পেট্রোলিয়াম এবং প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রকের একটি কমিটি ২০২৭ সালের মধ্যে ১০ লক্ষেরও বেশি জনসংখ্যার শহরে ডিজেলচালিত চার চাকার যানবাহন ব্যবহার নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করেছে। বদলে, বৈদ্যুতিক এবং গ্যাস-জ্বালানিযুক্ত যানবাহনে তা বদলানোর কথা বলেছে। প্রাক্তন পেট্রোলিয়াম সচিব তরুণ কাপুরের নেতৃত্বে এনার্জি ট্রানজিশন অ্যাডভাইজরি কমিটিও সুপারিশ করেছে যে ২০৩০ সালের মধ্যে শহরের পরিবহণ মেট্রো ট্রেন এবং বৈদ্যুতিক বাসের মিশ্রণে হওয়া উচিত।
ডিজেল নিয়ে এই প্রস্তাবের প্রেক্ষাপট কী?
গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাস করার জন্য সরকারের ঘোষিত লক্ষ্যের পরিপ্রেক্ষিতে কমিটির এই সমস্ত সুপারিশ। সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ২০৭০ সালের মধ্যে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন শূন্যে নামিয়ে আনবে। আর, পুনর্নবীকরণ শক্তির মাধ্যমে ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে। শুধুমাত্র দেশের মহানগরগুলোই নয়। ১০ লক্ষাধিক বাসিন্দা আছে, এমন সব শহরে এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এই সব শহরের মধ্যে কোটা, রায়পুর, ধানবাদ, বিজয়ওয়াড়া, যোধপুর যেমন আছে, তেমনই আছে অমৃতসরের মত শহরও।
ভারতের কোন কোম্পানি ডিজেল গাড়ি তৈরি করে?
মারুতি সুজুকি, দেশের বৃহত্তম যাত্রীবাহী যানবাহন প্রস্তুতকারক। ২০২০ সালের ১ এপ্রিল তারা ডিজেল যানবাহন তৈরি করা বন্ধ করে দিয়েছে। একইসঙ্গে জানিয়েছে, আর ডিজেল যানবাহন তৈরির কোনও পরিকল্পনা তাদের নেই। ডিজেল ইঞ্জিন অবশ্য কোরিয়ান গাড়ি নির্মাতা কোম্পানি হুন্ডাই এবং কিয়ার গাড়ির মডেলেরও অংশ। এছাড়া জাপানের টয়োটা মোটরের ইনোভা ক্রিস্টাও রয়েছে। দেশীয় গাড়ি নির্মাতা মাহিন্দ্রা এবং টাটা মোটরসেরও গাড়িও আছে ডিজেলের বাজারে। যাইহোক, বেশিরভাগ গাড়ি নির্মাতারা ২০২০ সাল থেকে তাদের ডিজেল গাড়ি উৎপাদন কার্যত বন্ধই করে দিয়েছে।
আরও পড়ুন- কোটার জন্য এত লড়াই কেন মণিপুরে, ভিতরের কারণটা কী?
তাহলে এই প্রস্তাবে সমস্যা কোথায়?
এই প্রস্তাব কতটা বাস্তবসম্মত, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। কারণ, দেশের প্রধান সড়কগুলোয় যে সব গাড়ি চলে, বিশেষ করে মাঝারি এবং ভারী বাণিজ্যিক যানবাহন, সেগুলো সব ডিজেলের। শুধু তাই নয়, ভারতের বিভিন্ন শহরের বেশিরভাগ বাসও ডিজেলেই চলে। এত যানবাহন এই স্বল্প সময়ের মধ্যে কীভাবে বদলানো হবে, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রশ্নচিহ্ন।