি ফুটন্ত জলের পাত্রে একটি মসলিন কাপড়ের ওপর তৈরি করত। ধনী পরিবারগুলো আবার, এই কেককে বেশ করে সেঁকে নিত। ক্রিসমাস উদযাপনের পরও ১২ দিন ধরে এই পিঠে জাতীয় খাবার খাওয়া হত। আর, পরিবেশন করা হত পিঠেটাকে উলটো করে পাতে দিয়ে। আর, এই পিঠেতে কোনও কিশমিস বা প্লামজাতীয় কিছুই থাকত না। কিন্তু, তারপরই এই পিঠে প্লাম কেক নামে পরিচিত হয়ে যায়। পরে যাতে কাজুর মত বিদেশি শুকনো ফল মেশানোর প্রথা চালু হয়েছিল। তবে, নামটা কিন্তু বদলাল না। শতাব্দী পেরোলেও, মহাদেশ পেরোলেও এই কেক জনপ্রিয় হয়ে রইল প্লাম কেক নামেই।
Read full story in English