গত ২০০০ থেকে ২০২১- এই ২০ বছরে কর্ণাটক সরকার তার চারটি সড়ক পরিবহণ কর্পোরেশনকে ৪,২৬৫ কোটি টাকা শোধ করেনি। বিভিন্ন শ্রেণির যাত্রীদের জন্য তারা ছাড়ের ঘোষণা করেছিল। তার জেরে তাদের বিপুল পরিমাণ আর্থিক বোঝা চেপেছে। সড়ক পরিবহণ কর্পোরেশনগুলোকে প্রদেয় সেই অর্থও তাদের বকেয়া ছিল। এই অবস্থায় কর্ণাটকের নতুন কংগ্রেস সরকার শক্তি স্কিমের ঘোষণা করেছে। যা রাজ্যের অভ্যন্তরে মহিলাদের এবং ট্রান্সজেন্ডার সম্প্রদায়ের লোকজনকে বিনামূল্যে বাসে যাতায়াতের সুবিধা দিয়েছে।
কিছু মহল আতঙ্কিত
এটা যেমন একদল লোকের কাছে স্বস্তির বিষয়। আবার, কিছু মহল কর্ণাটকের কংগ্রেস সরকারের এই ঘোষণায় আতঙ্কিত। এই আতঙ্কের কারণ কিন্তু অমূলক নয়। সেটা সহজেই বোঝা যাবে কর্ণাটকের চারটি রাষ্ট্রীয় পরিবহণ কর্পোরেশনের আর্থিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিলেই। এই চারটি রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থা হল— কর্ণাটক স্টেট রোড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন (কেএসআরটিসি), বেঙ্গালুরু মেট্রোপলিটন ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন (বিএমটিসি), উত্তর-পশ্চিম কর্ণাটক রোড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন (এনডব্লিউকেআরটিসি) এবং কল্যাণ কর্ণাটক রোড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন (কেকেআরটিসি)।
ক্যাগের রিপোর্ট কী বলছে?
২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে ক্যাগের প্রকাশিত এক অডিট রিপোর্ট অনুযায়ী, ঘোষিত বিভিন্ন ছাড়নীতির জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে কর্ণাটক সরকার ব্যর্থ হয়েছে। তার জেরে কর্ণাটকে কর্পোরেশনগুলোর আর্থিক অবস্থা প্রভাবিত হয়েছে। সেই হিসেবে চারটি কর্পোরেশনের মোট ক্ষতি ২০২১ সালের ৩১ মার্চে ছিল ৪,৬৮৯.০৯ কোটি টাকা। এই ব্যাপারে কর্ণাটকের পরিবহণ সংস্থা এবং সরকারি সংস্থাগুলোর ব্যাপারে বলতে গিয়ে ক্যাগ তার রিপোর্টে জানিয়েছে, 'কর্পোরেশনগুলো সরকারের সিদ্ধান্ত মেনেই ছাড়ের ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু, তাতে কর্পোরেশনগুলোর যা খরচ হয়েছে, সেই খরচ সরকারের থেকে কর্পোরেশনগুলো আর ফেরত পায়নি।'
আরও পড়ুন- অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কী, এনিয়ে বিতর্কটা কোথায়?
আয় তলানিতে
তার মধ্যেই আবার অপারেটিং খরচ-সহ জ্বালানির দাম বেড়েছে। বাসের ভাড়া কয়েক বছর ধরে বাড়ানো হয়নি। করোনার আমলে পরিবহণ ক্ষেত্রে আয় তলানিতে ঠেকেছে। প্রতিমাসে শক্তি প্রকল্পের সম্ভাব্য ব্যয় প্রায় ৩৩৭ কোটি টাকা হয়ে দাঁড়াতে চলেছে। দৈনিক ৪১.৮১ লক্ষ মহিলা যাত্রীর ভাড়ায় ছাড়ের সঙ্গে যা জড়িত। সব মিলিয়ে এতে কর্পোরেশনগুলো বার্ষিক ৪,০৫১ কোটি টাকা ছাড় দেবে। আর, সেটাই উদ্বেগের বিষয় অনেকের কাছে।