A look at the significance of the Mahad Satyagraha: ভীমরাও রামজি আম্বেদকরের জীবনে মাইলফলকের অভাব ছিল না। তিনি বোম্বের এলফিনস্টোন কলেজে অধ্যয়নকারী প্রথম দলিত ছিলেন। তিনি বরোদার রাজ্য সরকারের স্কলারশিপ পেয়ে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। তারপরে লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্সে পড়ার সুযোগ পান। তিনি ভারতের সংবিধানের খসড়া কমিটির সভাপতি ছিলেন। স্বাধীন ভারতের প্রথম আইনমন্ত্রী হন।
জীবনে বহুমুখী দিক
একজন আইনজীবী, অর্থনীতিবিদ এবং রাজনৈতিক দার্শনিক ছিলেন। অসংখ্য বই লিখেছেন। অসংখ্য বক্তৃতা দিয়েছেন। তবে তাঁর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান ছিল দলিত মুক্তির আন্দোলন। দলিত চেতনা জাগ্রত করতে তিনি রাজনৈতিক ক্ষমতাকে হাতিয়ার করেছিলেন। তাঁর লড়াই ১৯২৭ সালের মাহার সত্যাগ্রহের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল। যা, আম্বেদকরের নেতৃত্বে দলিতদের প্রথম বড় সম্মিলিত প্রতিবাদ। রবিবার, ভারতীয় সংবিধানের এই অন্যতম স্রষ্টার ১৩৩তম জন্মবার্ষিকী।
বম্বে আইন পরিষদে প্রস্তাব পাশ
মাহার সত্যাগ্রহের পথে হাঁটা শুরু হয়েছিল ১৯২৩ সালের আগস্টে। বম্বে আইন পরিষদের সমাজ সংস্কারক রাও বাহাদুর এসকে বোলের চেষ্টায় একটি প্রস্তাব পাস হয়। এই প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, 'দলিতদের সমস্ত সরকারি জলের উত্স, কূপ এবং ধর্মশালাগুলো ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে সরকারি স্কুল, আদালত, অফিস এবং ডিসপেনসারিতেও তাঁদের নিয়োগ করা হবে।'
আম্বেদকরকে আহ্বান
সেই সময়ে মাহারদের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক নেতা রামচন্দ্র বাবাজি মোর, তাঁদের সম্মেলনে নেতৃত্ব দেওয়ার অনুরোধ নিয়ে আম্বেদকরের কাছে যান। এমনটাই লিখেছেন, বিশিষ্ট পণ্ডিত তথা নাগরিক অধিকার কর্মী আনন্দ তেলতুম্বে তাঁর বই, 'মাহার: দ্য মেকিং অফ দ্য ফার্স্ট দলিত রিভল্ট (২০১৬)'এ। আম্বেদকর তার মধ্যেই ১৯২৪ সালে, 'বহিষ্কৃত হিতকারিণী সভা' নামে একটি সামাজিক সংগঠন তৈরি করে আন্দোলন শুরু করেছিলেন।
দলিত সম্মেলনের তোড়জোড়
আম্বেদকর মোরের প্রস্তাবে রাজি হন। আর, ১৯২৭ সালের ১৯ এবং ২০ মার্চ, কোঙ্কনের মাহার শহরে (বর্তমানে মহারাষ্ট্রের রায়গড় জেলায়) হওয়া সম্মেলনের প্রস্তুতির তত্ত্বাবধান করেন। স্থানীয় দলিত নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। কোঙ্কনের দলিতদের, 'জাগরণ-এর জন্য' উদ্যোগ নিতে কর্মীদের নির্দেশ দেন। আর, এই সম্মেলনের খবর প্রচারের জন্য সংগঠনের সদস্যদের বার্তা দেন।
আরও পড়ুন- ইজরায়েলে ইরানের বিরাট হামলা! রীতিমতো বিপাকে আমেরিকা, কতটা সমস্যায় ভারত?
রাজনৈতিক জীবনে উত্থান
তাঁর নির্দেশে গ্রামের স্বেচ্ছাসেবকরা ৪০টি গ্রামের প্রতিটি বাড়ি থেকে ৩টাকা করে চাঁদা তুলেছিল। সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেককে খাওয়ানোর জন্য চাল এবং গম সংগ্রহ করেছিল। সব মিলিয়ে সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তুতিতে প্রায় দুই মাস সময় লাগে। শ্রমিক নেতারাও এই সম্মেলনে যোগ দেন। এভাবেই ক্রমশ মাহারদের সংগঠিত করে দলিত ভোটব্যাংককে ভর দিয়ে রাজনৈতিক জীবনে উত্থান ঘটেছিল আম্বেদকরের।